Bản dịch ý nghĩa nội dung Qur'an - 孟加拉语翻译 - 艾布·伯克尔·宰克利亚

Số trang:close

external-link copy
238 : 2

حَٰفِظُواْ عَلَى ٱلصَّلَوَٰتِ وَٱلصَّلَوٰةِ ٱلۡوُسۡطَىٰ وَقُومُواْ لِلَّهِ قَٰنِتِينَ

তোমরা সালাতের প্রতি যত্নবান হবে [১], বিশেষত মধ্যবর্তী সালাতের [২] এবং আল্লাহ্‌র উদ্দেশ্যে তোমরা দাঁড়াবে বিনীতভাবে; info

[১] সামাজিক ও তামাদুনিক বিষয় বর্ণনা করার পর সালাতের তাকীদ দিয়ে আল্লাহ্‌ এ ভাষণটির সমাপ্তি টানছেন। কারণ, সালাত এমন একটি জিনিস যা মানুষের মধ্যে আল্লাহ্‌র ভয়, সততা, সৎকর্মশীলতা ও পবিত্রতার আবেগ এবং আল্লাহ্‌র বিধানের আনুগত্যের ভাবধারা সৃষ্টি করে আর এ সঙ্গে তাকে ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখে। মানুষের মধ্যে এ বস্তুগুলো না থাকলে সে কখনো আল্লাহ্‌র বিধানের আনুগত্য করার ক্ষেত্রে অবিচল নিষ্ঠার পরিচয় দিতে পারত না।

[২] কতিপয় হাদীসের প্রমাণ অনুসারে অধিকাংশ আলেমের মতে মধ্যবর্তী সালাতের অর্থ হচ্ছে আসরের সালাত। কেননা এর একদিকে দিনের দু'টি সালাত – ফজর ও যোহর এবং অপরদিকে রাতের দুটি সালাত - মাগরিব ও এশা রয়েছে। এ সালাতের জন্য তাকীদ এ জন্য দেয়া হয়েছে যে, অনেক লোকেরই এ সময় কাজ-কর্মের ব্যস্ততা থাকে। আসরের সালাতের গুরুত্ব বর্ণনায় আব্দুল্লাহ ইবন উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যার আসরের সালাত ছুটে গেল তার যেন পরিবার-পরিজন এবং ধন-সম্পদ সবই ধ্বংস হয়ে গেল’। [বুখারী ৫৫২] আর হাদীসে 'কানেতীন’ বা ‘বিনীতভাবে’ বাক্যটির ব্যাখ্যা করা হয়েছে নীরবতার সাথে। [বুখারী ১২০০]

التفاسير:

external-link copy
239 : 2

فَإِنۡ خِفۡتُمۡ فَرِجَالًا أَوۡ رُكۡبَانٗاۖ فَإِذَآ أَمِنتُمۡ فَٱذۡكُرُواْ ٱللَّهَ كَمَا عَلَّمَكُم مَّا لَمۡ تَكُونُواْ تَعۡلَمُونَ

অতঃপর তোমরা যদি বিপদাশংকা কর, তবে পথচারি অথবা আরোহী অবস্থায় সালাত আদায় করবে [১]। অতঃপর তোমরা যখন নিরাপদ বোধ কর তখন আল্লাহ্‌কে স্মরণ করবে, জেভাবে তিনি তমাদের শিক্ষা দিয়েছেন, যা তোমরা জানতে না। info

[১] সালেহ ইবন খাওয়াত ঐ ব্যক্তি থেকে বর্ণনা করেন যিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ‘যাতুর রিকা’র যুদ্ধে সালাতুল খাওফ বা ভীতির সালাতে অংশ গ্রহণ করেছিলেন তার থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, (সাহাবাগণের) একদল সালাত আদায়ের জন্য তাঁর (রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের) সাথে কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়ালেন এবং আরেক দল শক্রর মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকলেন। তিনি (রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রথমোক্ত দলের সাথে এক রাকাআত সালাত আদায় করে দাঁড়িয়ে থাকলেন। মোক্তাদীগণ একা একা দ্বিতীয় রাকাআত পড়ে ফিরে গেলেন এবং শক্রর মুখোমুখী হয়ে দাঁড়ালেন। এবার অপর দলটি এসে দাঁড়ালে তিনি (রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদেরকে সাথে নিয়ে অবশিষ্ট (এক) রাকাআত আদায় করে বসে থাকলেন। (দ্বিতীয় দলের) মুক্তাদীগণ নিজে নিজে দ্বিতীয় রাকাআত শেষ করে বসলে তিনি তাদেরকে সংগে নিয়ে সালাম ফিরালেন। [বুখারী ৪১২৯]

التفاسير:

external-link copy
240 : 2

وَٱلَّذِينَ يُتَوَفَّوۡنَ مِنكُمۡ وَيَذَرُونَ أَزۡوَٰجٗا وَصِيَّةٗ لِّأَزۡوَٰجِهِم مَّتَٰعًا إِلَى ٱلۡحَوۡلِ غَيۡرَ إِخۡرَاجٖۚ فَإِنۡ خَرَجۡنَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيۡكُمۡ فِي مَا فَعَلۡنَ فِيٓ أَنفُسِهِنَّ مِن مَّعۡرُوفٖۗ وَٱللَّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٞ

আর তোমাদের মধ্যে জারা মারা যাবে এবং স্ত্রী রেখে যাবে, তারা যেন তাদের স্ত্রীকে তাদের ঘর থেকে বের না করে তাদের এক বছরের ভরণ-পোষণের অসিয়াত করে [১]। কিন্তু যদি তারা বের হয়ে যায়, তবে বিধিমত নিজেদের মত তারা যা করবে তাতে তোমাদের কোনো পাপ নেই। আর আল্লাহ্‌ প্রবল পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়। info

[১] স্বামীর মৃত্যুর দরুন স্ত্রীর ইদ্দতকাল ছিল এক বছর। কিন্তু পরবর্তীতে এ সূরার ২৩৪ নং আয়াতের মাধ্যমে বছরের স্থলে চার মাস দশ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। এখানে একটি বিষয় জানা আবশ্যক যে, এ আয়াতটি এ সূরার ২৩৪ নং আয়াতের পূর্বে নাযিল হয়েছিল।

التفاسير:

external-link copy
241 : 2

وَلِلۡمُطَلَّقَٰتِ مَتَٰعُۢ بِٱلۡمَعۡرُوفِۖ حَقًّا عَلَى ٱلۡمُتَّقِينَ

আর তালাকপ্রাপ্ত নারীদের প্রথামত ভরণ-পোষণ করা মুত্তাকীদের কর্তব্য[১]। info

[১] তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীলোকের জন্য ‘মাতা’ বা সংস্থান করে দেয়ার কথা এর পূর্ববর্তী আয়াতেও এসেছে। তবে তা ছিল শুধু দু'রকম তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীর জন্য। সহবাস কিংবা নির্জনবাসের পূর্বে যাদেরকে তালাক দেয়া হয়েছে। বাকী রইল সে সমস্ত তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী যাদের সাথে স্বামী নির্জনবাস কিংবা সহবাস করেছে। তাদের মধ্যে যাদের মাহর ধার্য করা হয়েছে, তাদের ‘মাতা’ বা সংস্থান করে দেয়ার এক অর্থ, তার ধার্যকৃত পূর্ণ মাহ্‌র দিয়ে দেয়া। আর যার মাহর ধার্য করা হয়নি, তার জন্য মাহরে-মিসাল দেয়া। আর যদি ‘মাতা’ শব্দের দ্বারা ‘বিশেষ ফায়দা’ বলতে কিছু কাপড় বা আর্থিক দান বোঝানো হয়, তবে একজনকে তা দেয়া ওয়াজিব, যা পূর্বে বর্ণিত হয়েছে অর্থাৎ প্রথমোক্ত মহিলা যার সাথে স্বামীর সহবাসও হয়নি আর তার মাহরও নির্ধারিত হয়নি। আর অন্যান্যদের বেলায় তা মুস্তাহাব। আর যদি মাতা” শব্দের দ্বারা খোর-পোষ বোঝানো হয়ে থাকে, তবে যে তালাকের পর ইদ্দত অতিক্রান্ত করতে হয়, তাতে ইদ্দত পর্যন্ত তা দেয়া ওয়াজিব। তালাকে-রাজ’য়ীই হোক আর তালাকে বায়েনই হোক, ব্যাপক অর্থে সব ধরনের তালাকই এর অন্তর্ভুক্ত।

التفاسير:

external-link copy
242 : 2

كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ ٱللَّهُ لَكُمۡ ءَايَٰتِهِۦ لَعَلَّكُمۡ تَعۡقِلُونَ

এভাবে আল্লাহ্‌ তাঁর আয়াতসমুহ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন যাতে তোমরা বুঝতে পার। info
التفاسير:

external-link copy
243 : 2

۞ أَلَمۡ تَرَ إِلَى ٱلَّذِينَ خَرَجُواْ مِن دِيَٰرِهِمۡ وَهُمۡ أُلُوفٌ حَذَرَ ٱلۡمَوۡتِ فَقَالَ لَهُمُ ٱللَّهُ مُوتُواْ ثُمَّ أَحۡيَٰهُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَذُو فَضۡلٍ عَلَى ٱلنَّاسِ وَلَٰكِنَّ أَكۡثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يَشۡكُرُونَ

আপনি কি তাদের দেখেন নি যারা মৃত্যুভয়ে হাজারে হাজারে স্বীয় আবাসাভুমি পরিত্যাগ করেছিল[১]? অতঃপর আল্লাহ্‌ তাদেরকে বলেছিলেন, ‘তোমরা মরে যাও’। তারপর আল্লাহ্‌ তাদেরকে জীবিত করেছিলেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ মানুষের প্রতি অনুগ্রহশিল; কিন্তু অধিকাংশ লোক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না [২]। info

[১] বিভিন্ন বর্ণনায় এসেছে, কোনো এক শহরে ইসরাঈল-বংশধরের কিছু লোক বাস করত। তাদের সংখ্যা ছিল প্রায় দশ হাজার। সেখানে এক মারাত্মক সংক্রামক ব্যাধির প্রাদুর্ভাব হয়। তারা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে সে শহর ত্যাগ করে দুটি পাহাড়ের মধ্যবর্তী এক প্রশস্ত ময়দানে গিয়ে বসবাস করতে লাগল। আল্লাহ্ তা'আলা তাদের কাছে দু’জন ফেরেশ্‌তা পাঠালেন এই জন্য যে, তাদেরকে এবং দুনিয়ার অন্যান্য জাতিকে একথা অবগত করানোর জন্য যে, মৃত্যুর ভয়ে পালিয়ে গিয়ে কেউ রক্ষা পেতে পারে না। ফেরেশ্‌তা দু’জন ময়দানের দু’ধারে দাঁড়িয়ে এমন এক বিকট শব্দ করলেন যে, তাদের সবাই একসাথে মরে গেল। দীর্ঘকাল পর ইসরাঈল-বংশধরদের একজন নবী সেখান দিয়ে যাওয়ার পথে সেই বন্ধ জায়গায় বিক্ষিপ্ত অবস্থায় হাড়-গোড় পড়ে থাকতে দেখে বিস্মিত হলেন। তখন ওহীর মাধ্যমে তাকে মৃত লোকদের সমস্ত ঘটনা অবগত করানো হল। তখন তিনি দোআ করলেন এবং আল্লাহ্‌ তাদেরকে জীবিত করে দিলেন। [ইবন কাসীর]

এ ঘটনাটি দুনিয়ার সমস্ত চিন্তাশীল বুদ্ধিজীবীকে সৃষ্টিবলয় সম্পর্কিত চিন্তা-ভাবনার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের সন্ধান দেয়। তদুপরি এটা কেয়ামত অস্বীকারকারীদের জন্য একটা অকাট্য প্রমাণ হওয়ার সাথে সাথে এ বাস্তব সত্য উপলব্ধি করার পক্ষেও বিশেষ সহায়ক যে, মৃত্যুর ভয়ে পালিয়ে থাকা তা জিহাদ হোক বা প্লেগ মহামারীই হোক, আল্লাহ্‌ এবং তাঁর নির্ধারিত নিয়তি বা তাকদীরের প্রতি যারা বিশ্বাসী তাদের পক্ষে সমীচীন নয়। যার এ বিশ্বাস রয়েছে যে, মৃত্যুর একটা নির্ধারিত সময় রয়েছে, নির্ধারিত সময়ের এক মুহুর্ত পূর্বেও তা হবে না এবং এক মূহুর্ত পরেও তা আসবে না, তাদের পক্ষে এরূপ পলায়ন অর্থহীন এবং আল্লাহ্‌র অসন্তুষ্টির কারণ।

[২] এ আয়াত কয়েকটি বিষয়ের সমাধান করে দিয়েছে। প্রথমতঃ আল্লাহ্‌র নির্ধারিত তাকদীরের উপর কোনো তদবীর কার্যকর হতে পারে না। জিহাদ বা মহামারীর ভয়ে পালিয়ে গিয়ে প্রাণ বাঁচানো যায় না, আর মহামারীগ্রস্ত স্থানে অবস্থান করাও মৃত্যুর কারণ হতে পারে না। মৃত্যুর একটি সুনির্দিষ্ট সময় রয়েছে, যার কোনো ব্যতিক্রম হওয়ার নয়। দ্বিতীয়তঃ কোনো স্থানে কোনো মহামারী কিংবা কোনো মারাত্মক রোগ-ব্যাধি দেখা দিলে সেখান থেকে পালিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নেয়া বৈধও নয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু '‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বর্ণনা মোতাবেক অন্য এলাকার লোকের পক্ষেও মহামারীগ্রস্ত এলাকায় যাওয়া বৈধ নয়। হাদীসে বলা হয়েছে, “সে রোগের মাধ্যমে আল্লাহ্ তা'আলা তোমাদের পূর্ববতী বিভিন্ন উম্মতের উপর আযাব নাযিল করেছেন। সুতরাং যখন তোমরা শুনবে যে, কোনো শহরে প্লেগ প্রভৃতি মহামারী দেখা দিয়েছে, তখন সেখানে যেও না। আর যদি কোনো এলাকাতে এ রোগ দেখা দেয় এবং তুমি সেখানেই থাক, তবে সেখান থেকে পলায়ন করবে না।’ [বুখারী ৩৪৭৩, মুসলিম ২২১৮]

ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস হচ্ছে এই যে, ‘কোথাও যাওয়া মৃত্যুর কারণ হতে পারে না, আবার কোনো স্থান থেকে পালিয়ে যাওয়াও মৃত্যুর হাত থেকে রেহাই পাওয়ার উপায় নয়'। এ মৌলিক বিশ্বাসের পাশাপাশি আলোচ্য নির্দেশটি নিঃসন্দেহে বিশেষ তাৎপর্যপূণ।

প্রথমতঃ মহামারীগ্রস্ত এলাকার বাইরের লোককে আসতে নিষেধ করার একটি তাৎপর্য এই যে, এমনও হতে পারে যে, সেখানে গমন করার পর তার হায়াত শেষ হওয়ার দরুনই এ রোগে আক্রান্ত হয়ে সে মারা গেল: এতদসত্ত্বেও আক্রান্ত ব্যক্তির মনে এমন ধারণা হতে পারে যে, সেখানে না গেলে হয়ত সে মারা যেত না। তাছাড়া অন্যান্য লোকেরও হয়ত এ ধারণাই হবে যে, এখানে না এলে মৃত্যু হত না। অথচ যা ঘটেছে তা পূর্বেই নির্ধারিত ছিল। যেখানেই থাকত, তার মৃত্যু এ সময়েই হত! এ আদেশের মাধ্যমে মুসলিমদেরকে ঈমানের ব্যাপারে সন্দেহ-সংশয় থেকে রক্ষা করা হয়েছে। যাতে করে তারা কোনো ভুল বোঝাবুঝির শিকার না হয়।

দ্বিতীয়তঃ এতে আল্লাহ্ তা'আলা মানুষকে উপদেশ দিয়েছেন যে, যেখানে কষ্ট হওয়ার বা মৃত্যুর আশংকা থাকে, সেখানে যাওয়া উচিত নয়; বরং সাধ্যমত ঐসব বস্তু থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করা কর্তব্য যা তার জন্য ধ্বংস বা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাছাড়া নিজের জানের হেফাযত করা প্রত্যেক মানুষের জন্য ওয়াজিব ঘোষণা করা হয়েছে। এ নিয়মের চাহিদাও তাই যে, আল্লাহ্‌র দেয়া তাকদীরে পূর্ণ বিশ্বাস রেখে যথাসাধ্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা অবলম্বন করতে হবে। যেসব স্থানে প্রাণ নাশের আশংকা থাকে, সেসব স্থানে না যাওয়াও এক প্রকার সতর্কতামূলক তদবীর। এমনিভাবে সংশ্লিষ্ট এলাকার লোকদেরকে সে স্থান থেকে পলায়ন করতে নিষেধ করার মাঝেও বহু তাৎপর্য নিহিত। একটি হচ্ছে এই যে, যদি এ পলায়নের প্রথা চলতে থাকে, তবে সাধারণভাবে ও সমষ্টিগতভাবে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যারা সক্ষম ও সবল তারা তো সহজেই পালাতে পারে, কিন্তু যারা দুর্বল তাদের কি অবস্থা হবে? আর যারা রোগাক্রান্ত, তাদের সেবা-শুশ্রুষা কিংবা মরে গেলে দাফন-কাফনেরই বা কি ব্যবস্থা হবে? দ্বিতীয়তঃ যারা সেখানে ছিল, তাদের মধ্যে হয়ত রোগের জীবাণু প্রবেশ করে থাকবে। এ অবস্থায় তারা যদি বাড়ী-ঘর থেকে বের হয়ে থাকে, তবে তাদের দুঃখ-দুর্দশা আরও বেড়ে যাবে। কারণ প্রবাস জীবনে রোগাক্রান্ত হলে যে কি অবস্থা তা সবারই জানা। তৃতীয়তঃ যদি তাদের মধ্যে রোগের জীবাণু ক্রিয়া করে থাকে, তবে তা বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়বে। আর যদি নিজের জায়গায় আল্লাহ্‌র উপর ভরসা করে পড়ে থাকে, তবে হয়ত নাজাত পেতে পারে। আর যদি এ রোগে মারা যাওয়াই তার ভাগ্যে থাকে, তবে ধৈর্য ও স্থিরতা অবলম্বনের বদলায় শহীদের মর্যাদা লাভ করবে। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্লেগ মহামারী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলেছেন, "এ রোগটি আসলে শাস্তিরূপে নাযিল হয়েছিল এবং যে জাতিকে শাস্তি দেয়া উদ্দেশ্য হত তাদের ভেতর পাঠানো হত। অতঃপর আল্লাহ্ তাআলা একে মুমিনদের জন্য রহমতে পরিবর্তিত করে দিয়েছেন। আল্লাহ্‌র যেসব বান্দা এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়া সত্বেও নিজ এলাকায়ই ধৈর্য সহকারে বসবাস করে এবং এ বিশ্বাস রাখে যে, তার শুধু সে বিপদই হতে পারে, যা আল্লাহ্‌ তা'আলা তার জন্য লিখে রেখেছেন, তবে এমন ব্যক্তি শহীদের মত সওয়াব পাবে।” [বুখারী ৫৭৩৪]

রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী: ‘প্লেগ শাহাদাত এবং প্লেগ আক্রান্ত ব্যক্তি শহীদ।’ [বুখারী ৫৭৩২] এর ব্যাখ্যাও তাই। [মাআরিফুল কুরআন থেকে সংক্ষেপিত ও পরিমার্জিত]

التفاسير:

external-link copy
244 : 2

وَقَٰتِلُواْ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ وَٱعۡلَمُوٓاْ أَنَّ ٱللَّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٞ

আর তোমরা আল্লাহ্‌র পথে যুদ্ধ কর এবং জেনে রাখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। info
التفاسير:

external-link copy
245 : 2

مَّن ذَا ٱلَّذِي يُقۡرِضُ ٱللَّهَ قَرۡضًا حَسَنٗا فَيُضَٰعِفَهُۥ لَهُۥٓ أَضۡعَافٗا كَثِيرَةٗۚ وَٱللَّهُ يَقۡبِضُ وَيَبۡصُۜطُ وَإِلَيۡهِ تُرۡجَعُونَ

কে সে, যে আল্লাহ্‌কে কর্‌যে হাসানা প্রদান করবে ? তিনি তার জন্য তা বহুগুনে বৃদ্ধি করবেন [১।] আর আল্লাহ্‌ সংকুচিত ও সম্প্রসারিত করেন এবং তাঁর দিকেই তোমাদেরকে প্রত্যাবর্তিত করা হবে। info

[১] কর্জ বা ঋণ দান করলে তার বৃদ্ধি করার কথা এক হাদীসে এসেছে যে, ‘যে ব্যক্তি তার উত্তম সম্পদ থেকে খেজুর সমপরিমাণ সদকা করবে, আল্লাহ্‌ উত্তম সম্পদ ছাড়া কবুল করেন না, আল্লাহ্‌ সে সম্পদ ডান হাতে গ্রহণ করেন। অতঃপর সদকাকারীর জন্য তা রক্ষণাবেক্ষণ করতে থাকেন, যেমনি তোমাদের কেউ তার ঘোড়া শাবককে লালন-পালন করে পাহাড়সম বড় হওয়া পর্যন্ত। [বুখারী ১৪১০]

আল্লাহ্‌কে ঋণ দেয়ার এ অর্থও বলা হয়েছে যে, তাঁর বান্দাদেরকে ঋণ দেয়া এবং তাদের অভাব পূরণ করা। তাই হাদীসে অভাবীদেরকে ঋণ দেয়ারও অনেক ফযীলত বর্ণিত হয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ‘কোনো একজন মুসলিম অন্য মুসলিমকে দু’বার ঋণ দিলে এ ঋণদান আল্লাহ্‌র পথে সে পরিমাণ সম্পদ একবার সদকা করার সমতুল্য।' [ইবন মাজাহ ২৪৩০]

রাসূল সাল্লাল্লাহু '‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তিই উত্তম যে তার (ঋণের) হককে উত্তমরূপে পরিশোধ করে।’ তবে, যদি অতিরিক্ত দেয়ার শর্ত করা হয়, তাহলে তা সুদ এবং হারাম বলে গণ্য হবে।’ [বুখারী ২৬০৬]

التفاسير: