Vertaling van de betekenissen Edele Qur'an - De Bengaalse vertaling - Aboe Bakr Zakaria

Al-Ani'jaa

external-link copy
1 : 21

ٱقۡتَرَبَ لِلنَّاسِ حِسَابُهُمۡ وَهُمۡ فِي غَفۡلَةٖ مُّعۡرِضُونَ

মানুষের হিসেব-নিকেশের সময় আসন্ন [১], অথচ তারা উদাসীনতায় মুখ ফিরিয়ে রয়েছে [২]। info

১১২ আয়াত, মক্কী

[১] আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, বনী-ইসরাঈল, কাহ্ফ, মারইয়াম, ত্বা-হা ও আম্বিয়া- এগুলো আমার প্রাচীন সম্পদ ও উপার্জন। [বুখারী ৪৪৩১] এর থেকে বুঝা যায় যে, এ সূরাগুলো প্রাথমিক যুগে নাযিল হয়েছিল। এগুলোর প্রতি সাহাবায়ে কিরামের আলাদা দরদ ছিল। তাই আমাদেরও উচিত এগুলোকে বেশি ভালবাসা এবং এগুলো থেকে হেদায়াত সংগ্ৰহ করা।

[১] অর্থাৎ মানুষের কাছ থেকে তাদের কৃতকর্মের হিসাব নেয়ার দিন অর্থাৎ কেয়ামতের দিন ঘনিয়ে এসেছে। এখানে পৃথিবীর বিগত বয়সের অনুপাতে ঘনিয়ে আসার কথা বলা হয়েছে। লোকদের নিজেদের কাজের হিসেব দেয়ার জন্য তাদের রবের সামনে হাজির হওয়ার সময় আর দূরে নেই। মুহাম্মদ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমন একথারই আলামত যে, মানব জাতির ইতিহাস বর্তমানে তার শেষ পর্যায়ে প্রবেশ করছে। এখন সে তার সূচনাকালের পরিবর্তে পরিণামের বেশী নিকটবর্তী হয়ে গেছে। সূচনা ও মধ্যবর্তীকালীন পর্যায় অতিক্রান্ত হয়ে গেছে এবং এবার শেষ পর্যায়ে শুরু হয়ে গেছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর একটি হাদীসে একথাই বলেছেন। তিনি নিজের হাতের দুটি আঙ্গুল পাশাপাশি রেখে বলেন, “আমার আগমন এমন সময়ে ঘটেছে যখন আমি ও কেয়ামত এ দু'টি আঙ্গুলের মতো অবস্থান করছি।” [বুখারী ৪৯৯৫] অর্থাৎ আমার পরে শুধু কেয়ামতই আছে, মাঝখানে অন্য কোনো নবীর আগমনের অবকাশ নেই। যদি সংশোধিত হয়ে যেতে চাও তাহলে আমার দাওয়াত গ্ৰহণ করে সংশোধিত হও।

[২] অর্থাৎ কোনো সতর্কসংকেত ও সর্তকবাণীর প্রতি দৃষ্টি দেয় না। দুনিয়া নিয়ে তারা এতই মগ্ন যে, আখেরাতের কথা ভুলে গেছে। আখেরাতের জন্য প্রস্তুতি নিতে হলে যে আল্লাহর উপর ঈমান, তাঁর ফরায়েযগুলো আদায় করতে হয়, নিষিদ্ধ কাজগুলো থেকে দূরে থাকতে হয় সেটার জন্য তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে না। [ফাতহুল কাদীর] আর যে নবী তাদেরকে সর্তক করার চেষ্টা করছেন তার কথাও শোনে না। তাদের রাসূলের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে যে ওহী এসেছে তারা সেটার প্রতি দৃষ্টি দেয় না। এ নির্দেশটি প্রাথমিকভাবে কুরাইশ ও তাদের মত যারা কাফের তাদেরকে করা হচ্ছে। [ইবন কাসীর]

التفاسير:

external-link copy
2 : 21

مَا يَأۡتِيهِم مِّن ذِكۡرٖ مِّن رَّبِّهِم مُّحۡدَثٍ إِلَّا ٱسۡتَمَعُوهُ وَهُمۡ يَلۡعَبُونَ

যখনই তাদের কাছে তাদের রবের কোনো নতুন উপদেশ আসে [১] তখন তারা তা শোনে কৌতুকচ্ছলে [২], info

[১] অর্থাৎ কুরআনের যে নতুন সূরা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর নাযিল হয় এবং তাদেরকে শুনানো হয়। [ইবন কাসীর] তারা এটাকে কোনো গুরুত্বের সাথে শুনে না। ইবন আব্বাস বলেন, তোমাদের কি হলো যে, তোমরা আহলে কিতাবদেরকে তাদের কাছে যা আছে তা জিজ্ঞেস কর, অথচ তারা তাদের কিতাবকে বিকৃতকরণ, পরিবর্তন, পরিবর্ধন, বাড়ানো-কমানো সবই করেছে। আর তোমাদের কাছে রয়েছে এমন এক কিতাব যা আল্লাহ সবেমাত্ৰ নাযিল করেছেন, যা তোমরা পাঠ করে থাক, যাতে কোনো কিছুর সংমিশ্রণ ঘটেনি। [বুখারী ২৬৮৫]

[২] যারা আখেরাত ও কবরের আযাব থেকে গাফেল এবং তজ্জন্যে প্রস্তুতি গ্ৰহণ করে না, এটা তাদের অবস্থার অতিরিক্ত বৰ্ণনা। যখন তাদের সামনে কুরআনের কোনো নতুন আয়াত আসে এবং পঠিত হয়, তখন তারা একে কৌতুক ও হাস্য উপহাসচ্ছলে শ্রবণ করে। তাদের অন্তর আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি সম্পূর্ণ উদাসীন থাকে। এর এ অর্থও হতে পারে যে, তারা খেলাধুলায় লিপ্ত থাকে, কুরআনের প্রতি মনোযোগ দেয় না এবং এরূপ অৰ্থও হতে পারে যে স্বয়ং কুরআনের আয়াতের সাথেই তারা রঙ-তামাশা করতে থাকে। আবার এ অর্থও হতে পারে যে, এখানে খেলা মানে হচ্ছে এই জীবনের খেলা। আল্লাহ ও আখেরাতের ব্যাপারে গাফেল লোকেরা এ খেলা খেলছে। [দেখুন, কুরতুবী]

التفاسير:

external-link copy
3 : 21

لَاهِيَةٗ قُلُوبُهُمۡۗ وَأَسَرُّواْ ٱلنَّجۡوَى ٱلَّذِينَ ظَلَمُواْ هَلۡ هَٰذَآ إِلَّا بَشَرٞ مِّثۡلُكُمۡۖ أَفَتَأۡتُونَ ٱلسِّحۡرَ وَأَنتُمۡ تُبۡصِرُونَ

তাদের অন্তর থাকে অমনোযোগী। আর যারা যালেম তারা গোপনে পরামর্শ করে। ‘এ তো তোমাদের মত একজন মানুষই, তবুও কি তোমরা দেখে শুনে জাদুর কবলে পড়বে [১]?’ info

[১] অর্থাৎ তারা বলতো, এ ব্যক্তি তো কোনোক্রমে নবী হতেই পারে না। কারণ এতো আমাদেরই মতো মানুষ, খায় দায়, বাজারে ঘুরে বেড়ায়, স্ত্রী-সন্তানও আছে। কাজেই এ লোক কি করে নবী হয়? তবে কিনা এ ব্যক্তির কথাবার্তায় এবং এর ব্যক্তিত্বের মধ্যে জাদু আছে। ফলে যে ব্যক্তি এর কথা কান লাগিয়ে শোনে এবং এর কাছে যায় সে এর ভক্ত হয়ে পড়ে। কাজেই যদি নিজের ভালো চাও তাহলে এর কথায় কান দিয়ো না এবং এর সাথে মেলামেশা করো না। কারণ, এর কথা শোনা এবং এর নিকটে যাওয়া সুস্পষ্ট জাদুর ফাঁদে নিজেকে আটকে দেয়ার মতই। [দেখুন, ইবন কাসীর]

التفاسير:

external-link copy
4 : 21

قَالَ رَبِّي يَعۡلَمُ ٱلۡقَوۡلَ فِي ٱلسَّمَآءِ وَٱلۡأَرۡضِۖ وَهُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلۡعَلِيمُ

তিনি বললেন, ‘আসমানসমূহ ও যমীনের সমস্ত কথাই আমার রবের জানা আছে এবং তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ [১]।’ info

[১] অর্থাৎ নবী তাদের মিথ্যা প্রচারণা ও গুজব রটনার এই অভিযানের জবাবে এটাই বলেন যে, তোমরা যেসব কথা তৈরী করো, সেগুলো জোরে জোরে বলো বা চুপিসারে কানে কানে বলো, আল্লাহ সবই শোনেন ও জানেন। [ফাতহুল কাদীর] তিনি আসমান ও যমীনের সমস্ত কথা জানেন। কোনো কথাই তার কাছে গোপন নেই। আর তিনিই এ কুরআন নাযিল করেছেন যা আগের ও পরের সবার কল্যাণ সমৃদ্ধ। কেউ এর মত কোনো কিছু আনতে পারবে না। শুধু তিনিই এটা আনতে পারবেন যিনি আসমান ও যমীনের গোপন রহস্য জানেন। তিনি তোমাদের কথা শুনেন, তোমাদের অবস্থা জানেন। [ইবন কাসীর]

التفاسير:

external-link copy
5 : 21

بَلۡ قَالُوٓاْ أَضۡغَٰثُ أَحۡلَٰمِۭ بَلِ ٱفۡتَرَىٰهُ بَلۡ هُوَ شَاعِرٞ فَلۡيَأۡتِنَا بِـَٔايَةٖ كَمَآ أُرۡسِلَ ٱلۡأَوَّلُونَ

বরং তারা বলে, ‘এসব অলীক কল্পনা, হয় সে এগুলো রটনা করেছে, না হয় সে একজন কবি [১]। অতএব সে নিয়ে আসুক আমাদের কাছে এক নিদর্শন যেরূপ নিদর্শনসহ প্রেরিত হয়েছিল পূর্ববর্তীগণ। info

[১] যেসব স্বপ্নের মানসিক অথবা শয়তানী কল্পনা শামিল থাকে, সেগুলোকে أحلام বলা হয়। এ কারণেই এর অনুবাদ “অলীক কল্পনা” করা হয়েছে। এর আরেক অর্থ হয়, মিথ্যা স্বপ্ন। [ফাতহুল কাদীর] অর্থাৎ অবিশ্বাসীরা প্রথমে কুরআনকে জাদু বলেছে, এরপর আরও অগ্রসর হয়ে বলতে শুরু করেছে যে, এটা আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন ও অপবাদ যে, এটা তাঁর কালাম। অবশেষে বলতে শুরু করেছে যে, আসল কথা হচ্ছে লোকটি একজন কবি। তার কালামে কবিসুলভ কল্পনা আছে। এভাবে কাফেররা সীমালঙ্ঘন ও গোড়ামীর বশে যা ইচ্ছে তা-ই এ কুরআনের জন্য সাব্যস্ত করছে। যেমন অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, “দেখুন, তারা আপনার কী উপমা দেয়! ফলে তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে, সুতরাং তারা পথ পাবে না।” [সূরা আল-ইসরা ৪৮] [ইবন কাসীর]

التفاسير:

external-link copy
6 : 21

مَآ ءَامَنَتۡ قَبۡلَهُم مِّن قَرۡيَةٍ أَهۡلَكۡنَٰهَآۖ أَفَهُمۡ يُؤۡمِنُونَ

এদের আগে যেসব জনপদ আমরা ধ্বংস করেছি সেখানকার অধিবাসীরা ঈমান আনেনি; তবে কি তারা ঈমান আনবে [১]? info

[১] এ সংক্ষিপ্ত বাক্যে নিদর্শন দেখানোর দাবীর যে জবাব দেয়া হয়েছে তার মধ্যে তিনটি বিষয় রয়েছে। এক. পূর্ববতী রাসূলগণকে যে ধরনের নিদর্শন দেয়া হয়েছিল তোমরা তেমনি ধরনের নিদর্শন চাচ্ছে? কিন্তু তোমরা ভুলে যাচ্ছো হঠকারী লোকেরা সেসব নিদর্শন দেখেও ঈমান আনেনি। দুই. তোমরা নিদর্শনের দাবী তো করছো কিন্তু একথা মনে রাখছো না যে, সুস্পষ্ট মু'জিযা স্বচক্ষে দেখে নেয়ার পরও যে জাতি ঈমান আনতে অস্বীকার করেছে তারা এরপর শুধু ধ্বংসই হয়ে গেছে। তিন. তোমাদের চাহিদামতো নিদর্শনাবলী না পাঠানো তো তোমাদের প্রতি আল্লাহর একটি বিরাট মেহেরবাণী। কারণ, এ পর্যন্ত তোমরা আল্লাহর হুকুম শুধুমাত্র অস্বীকারই করে আসছো কিন্তু এ জন্য তোমাদের উপর আযাব পাঠানো হয়নি। এখন কি তোমরা নিদর্শন এ জন্য চাচ্ছো যে, যেসব জাতি নিদর্শন দেখার পরও ঈমান আনেনি এবং এ জন্য তাদেরকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে তোমরাও তাদের মতো একই পরিণতির সম্মুখীন হতে চাও? তাদের পূর্বের লোকদের কাছে নিদর্শন পাঠানোর পরও তারা যখন ঈমান আনেনি তখন এরাও আসলে ঈমান আনবে না। আল্লাহ বলেন, “নিশ্চয় যাদের বিরুদ্ধে আপনার রবের বাক্য সাব্যস্ত হয়ে গেছে, তারা ঈমান আনবে না। যদিও তাদের কাছে সবগুলো নিদর্শন আসে, যে পর্যন্ত না তারা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দেখতে পাবে।” [সূরা ইউনুস ৯৬-৯৭] এত কিছু বলা হলেও মূল কথা হচ্ছে, তারা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এমন নিদর্শন দেখেছে যা পূর্ববর্তী নবী-রাসূলদের কাছে যে সমস্ত নিদর্শন ছিল তা থেকে অনেক বেশী স্পষ্ট, অকাট্য ও শক্তিশালী। [দেখুন, ইবন কাসীর]

التفاسير:

external-link copy
7 : 21

وَمَآ أَرۡسَلۡنَا قَبۡلَكَ إِلَّا رِجَالٗا نُّوحِيٓ إِلَيۡهِمۡۖ فَسۡـَٔلُوٓاْ أَهۡلَ ٱلذِّكۡرِ إِن كُنتُمۡ لَا تَعۡلَمُونَ

আর আপনার আগে আমরা ওহীসহ পুরুষদেরকেই পাঠিয়েছিলাম [১]; সুতরাং যদি তোমরা না জান তবে জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর [২]। info

[১] এটি হচ্ছে “এ ব্যক্তি তো তোমাদের মতই একজন মানুষ” তাদের এ উক্তির জবাব। তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মানবিক সত্তাকে তাঁর নবী না হওয়ার বিরুদ্ধে যুক্তি হিসেবে পেশ করতো। জবাব দেয়া হয়েছে যে, পূর্ব যুগের যেসব লোককে আল্লাহর পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছে বলে তোমরা মানো তারা সবাই মানুষ ছিলেন এবং মানুষ থাকা অবস্থায়ই তারা আল্লাহর অহী লাভ করেছিলেন। যেমন অন্য আয়াতে বলেছেন, “আর আমরা আপনার আগেও জনপদবাসীদের মধ্য থেকে পুরুষদেরকেই পাঠিয়েছিলাম, যাদের কাছে ওহী পাঠাতাম।” [ সূরা ইউসুফ ১০৯]

এ আয়াত থেকে আরো জানা গেল যে, মহান আল্লাহ নবুওয়ত ও রিসালাতের জন্য শুধুমাত্র পুরুষদেরকেই মনোনীত করেছেন। নারীরা এটার যোগ্যতা রাখে না বলেই তাদের দেয়া হয়নি। সৃষ্টিগতভাবে এতবড় গুরু-দায়িত্ব নেয়ার যোগ্যতা তাদের নেই। নবুওয়তের প্রচার-প্রসারের জন্য যে নিরলস সংগ্রাম দরকার হয় তা নারীরা কখনো করতে পারে না। তাদেরকে তাদের সৃষ্টি উপযোগী দায়িত্বই দেয়া হয়েছে। তাদের দায়িত্বও কম জবাবদিহীতাও স্বল্প। তাদেরকে এ দায়িত্ব না দিয়ে আল্লাহ তাদের উপর বিরাট রহমত করেছেন।

[২] এখানে اَهْلَ الذِّكْرِ বা “জ্ঞানীদের” বলে তাওরাত ও ইঞ্জীলের যেসব আলেম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছিল, তাদেরকে বোঝানো হয়েছে। উদ্দেশ্য এই যে, যে ইহুদীরা ইসলাম বৈরিতার ক্ষেত্রে আজ তোমার সাথে গলা মিলিয়ে চলছে এবং তোমাদেরকে বিরোধিতা করার কায়দা কৌশল শেখাচ্ছে তাদেরকে জিজ্ঞেস করো, মূসা ও বনী-ইসরাঈলের অন্যান্য নবীগণ কী ছিলেন? মানুষ ছিলেন, না ফেরেশতা ছিলেন? কেননা তারা সবাই জানে যে পুর্ববর্তী সকল নবী মানুষই ছিলেন। এটা তো মূলতঃ তাদের জন্য রহমতস্বরূপ। কারণ, তাদের মধ্য থেকে পাঠানোর কারণেই তিনি তাদের কাছে বাণী পৌছাতে সক্ষম হয়েছেন। আর মানুষও নবীদের থেকে রিসালাত ও হুকুম আহকাম গ্রহণ করতে পেরেছেন। [ইবন কাসীর]

এ আয়াত থেকে জানা গেল যে, শরীআতের বিধি-বিধান জানে না, এরূপ মূর্খ ব্যক্তিদের উপর আলেমদের অনুসরণ করা ওয়াজিব। তারা আলেমদের কাছে জিজ্ঞেস করে তদনুযায়ী আমল করবে। [সা’দী]

التفاسير:

external-link copy
8 : 21

وَمَا جَعَلۡنَٰهُمۡ جَسَدٗا لَّا يَأۡكُلُونَ ٱلطَّعَامَ وَمَا كَانُواْ خَٰلِدِينَ

আর আমরা তাদেরকে এমন দেহবিশিষ্ট করিনি যে, তারা খাবার গ্রহণ করত না; আর তারা চিরস্থায়ীও ছিল না [১]। info

[১] এটা তাদের আরেক প্রশ্নের উত্তর। তারা বলত যে, এটা কেমন নবী, যে খাওয়া-দাওয়া করেন? বলা হচ্ছে যে, যত নবী-রাসূলই পাঠিয়েছি তারা সবাই শরীর বিশিষ্ট লোক ছিলেন। তারা খাবার খেতেন। যেমন অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, “আপনার আগে আমরা যে সকল রাসূল পাঠিয়েছি তারা সকলেই তো খাওয়া-দাওয়া করত ও হাটে-বাজারে চলাফেরা করত।” [সূরা আল-ফুরকান ২০] অর্থাৎ তারাও মানুষদের মতই মানুষ ছিলেন। তারাও মানুষদের মতই খানা-পিনা করতেন। কামাই রোযগার করতে, ব্যবসা করতে বাজারে যেতেন। এটা তাদের কোনো ক্ষতি করেনি। তাদের কোনো মানও কমায়নি। কাফের মুশরিকরা যে ধারণা করে থাকে তা ঠিক নয়। তারা বলত: “এ কেমন রাসূল’ যে খাওয়া-দাওয়া করে এবং হাটে-বাজারে চলাফেরা করে; তার কাছে কোনো ফিরিশতা কেন নাযিল করা হল না, যে তার সংগে থাকত সতর্ককারীরূপে?’ ‘অথবা তার কাছে কোনো ধনভাণ্ডার এসে পড়ল না কেন অথবা তার একটি বাগান নেই কেন, যা থেকে সে খেতো?’ যালিমরা আরো বলে, ‘তোমরা তো এক জাদুগ্ৰস্ত ব্যক্তিরই অনুসরণ করছ।” [সূরা আল-ফুরকান ৭-৮] [ইবন কাসীর]

التفاسير:

external-link copy
9 : 21

ثُمَّ صَدَقۡنَٰهُمُ ٱلۡوَعۡدَ فَأَنجَيۡنَٰهُمۡ وَمَن نَّشَآءُ وَأَهۡلَكۡنَا ٱلۡمُسۡرِفِينَ

তারপর আমরা তাদের প্রতি কৃত ওয়াদা সত্য করে দেখলাম, ফলে আমরা তাদেরকে ও যাদেরকে ইচ্ছে রক্ষা করেছিলাম এবং সীমালংঘনকারীদেরকে করেছিলাম ধ্বংস [১]। info

[১] অর্থাৎ পূর্ববর্তী ইতিহাসের শিক্ষা শুধুমাত্র একথা বলে না যে, পূর্বে যেসব রাসূল পাঠানো হয়েছিল তারা মানুষ ছিলেন বরং একথাও বলে যে, তাদের সাহায্য ও সমর্থন করার এবং তাদের বিরোধিতাকারীদেরকে ধ্বংস করে দেয়ার যতগুলো অংগীকার আল্লাহ তাদের সাথে করেছিলেন সবই পূর্ণ হয়েছে এবং যেসব জাতি তাদের প্রতি অমর্যাদা প্রদর্শন করার চেষ্টা করেছিল তারা সবাই ধ্বংস হয়েছে। [ইবন কাসীর] কাজেই নিজেদের পরিণতি তোমরা নিজেরাই চিন্তা করে নাও।

التفاسير:

external-link copy
10 : 21

لَقَدۡ أَنزَلۡنَآ إِلَيۡكُمۡ كِتَٰبٗا فِيهِ ذِكۡرُكُمۡۚ أَفَلَا تَعۡقِلُونَ

আমরা তো তোমাদের প্রতি নাযিল করেছি কিতাব যাতে আছে তোমাদের আলোচনা, তবুও কি তোমরা বুঝবে না [১]? info

[১] কিতাব অর্থ কুরআন এবং যিকর অর্থ সম্মান শ্রেষ্ঠত্ব, খ্যাতি, উল্লেখ্য, আলোচনা ও বর্ণনা। আয়াতের অর্থ হচ্ছে, এটা তোমাদের জন্য সম্মান, প্রতিপত্তি ও স্থায়ী সুখ্যাতির বস্তু। যদি তোমরা এর উপর ঈমান আন এবং এটা অনুসারে আমল কর। বাস্তবিকই সাহাবায়ে কিরাম এর বড় নিদর্শন। তারা এর উপর ঈমান এনেছিল এবং আমল করেছিল বলেই তাদের সম্মান এত বেশী। [সা’দী]

التفاسير: