Fassarar Ma'anonin Alqura'ni - Fassarar Bangaladash - Abubakar Zakariyya

Lambar shafi:close

external-link copy
98 : 10

فَلَوۡلَا كَانَتۡ قَرۡيَةٌ ءَامَنَتۡ فَنَفَعَهَآ إِيمَٰنُهَآ إِلَّا قَوۡمَ يُونُسَ لَمَّآ ءَامَنُواْ كَشَفۡنَا عَنۡهُمۡ عَذَابَ ٱلۡخِزۡيِ فِي ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَا وَمَتَّعۡنَٰهُمۡ إِلَىٰ حِينٖ

অতঃপর কোনো জনপদবাসী কেন এমন হল না যারা ঈমান আনত এবং তাদের ঈমান তাদের উপকারে আসত? তবে ইউনুস [১] এর সম্প্রদায় ছাড়া, তারা যখন ঈমান আনল তখন আমরা তাদের থেকে দুনিয়ার জীবনের হীনতাজনক শাস্তি দূর করলাম এবং তাদেরকে কিছু কালের জন্য জীবনোপভোগ করতে দিলাম [২]। info

[১] ইউনুস আলাইহিস সালামকে আসিরিয়ানদের হেদায়াতের জন্য ইরাকে পাঠানো হয়েছিল। এ কারণে আসিরীয়দেরকে এখানে ইউনুসের কওম বলা হয়েছে। সে সময় এ কওমের কেন্দ্র ছিল ইতিহাস খ্যাত নিনোভা নগরী। বিস্তৃত এলাকা জুড়ে এ নগরীর ধ্বংসাবশেষ আজো বিদ্যমান। দাজলা নদীর পূর্ব তীরে আজকের মুসেল শহরের ঠিক বিপরীত দিকে এ ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। এ জাতির রাজধানী নগরী নিনোভা প্রায় ৬০ মাইল এলাকা জুড়ে অবস্থিত ছিল। এ থেকে এদের জাতীয় উন্নতির বিষয়টি অনুমান করা যেতে পারে।

[২] আয়াতের পরিষ্কার মর্ম এই যে, পৃথিবীর সাধারণ জনপদের অধিবাসীদের সম্পর্কে আফসোসের প্রকাশ হিসেবে বলা হয়েছে যে, তারা কেনই বা এমন হলো না যে, এমন সময়ে ঈমান নিয়ে আসত যে সময় পর্যন্ত ঈমান আনলে তা লাভজনক হতো! অর্থাৎ আযাব কিংবা মৃত্যুতে পতিত হবার আগে যদি ঈমান নিয়ে আসতো, তবে তাদের ঈমান কবুল হয়ে যেত। কিন্তু ইউনুস আলাইহিস সালামের সম্প্রদায় তা থেকে স্বতন্ত্র। কারণ, তারা আযাবের লক্ষণাদি দেখে আযাবে পতিত হওয়ার পূর্বেই যখন ঈমান নিয়ে আসে, তখন তাদের ঈমান ও তাওবা কবুল হয়ে যায়। আয়াতের এই প্রকৃষ্ট মর্ম প্রতীয়মান করে যে, এখানে আল্লাহ্‌র চিরাচরিত নিয়মে কোনো ব্যতিক্রম ঘটেনি; বরং একান্তভাবে তাঁর নিয়মানুযায়ীই তাদের ঈমান ও তাওবা কবুল করে নেয়া হয়েছে।

অধিকাংশ মুফাস্‌সির এ আয়াতের এ মর্মই লিখেছেন যাতে প্রতীয়মান হয় যে, ইউনুস আলাইহিস সালামের সম্প্রদায়ে তাওবা কবুল হওয়ার বিষয়টি আল্লাহর সাধারণ রীতির আওতায়ই হয়েছে। তাবারী প্রমূখ তাফসীরকারও এ ঘটনাকে ইউনুস আলাইহিস সালামের সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্য বলে উল্লেখ করেছেন। সে সম্প্রদায়ের বিশুদ্ধ মনে তাওবা করা ও আল্লাহর জ্ঞানে তার নিঃস্বার্থ হওয়া প্রভৃতিই আযাব না আসার কারণ। ঘটনা এই যে, ইউনুস আলাইহিস সালাম যখন আল্লাহর নির্দেশ মোতাবেক তিন দিন পর আযাব আসার দুঃসংবাদ শুনিয়ে দেন। কিন্তু পরে প্রমাণিত হয় যে, আযাব আসেনি, তখন ইউনুস আলাইহিস্ সালাম-এর মনে এ ভাবনা চেপে বসলো যে, আমি সম্প্রদায়ের মধ্যে ফিরে গেলে তারা আমাকে মিথ্যুক বলে সাব্যস্ত করবে। অতএব, এ সময় এ দেশ থেকে হিজরত করে চলে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু নবী-রাসূলগণের রীতি হলো এই যে, আল্লাহর পক্ষ থেকে কোনো দিকে হিজরত করার নির্দেশ না আসা পর্যন্ত নিজের ইচ্ছামত তারা হিজরত করেন না। ইউনুস আলাইহিস সালাম আল্লাহর পক্ষ থেকে অনুমোদন আসার পূর্বেই হিজরতের উদ্দেশ্যে নৌকায় আরোহণ করে বসেন। সূরা আস-সাফফাতে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে

(اِذۡ اَبَقَ اِلَی الۡفُلۡکِ الۡمَشۡحُوۡنِ)

“স্মরণ করুন, যখন তিনি বোঝাই নৌযানের দিকে পালিয়ে গেলেন।" [আস-সাফফাত ১৪০] এতে হিজরতের উদ্দেশ্যে নৌকায় আরোহণ করাকে اَبَقَ শব্দে বলা হয়েছে। এর অর্থ হলো স্বীয় মনিবের অনুমতি ব্যতীত কোনো ক্রীতদাসের পালিয়ে যাওয়া। অন্য সূরায় এসেছে, “আর স্মরণ করুন, যুন-নূন-এর কথা, যখন তিনি ক্রোধ ভরে চলে গিয়েছিলেন এবং মনে করেছিলেন যে, আমরা তাকে পাকড়াও করব না।" [আল-আম্বিয়া ৮৭] এতে স্বভাবজাত ভীতির কারণে সম্প্রদায়ের কাছ থেকে আত্মরক্ষা করে হিজরত করাকে ভর্ৎসনা সুরে ব্যক্ত করা হয়েছে। সুতরাং তার প্রতি ভর্ৎসনা আসার কারণ হলো, অনুমতির পূর্বে হিজরত করা। মোটকথা, পূর্বের কোনো নবী-রাসূলের জনপদের সবাই ঈমান আনেনি। এর ব্যতিক্রম ছিল ইউনুসের কাওম। তারা ছিল নিনোভার অধিবাসী। তাদের ঈমানের কারণ ছিল, তারা তাদের রাসূলের মুখে যে আযাব আসার কথা শুনেছিল সেটার বিভিন্ন উপসর্গ দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিল। আর তারা দেখল যে, তাদের রাসূলও তাদের কাছ থেকে চলে গিয়েছেন। তখন তারা আল্লাহ্‌র কাছে আশ্রয় চাইল, তাঁর কাছে উদ্ধার কামনা করল, কান্নাকাটি করল এবং বিনয়ী হল। আর তারা তাদের শিশু-সন্তান, জন্তু-জানোয়ারদের পর্যন্ত উপস্থিত করেছিল এবং আল্লাহ্‌র কাছে তাদের উপর থেকে আযাব উঠিয়ে নেয়ার আহবান জানিয়েছিল। আর তখনই আল্লাহ্‌ তাদের উপর রহমত করেন এবং তাদের আযাব উঠিয়ে নেন, তাদেরকে কিছু দিনের জন্য দুনিয়াকে উপভোগ করার সুযোগ প্রদান করেন। [ইবন কাসীর]

التفاسير:

external-link copy
99 : 10

وَلَوۡ شَآءَ رَبُّكَ لَأٓمَنَ مَن فِي ٱلۡأَرۡضِ كُلُّهُمۡ جَمِيعًاۚ أَفَأَنتَ تُكۡرِهُ ٱلنَّاسَ حَتَّىٰ يَكُونُواْ مُؤۡمِنِينَ

আর আপনার রব ইচ্ছে করলে যমীনে যারা আছে তারা সবাই ঈমান আনত [১]; তবে কি আপনি মুমিন হওয়ার জন্য মানুষের উপর জবরদস্তি করবেন [২]? info

[১] অর্থাৎ আল্লাহ যদি চাইতেন যে, এ পৃথিবীতে শুধুমাত্র তাঁর আদেশ পালনকারী অনুগতরাই বাস করবে এবং কুফরী ও নাফরমানীর কোনো অস্তিত্বই থাকবে না তাহলে তাঁর জন্য সারা দুনিয়াবাসীকে মুমিন ও অনুগত বানানো কঠিন ছিল না এবং নিজের একটি মাত্র সৃজনী ইংগিতের মাধ্যমে তাদের অন্তর ঈমান ও আনুগত্যে ভরে তোলাও তাঁর পক্ষে সহজ ছিল। কিন্তু মানব জাতিকে সৃষ্টি করার পেছনে তাঁর যে প্রজ্ঞাময় উদ্দেশ্য কাজ করছে এ প্রাকৃতিক বল প্রয়োগ তা বিনষ্ট করে দিতো। তাই আল্লাহ নিজেই ঈমান আনা বা না আনা এবং আনুগত্য করা বা না করার ব্যাপারে মানুষকে স্বাধীন রাখতে চান। [এ ব্যাপারে আরো দেখুন, সূরা হুদ ১১৮, ১১৯, সূরা আর-রা’দ ৩১]

[২] ইবন আব্বাস বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ঐকান্তিক ইচ্ছা ছিল যে, সমস্ত মানুষই ঈমান আনুক। তখন আল্লাহ্ তা'আলা জানিয়ে দিলেন যে, যাদের ঈমানের কথা পূর্বেই প্রথম যিকর তথা মানুষের তাকদীরে লিখা হয়েছে কেবল তারাই ঈমান আনবে, আর যাদের দূর্ভাগ্যের কথা প্রথম যিকর তথা প্রথম তাকদীর নির্ধারণে লিখা হয়েছে কেবল তারাই দূর্ভাগা হবে। [তাবারী; কুরতুবী] এর অর্থ প্রমাণের সাহায্যে হেদায়াত ও গোমরাহীর পার্থক্য স্পষ্ট করে তুলে ধরার এবং সঠিক পথ পরিষ্কারভাবে দেখিয়ে দেয়ার যে দায়িত্ব ছিল তা আমার নবী পুরোপুরি পালন করেছেন। এখন যদি তোমরা নিজেরাই সঠিক পথে চলতে না চাও এবং তোমাদের সঠিক পথে যদি এর ওপর নির্ভরশীল হয় যে, কেউ তোমাদের ধরে বেঁধে সঠিক পথে চালাবে, তাহলে তোমাদের জেনে রাখা উচিত, নবীকে এ দায়িত্ব দেয়া হয়নি। যাকে আল্লাহ হিদায়াত করবেন না তার জন্য কোনো হিদায়াতকারী নেই। এমন কেউ নেই যে, তার মনের উপর জোর করে ঈমানের জন্য সেটাকে প্রশস্ত করে দেবে। তবে যদি আল্লাহ সেটা চান তবে ভিন্ন কথা। [আদওয়াউল বায়ান] অন্য আয়াতেও আল্লাহ সেটা বর্ণনা করেছেন যে, “আর আল্লাহ যাকে ফিতনায় ফেলতে চান তার জন্য আল্লাহর কাছে আপনার কিছুই করার নেই।" [সূরা আল-মায়িদাহ ৪১] আরও বলেন, “আপনি যাকে ভালবাসেন ইচ্ছে করলেই তাকে সৎপথে আনতে পারবেন না। তবে আল্লাহই যাকে ইচ্ছে সৎপথে আনয়ন করেন এবং সৎপথ অনুসারীদের সম্পর্কে তিনিই ভাল জানেন।" [সূরা আল-কাসাস ৫৬] অনুরূপ আরও অন্যান্য আয়াতেও এসেছে, যেমন, সূরা আন-নিসা ৮৮, ১৪৩; সূরা আর-আ’রাফ: ১৭৮; সূরা আর-রা’দ: ৩৩; সূরা আল-ইসরা ৯৭; সূরা আল-কাহাফ ১৭; সূরা আয-যুমার ২৩, ৩৬; সূরা গাফির ৩৩; সূরা আশ-শূরা ৪৪, ৪৬।

التفاسير:

external-link copy
100 : 10

وَمَا كَانَ لِنَفۡسٍ أَن تُؤۡمِنَ إِلَّا بِإِذۡنِ ٱللَّهِۚ وَيَجۡعَلُ ٱلرِّجۡسَ عَلَى ٱلَّذِينَ لَا يَعۡقِلُونَ

আর আল্লাহ্‌র অনুমতি ছাড়া ঈমান আনা কারো সাধ্য নয় এবং যারা বোঝে না আল্লাহ্‌ তাদেরকেই কলুষলিপ্ত করেন। info
التفاسير:

external-link copy
101 : 10

قُلِ ٱنظُرُواْ مَاذَا فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۚ وَمَا تُغۡنِي ٱلۡأٓيَٰتُ وَٱلنُّذُرُ عَن قَوۡمٖ لَّا يُؤۡمِنُونَ

বলুন, আসমানসমূহ ও যমীনে যা কিছু আছে সেগুলোর প্রতি লক্ষ্য কর।’ আর যারা ঈমান আনে না, নিদর্শনাবলী ও ভীতি প্রদর্শন এমন সম্প্রদায়ের কোনো কাজে আসে না [১]। info

[১] আল্লামা শানকীতী বলেন, আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর সমস্ত বান্দাদেরকে এ নির্দেশই দিচ্ছেন যে, তারা যেন আসমান ও যমীনের বৃহৎ সৃষ্টিগুলোর দিকে তাকায় যেগুলো তাঁর মহত্বতা, পূর্ণতা ও তিনিই যে একমাত্র ইবাদতযোগ্য ইলাহ তার উপর প্রমাণবহ। অনুরূপ নির্দেশ তিনি অন্য আয়াতেও দিয়েছেন। যেমন, “অচিরেই আমরা তাদেরকে আমাদের নিদর্শনাবলী দেখাব, বিশ্ব জগতের প্রান্তসমূহে এবং তাদের নিজেদের মধ্যে; যাতে তাদের কাছে সুস্পষ্ট হয়ে উঠে যে, অবশ্যই এটা (কুরআন) সত্য। এটা কি আপনার রবের সম্পর্কে যথেষ্ট নয় যে, তিনি সব কিছুর উপর সাক্ষী?” [সূরা ফুসসিলাত ৫৩] [আদওয়াউল বায়ান] বস্তুতঃ ঈমান আনার জন্য তারা যে দাবীটিকে শর্ত হিসেবে পেশ করতো এটি হচ্ছে তার শেষ ও চূড়ান্ত জবাব। তাদের এ দাবীটি ছিল, আমাদের এমন কোনো নির্দশন দেখান যার ফলে আপনার নবুওয়াতকে আমরা সত্য বলে বিশ্বাস করতে পারি। এর জবাবে বলা হচ্ছে, যদি তোমাদের মধ্যে সত্যের আকাংখা এবং সত্য গ্রহণ করার আগ্রহ থাকে তাহলে যমীন ও আসমানের চারদিকে যে অসংখ্য নিদর্শন ছড়িয়ে রয়েছে এগুলো মুহাম্মদের বাণীর সত্যতার ব্যাপারে তোমাদের নিশ্চিন্ত করার জন্য শুধু যথেষ্ট নয় বরং তার চেয়েও বেশী। শুধু চোখ খুলে সেগুলো দেখার প্রয়োজন। কিন্তু যদি এ চাহিদা ও আগ্রহই তোমাদের মধ্যে না থাকে, তাহলে অন্য কোন নির্দশন, তা যতই অলৌকিক, অটল ও চিরন্তন রীতি ভংগকারী এবং বিস্ময়কর ও অত্যাশ্চর্য হোক না কেন, তোমাদেরকে ঈমানের নিয়ামত দান করতে পারে না।

التفاسير:

external-link copy
102 : 10

فَهَلۡ يَنتَظِرُونَ إِلَّا مِثۡلَ أَيَّامِ ٱلَّذِينَ خَلَوۡاْ مِن قَبۡلِهِمۡۚ قُلۡ فَٱنتَظِرُوٓاْ إِنِّي مَعَكُم مِّنَ ٱلۡمُنتَظِرِينَ

তবে কি তারা কেবল তাদের আগে যা ঘটেছে সেটার অনুরূপ ঘটনারই প্রতীক্ষা করে? বলুন, ‘তোমরা প্রতীক্ষা কর, আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষা করছি [১]।’ info

[১] অর্থাৎ তারা তো কেবল তাদের পূর্বে যারা চলে গেছে, নূহ, হুদ ও সামূদের কাওমের উপর দিয়ে যে যুগান্তকারী ঘটনা ঘটে গেল সেটার মত ঘটনারই অপেক্ষা করছে। [তাবারী] পূর্ববর্তী উম্মতদের মধ্যে যারা নবী-রাসূলদের উপর মিথ্যারোপ করেছিল, তাদের উপর যেমন শাস্তি এসেছিল এরাও কি তদ্রুপ শাস্তিরই অপেক্ষা করছে? [ইবন কাসীর]

التفاسير:

external-link copy
103 : 10

ثُمَّ نُنَجِّي رُسُلَنَا وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواْۚ كَذَٰلِكَ حَقًّا عَلَيۡنَا نُنجِ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ

তারপর আমরা আমাদের রাসূলগণকে এবং যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে উদ্ধার করি। এভাবে মুমিনদেরকে উদ্ধার করা আমাদের দায়িত্ব [১]। info

[১] এ দায়িত্ব আল্লাহ স্বয়ং তাঁর নিজের উপর নিয়ে নিয়েছেন। কেউ তাঁকে বাধ্য করার নেই। তিনি নিজ করুণাবশতঃ মুমিনদেরকে উদ্ধার করে থাকেন। অন্য আয়াতে আল্লাহ্ তা'আলা বলেন, “তোমাদের প্রভূ তার নিজের উপর রহমতকে লিখে নিয়েছেন।” [সূরা আল-আনআম ৫৪] অপর এক হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ তাঁর কাছে আরশের উপর একটি কিতাবে লিখে রেখেছেন যে, আমার রহমত আমার ক্রোধের উপর প্রাধান্য পাবে’। [বুখারী ৩১৯৪, মুসলিম ২৭৫১]

التفاسير:

external-link copy
104 : 10

قُلۡ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ إِن كُنتُمۡ فِي شَكّٖ مِّن دِينِي فَلَآ أَعۡبُدُ ٱلَّذِينَ تَعۡبُدُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ وَلَٰكِنۡ أَعۡبُدُ ٱللَّهَ ٱلَّذِي يَتَوَفَّىٰكُمۡۖ وَأُمِرۡتُ أَنۡ أَكُونَ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ

বলুন, ‘হে মানুষ ! তোমরা যদি আমার দীনের প্রতি সংশয়যুক্ত হও তবে জেনে রাখ, তোমরা আল্লাহ্‌ ছাড়া যাদের ‘ইবাদাত কর আমি তাদের ‘ইবাদাত করি না। বরং আমি ইবাদাত করি আল্লাহ্‌র যিনি তোমাদের মৃত্যু ঘটান এবং আমি মুমিনদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য আদেশপ্রাপ্ত হয়েছি, info
التفاسير:

external-link copy
105 : 10

وَأَنۡ أَقِمۡ وَجۡهَكَ لِلدِّينِ حَنِيفٗا وَلَا تَكُونَنَّ مِنَ ٱلۡمُشۡرِكِينَ

আর এটাও যে, আপনি একনিষ্ঠভাবে নিজেকে দীনে প্রতিষ্ঠিত রাখুন [১] এবং কখনই মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হবেন না [২], info

[১] অর্থাৎ “নিজের চেহারাকে স্থির করে নিন।” এর অর্থ, আপনি এদিক ওদিক, সামনে, পেছনে, ডানে, বাঁয়ে মুড়ে যাবেন না। একেবারে বরাবর সোজা পথে দৃষ্টি রেখে চলুন, যেপথ আপনাকে দেখানো হয়েছে। তারপর বলা হয়েছে حنيفا অর্থাৎ সব দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে শুধু একদিকে মুখ করে থাকুন। কাজেই দাবী হচ্ছে, এ দীন, আল্লাহর বন্দেগীর এ পদ্ধতি এবং জীবন যাপন প্রণালীর ক্ষেত্রে একমাত্র আল্লাহ রাববুল আলামীনের ইবাদত-বন্দেগী, দাসত্ব, আনুগত্য করতে ও হুকুম মেনে চলতে হবে। এমন একনিষ্ঠভাবে করতে হবে যে, অন্য কোনো পদ্ধতির দিকে সামান্যতম ঝুঁকে পড়াও যাবে না। অন্য আয়াতেও সে নির্দেশ এসেছে, যেমন, “কাজেই আপনি একনিষ্ঠ হয়ে নিজ চেহারাকে দীনে প্রতিষ্ঠিত রাখুন। আল্লাহর ফিতরাত (স্বাভাবিক রীতি বা দীন ইসলাম), এর উপর (চলার যোগ্য করে) তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন; আল্লাহর সৃষ্টির কোনো পরিবর্তন নেই। এটাই প্রতিষ্ঠিত দীন; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না।" [সূরা আর-রূম ৩০]

[২] অর্থাৎ যারা আল্লাহর সত্তা, তাঁর গুণাবলী, অধিকার ও ক্ষমতা-ইখতিয়ারে কোনোভাবে অন্য কাউকে শরীক করে কখনো তাদের অন্তর্ভুক্ত হবেন না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আমি তোমাদের উপর দাজ্জালের চেয়েও যা বেশী ভয় করছি তা কি বলে দিবনা? আমরা বললাম, হ্যাঁ, তিনি বললেন, ‘শির্কে খফী’। আর তা হলো কোনো মানুষ অপরের সন্তুষ্টি লাভের জন্য কোনো নেক আমল করা। [মুসনাদে আহমাদ ৩/৩০]

التفاسير:

external-link copy
106 : 10

وَلَا تَدۡعُ مِن دُونِ ٱللَّهِ مَا لَا يَنفَعُكَ وَلَا يَضُرُّكَۖ فَإِن فَعَلۡتَ فَإِنَّكَ إِذٗا مِّنَ ٱلظَّٰلِمِينَ

‘আর আপনি আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কাউকে ডাকবেন না, যা আপনার উপকারও করে না, অপকারও করে না, কারণ এটা করলে তখন আপনি অবশ্যই যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হবেন।’ info
التفاسير: