የቅዱስ ቁርዓን ይዘት ትርጉም - የባንጋልኛ ትርጉም ‐ በአቡበክር ዘከሪያ

የገፅ ቁጥር:close

external-link copy
71 : 10

۞ وَٱتۡلُ عَلَيۡهِمۡ نَبَأَ نُوحٍ إِذۡ قَالَ لِقَوۡمِهِۦ يَٰقَوۡمِ إِن كَانَ كَبُرَ عَلَيۡكُم مَّقَامِي وَتَذۡكِيرِي بِـَٔايَٰتِ ٱللَّهِ فَعَلَى ٱللَّهِ تَوَكَّلۡتُ فَأَجۡمِعُوٓاْ أَمۡرَكُمۡ وَشُرَكَآءَكُمۡ ثُمَّ لَا يَكُنۡ أَمۡرُكُمۡ عَلَيۡكُمۡ غُمَّةٗ ثُمَّ ٱقۡضُوٓاْ إِلَيَّ وَلَا تُنظِرُونِ

আর তাদেরকে নূহ্-এর বৃত্তান্ত শোনান [১]। তিনি তার সম্প্রদায়কে বলেছিলেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আমার অবস্থিতি ও আল্লাহ্‌র আয়াতসমূহ দ্বারা আমার উপদেশ প্রদান তোমাদের কাছে যদি দুঃসহ হয় তবে আমি তো আল্লাহ্‌র উপর নির্ভর করি। সুতরাং তোমরা তোমাদের কর্তব্য স্থির করে নাও এবং তোমরা যাদেরকে শরীক করেছ তাদেরকেও ডাক, পরে যেন কর্তব্য বিষয়ে তোমাদের কোনো অস্পষ্টতা না থাকে। তারপর আমার সম্বন্ধে তোমাদের কাজ শেষ করে ফেল এবং আমাকে অবকাশ দিও না [২]। info

[১] এ পর্যন্ত যে আলোচনা হয়েছে তাতে এ লোকদেরকে ন্যায়সংগত যুক্তি ও হৃদয়গ্রাহী উপদেশের মাধ্যমে তাদের আকীদা-বিশ্বাসে কি কি ভুল-ভ্রান্তি আছে এবং সেগুলো ভুল কেন আর এর মোকাবিলায় সঠিক পথ কী এবং তা সঠিক কেন- একথা বুঝানো হয়েছিল। এখানে আল্লাহ তাঁর নবীকে হুকুম দিচ্ছেন, তাদেরকে নূহের ঘটনা শুনিয়ে দিন, এ ঘটনা থেকেই তারা আপনার ও তাদের মধ্যকার ব্যাপারটির জবাব পেয়ে যাবে। যেখানে তারা দেখতে পাবে যে, যারা কুফরিতে নিপতিত ছিল তাদেরকে কিভাবে কঠোর শাস্তি দিয়েছিলেন। [কুরতুবী] সুতরাং যারাই অনুরূপ কাজ করবে, আপনার উপর মিথ্যারোপ করবে, আপনার বিরোধিতা করবে তাদের পরিণতিও তা-ই হবে। [ইবন কাসীর]

[২] এটা একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। বলা হচ্ছে, আমি নিজের কাজ থেকে বিরত হবো না। তোমরা আমার বিরুদ্ধে যা করতে চাও করো। আমি আল্লাহ্‌র ওপর ভরসা রাখি। এ ব্যাপারে আরো দেখুন সূরা হুদের ৫৫নং আয়াত।

التفاسير:

external-link copy
72 : 10

فَإِن تَوَلَّيۡتُمۡ فَمَا سَأَلۡتُكُم مِّنۡ أَجۡرٍۖ إِنۡ أَجۡرِيَ إِلَّا عَلَى ٱللَّهِۖ وَأُمِرۡتُ أَنۡ أَكُونَ مِنَ ٱلۡمُسۡلِمِينَ

‘অতঃপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও তবে তোমাদের কাছে আমি তো কোনো পারিশ্রমিক চাইনি, আমার পারিশ্রমিক আছে তো কেবল আল্লাহ্‌র কাছে, আর আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত হতে আদেশপ্রাপ্ত হয়েছি [১]।’ info

[১] অর্থাৎ আমাকে যে ইসলামের আনুগত্য করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে তার আনুগত্য আমি করছি। এর দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে, ইসলাম সমস্ত নবী-রাসূলদের দীন। তাদের শরীআত বিভিন্ন ছিল কিন্তু দীন একই ছিল। নূহ আলাইহিস সালামের দীন যে ইসলাম ছিল তা এ আয়াতে তার কথা থেকে আমরা তা জানতে পারলাম। অনুরূপভাবে ইবরাহীম আলাইহিস সালামও ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, “আমি রাববুল আলামীনের জন্য আত্মসমৰ্পন তথা ইসলাম গ্রহণ করেছি।" [সূরা আল-বাকারাহ ১৩১] তাছাড়া ইয়াকুব আলাইহিসসালামও তার দীনকে ইসলাম বলে ঘোষণা করেছিলেন। [দেখুন, সূরা আল-বাকারাহ ১৩২] আর ইউসুফ ও মূসা আলাইহিমাসসালামও সেটা ঘোষণা করেছিলেন। [দেখুন, সূরা ইউসুফ ১০১, সূরা ইউনুস ৮৪] বরং মূসা আলাইহিসসালামের উপর ঈমান গ্রহণকারী জাদুকরগণ, রাণী বিলকিস, ঈসা আলাইহিসসালামের হাওয়ারীগণ এরা সবাই তাদের দীনকে ইসলাম বলে জানিয়েছেন। [দেখুন, সূরা আল-আরাফ ১২৬, সূরা আন-নামল ৪৪, সূরা আল-মায়েদাহ ৪৪, ১১১] এমনকি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকেও আল্লাহ তা'আলা এ দীনের অনুসারী হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, “বলুন, আমার সালাত, আমার ইবাদাত, আমার জীবন ও আমার মরণ জগতসমূহের রব আল্লাহ্‌রই উদ্দেশ্যে। তাঁর কোনো শরীক নেই এবং আমি এরই জন্য আদেশপ্রাপ্ত হয়েছি এবং আমিই প্রথম মুসলিম।” [সূরা আল-আনআম ১৬২, ১৬৩] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, "আমরা নবীগোষ্ঠি বৈমাত্রেয় ভাই, আমাদের দীন একই।’ [বুখারী ৩৪৪৩, মুসলিম ২৩৬৫]

التفاسير:

external-link copy
73 : 10

فَكَذَّبُوهُ فَنَجَّيۡنَٰهُ وَمَن مَّعَهُۥ فِي ٱلۡفُلۡكِ وَجَعَلۡنَٰهُمۡ خَلَٰٓئِفَ وَأَغۡرَقۡنَا ٱلَّذِينَ كَذَّبُواْ بِـَٔايَٰتِنَاۖ فَٱنظُرۡ كَيۡفَ كَانَ عَٰقِبَةُ ٱلۡمُنذَرِينَ

অবশেষে তারা তার প্রতি মিথ্যারোপ করল; ফলে আমরা তাকে ও তার সঙ্গে যারা নৌকাতে ছিল তাদেরকে নাজাত দিলাম এবং তাদেরকে স্থলাভিষিক্ত করি। আর যারা আমাদের আয়াতসমূহে মিথ্যারোপ করেছিল তাদেরকে নিমজ্জিত করলাম। কাজেই দেখুন, যাদেরকে সতর্ক করা হয়েছিল তাদের পরিণাম কি হয়েছিল? info
التفاسير:

external-link copy
74 : 10

ثُمَّ بَعَثۡنَا مِنۢ بَعۡدِهِۦ رُسُلًا إِلَىٰ قَوۡمِهِمۡ فَجَآءُوهُم بِٱلۡبَيِّنَٰتِ فَمَا كَانُواْ لِيُؤۡمِنُواْ بِمَا كَذَّبُواْ بِهِۦ مِن قَبۡلُۚ كَذَٰلِكَ نَطۡبَعُ عَلَىٰ قُلُوبِ ٱلۡمُعۡتَدِينَ

তারপর আমরা নূহের পরে অনেক রাসূলকে তাদের সম্প্রদায়ের কাছে পাঠাই; অতঃপর তারা তাদের কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণাদিসহ এসেছিল। কিন্তু তারা আগে যাতে মিথ্যারোপ করেছিল তাতে ঈমান আনার জন্য প্রস্তুত ছিল না [১]। এভাবে আমরা সীমালঙ্ঘনকারীদের হৃদয় মোহর করে দেই [২]। info

[১] এ আয়াতের ব্যাখ্যায় কয়েকটি মত রয়েছে,

১. আল্লাহ্ তা'আলা নূহের পরে রাসূলগণকে তাদের সম্প্রদায়ের কাছে পাঠান; কিন্তু নবীগণ তাদের কাছে সুস্পষ্ট নিদর্শনসহ আসার পরও সে সমস্ত সম্প্রদায় নবীগণ যা নিয়ে এসেছিল তা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল, যেমনিভাবে তারা নবী আসার পূর্বে অস্বীকার করত। [কুরতুবী]

২. আল্লাহ তা'আলা নূহের পরে রাসূলগণকে তাদের সম্প্রদায়ের কাছে পাঠান; কিন্তু তারা তাদের কাছে সুস্পষ্ট নিদর্শনসহ আসার পরেও সে সমস্ত সম্প্রদায় নবীগণ যা নিয়ে এসেছিল তা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল, যেমনিভাবে নূহের জাতি নূহ আলাইহিস্‌সালামের দাওয়াতকে এর আগে অস্বীকার করেছিল। [তাবারী; ফাতহুল কাদীর]

৩. আল্লাহ্ তা'আলা নূহের পরে রাসূলগণকে তাদের সম্প্রদায়ের কাছে পাঠান; কিন্তু তারা তাদের কাছে সুস্পষ্ট নিদর্শনসহ আসার পরেও সে সমস্ত সম্প্রদায় নবীগণ যা নিয়ে এসেছিল তা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল; তারা আল্লাহ্ তা'আলার পক্ষ থেকে নিদর্শনাবলী আসার পূর্বেই তড়িঘড়ি করে রাসূলগণের দাওয়াত মানতে অস্বীকার করেছিল, ফলে যখন তাদের কাছে রাসূলগণ নিদর্শনাবলী নিয়ে আসলেন তখন পূর্বে অস্বীকার করণের শাস্তি স্বরূপ তাদের ঈমান আনার সৌভাগ্য হলো না। এটা ছিল তাদের জন্য এক প্রকার শাস্তি। কারণ, তারা পূর্বে সামর্থ থাকা সত্বেও ঈমান আনেনি। সুতরাং নিদর্শনাবলী দেখার পরেও পূর্বোক্ত হটকারিতার কারণে তাদেরকে ঈমানের সৌভাগ্য থেকে বঞ্চিত হতে হলো। [তাবারী; ফাতহুল কাদীর] এ অর্থের সমর্থনে অন্যত্র এসেছে, “তারা যেমন প্রথমবারে তাতে ঈমান আনেনি তেমনি আমিও তাদের মনোভাবের ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করে দেব এবং তাদেরকে তাদের অবাধ্যতায় উদভ্রান্তের মত ঘুরে বেড়াতে দেব।” [সূরা আল-আন’আম ১১০] [সা'দী]

[২] সীমা অতিক্রমকারী লোক তাদেরকে বলে যারা ভুল করার পর আবার নিজের কথার বক্রতা, একগুঁয়েমী ও হঠকারীতার কারণে নিজের ভুলের ওপর অবিচল থাকে এবং যে কথা মেনে নিতে একবার অস্বীকার করেছে তাকে আর কোনো প্রকার উপদেশ, অনুরোধ-উপরোধ ও কোনো উন্নত থেকে উন্নত পর্যায়ের যুক্তি প্রদানের মাধ্যমে মেনে নিতে চায় না। এ ধরনের লোক যারা কুফরী ও মিথ্যাচারের মাধ্যমে সীমা অতিক্রম করে যায় তাদের ওপর শেষ পর্যন্ত আল্লাহর এমন লানত পড়ে যে, তাদের আর ঈমান নসীব হয় না। [কুরতুবী] তাদের আর কোনোদিন সঠিক পথে চলার সুযোগ হয় না। তাদের অন্তরে মোহর মেরে দেয়া হয়েছে, ফলে সেখানে কোনো কল্যাণ প্রবেশ করে না। এতে স্পষ্ট হলো যে, আল্লাহ তাদের উপর যুলুম করেন নি। বরং তারাই তাদের কাছে হক আসার পরে হককে প্রতিহত করে এবং প্রথমবার হকের সাথে মিথ্যারোপ করে তাদের নিজেদের উপর যুলুম করেছিল। [সা'দী]

التفاسير:

external-link copy
75 : 10

ثُمَّ بَعَثۡنَا مِنۢ بَعۡدِهِم مُّوسَىٰ وَهَٰرُونَ إِلَىٰ فِرۡعَوۡنَ وَمَلَإِيْهِۦ بِـَٔايَٰتِنَا فَٱسۡتَكۡبَرُواْ وَكَانُواْ قَوۡمٗا مُّجۡرِمِينَ

তারপর আমরা আমাদের নিদর্শনসহ মূসা ও হারূনকে ফির’আউন ও তার সভাষদদের কাছে পাঠাই। কিন্তু তারা অহংকার করে [১] এবং তারা ছিল অপরাধী সম্প্রদায় [২]। info

[১] অর্থাৎ তারা নিজেদের ক্ষমতার নেশায় মত্ত হয়ে হক গ্রহণ করতে অহংকার করেছিল। [কুরতুবী]

[২] অর্থাৎ মুশরিক সম্প্রদায়। [কুরতুবী]

التفاسير:

external-link copy
76 : 10

فَلَمَّا جَآءَهُمُ ٱلۡحَقُّ مِنۡ عِندِنَا قَالُوٓاْ إِنَّ هَٰذَا لَسِحۡرٞ مُّبِينٞ

অতঃপর যখন তাদের কাছে আমাদের নিকট থেকে সত্য আসল তখন তারা বলল, ‘এটা তো নিশ্চয়ই স্পষ্ট জাদু [১]।’ info

[১] অর্থাৎ মূসার বাণী শুনে তারা সেই একই কথা বলেছিল যা মক্কার কাফেররা বলেছিল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথা শুনে। কাফেররা বলেছিল, "এ ব্যক্তি তো পাক্কা জাদুকর।" [সূরা ইউনুস ২, অনুরূপ দেখুন, সূরা ছোয়াদ ৪] মূসা ও হারূন আলাইহিমাস সালামের দায়িত্ব তা-ই ছিল যা কুরআনের দৃষ্টিতে সকল নবীর নবুওয়াতের উদ্দেশ্য ছিল এবং সূরা নাযিআতে যে সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করে বলে দেয়া হয়েছে, “ফিরআউনের কাছে যান, কারণ সে সীমা অতিক্রম করে গেছে এবং তাকে বলেন, তুমি কি নিজেকে শুধরে নেবার জন্য তৈরী আছো? আমি তোমাকে তোমার রবের দিকে পথ দেখাবো তুমি কি তাঁকে ভয় করবে?" [১৭-১৯] কিন্তু ফির’আউন ও তার রাজ্যের প্রধানগণ এ দাওয়াত গ্রহণ করেনি।

التفاسير:

external-link copy
77 : 10

قَالَ مُوسَىٰٓ أَتَقُولُونَ لِلۡحَقِّ لَمَّا جَآءَكُمۡۖ أَسِحۡرٌ هَٰذَا وَلَا يُفۡلِحُ ٱلسَّٰحِرُونَ

মূসা বললেন, ‘সত্য যখন তোমাদের কাছে আসল তখন তা সম্পর্কে তোমরা এরূপ বলছ? এটা কি জাদু? অথচ জাদুকরেরা সফলকাম হয় না [১]।’ info

[১] অর্থাৎ তোমরা এসব গুণাবলি দেখে অবশ্যই বুঝতে পার যে আসলে এটা কি জাদু, নাকি জাদু নয়। তাছাড়া জাদুকররা দুনিয়া ও আখেরাতে কোথাও সফলকাম হয় না। সুতরাং তোমরা দেখো কার পরিণাম কেমন হয়, আর কে-ই বা সফল হয়। পরবর্তীতে তারা ঠিকই সেটা জানতে পেরেছিল এবং প্রত্যেকের কাছে এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, মূসা আলাইহিস সালামই সফলকাম। তিনি দুনিয়া ও আখেরাতে সবখানেই সফল। [সা’দী] এ সমগ্র বিষয় শুধু একটি বাক্যের মধ্যে গুটিয়ে নিয়ে বলা হয়েছে: “জাদুকর কোনো কল্যাণ প্রাপ্ত লোক হয় না।"

التفاسير:

external-link copy
78 : 10

قَالُوٓاْ أَجِئۡتَنَا لِتَلۡفِتَنَا عَمَّا وَجَدۡنَا عَلَيۡهِ ءَابَآءَنَا وَتَكُونَ لَكُمَا ٱلۡكِبۡرِيَآءُ فِي ٱلۡأَرۡضِ وَمَا نَحۡنُ لَكُمَا بِمُؤۡمِنِينَ

তারা বলল, ‘আমরা আমাদের পিতৃ পুরুষদেরকে যাতে পেয়েছি তুমি কি তা থেকে আমাদেকরকে বিচ্যুত করার জন্য আমাদের কাছে এসেছ এবং যাতে যমীনে তোমাদের দুজনের প্রতিপত্তি হয়, এজন্য? আমরা তোমাদের প্রতি ঈমান আনয়নকারী নই।’ info
التفاسير: