పవిత్ర ఖురాన్ యొక్క భావార్థాల అనువాదం - బెంగాలీ అనువాదం - అబూబకర్ జక్రియ

పేజీ నెంబరు: 109:106 close

external-link copy
14 : 5

وَمِنَ ٱلَّذِينَ قَالُوٓاْ إِنَّا نَصَٰرَىٰٓ أَخَذۡنَا مِيثَٰقَهُمۡ فَنَسُواْ حَظّٗا مِّمَّا ذُكِّرُواْ بِهِۦ فَأَغۡرَيۡنَا بَيۡنَهُمُ ٱلۡعَدَاوَةَ وَٱلۡبَغۡضَآءَ إِلَىٰ يَوۡمِ ٱلۡقِيَٰمَةِۚ وَسَوۡفَ يُنَبِّئُهُمُ ٱللَّهُ بِمَا كَانُواْ يَصۡنَعُونَ

আর যারা বলে, ‘আমরা নাসারা’, তাদেরও অঙ্গীকার আমরা গ্রহণ করেছিলাম; অতঃপর তাদেরকে যে উপদেশ দেয়া হয়েছিল তার একাংশ তারা ভুলে গিয়েছে। ফলে আমরা তাদের মধ্যে কিয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী শত্রুতা ও বিদ্বেষ জাগরুক রেখেছি [১]। আর তারা যা করত আল্লাহ অচিরেই তাদেরকে তা জানিয়ে দেবেন। info

[১] এ আয়াতে আল্লাহ তা’আলা নাসারাদের অঙ্গীকার ভঙ্গের সাজা বর্ণনা করে বলেছেন যে, তাদের পরস্পরের মধ্যে বিভেদ, বিদ্বেষ ও শক্রতা সঞ্চারিত করে দেয়া হয়েছে- যা কেয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। বর্তমানেও নাসারাদের মৌলিক বিশ্বাসের ক্ষেত্রে বড় মতানৈক্য, পরস্পর বিভেদ ও বিদ্বেষ সর্বজনবিদিত। নাসারাদের বিভিন্ন উপদলের মধ্যে যে সমস্ত বিভেদ তা বহুমাত্রিক। সেগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন কোনোভাবেই সম্ভব নয়। [ইবন কাসীর]

কাতাদা বলেন, ‘এ সম্প্রদায় যখন আল্লাহর কিতাব ছেড়ে দিল, ফরযসমূহ নষ্ট করল, হদসমূহ বাস্তবায়ণ বন্ধ করল, তাদের মধ্যে কিয়ামত পর্যন্ত শক্রতা ও বিদ্বেষ জাগরুক করে দেয়া হলো, এটা তাদেরই খারাপ কর্মফলের কারণে তাদের উপর আপতিত হয়েছে। যদি তারা আল্লাহর কিতাব ও তার নির্দেশের বাস্তবায়ন করত, তবে তারা এ ধরনের মতপার্থক্য ও বিদ্বেষে লিপ্ত হতো না’। [তাবারী] মুজাহিদ বলেন, এ আয়াতে যাদের মধ্যে শক্রতা ও বিদ্বেষ জাগরুক রাখার কথা বলা হয়েছে, তারা হচ্ছে ইয়াহুদী ও নাসারা সম্প্রদায়। [আততাফসীরুস সহীহ]

التفاسير:

external-link copy
15 : 5

يَٰٓأَهۡلَ ٱلۡكِتَٰبِ قَدۡ جَآءَكُمۡ رَسُولُنَا يُبَيِّنُ لَكُمۡ كَثِيرٗا مِّمَّا كُنتُمۡ تُخۡفُونَ مِنَ ٱلۡكِتَٰبِ وَيَعۡفُواْ عَن كَثِيرٖۚ قَدۡ جَآءَكُم مِّنَ ٱللَّهِ نُورٞ وَكِتَٰبٞ مُّبِينٞ

হে কিতাবীরা! আমাদের রাসূল তোমাদের নিকট এসেছেন [১], তোমরা কিতাবের যা গোপন করতে তিনি সে সবের অনেক কিছু তোমাদের নিকট প্রকাশ করছেন এবং অনেক কিছু ছেড়ে দিচ্ছেন। অবশ্যই আল্লাহর নিকট থেকে এক জ্যোতি ও স্পষ্ট কিতাব তোমাদের কাছে এসেছে [২]। info

[১] অর্থাৎ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি তাদের মধ্যকার মতভেদপূর্ণ বিষয়ে সঠিক পথ বলে দেবার পাশাপাশি তারা যে সমস্ত বিষয় গোপন করেছে সেগুলোর অনেকটাই প্রকাশ করে দেন। [ইবন কাসীর] ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, যে ব্যক্তি ‘রাজম’ তথা বিবাহিত ব্যভিচারীকে পাথর মেরে হত্যার কথা অস্বীকার করবে, সে কুরআনের সাথে এমনভাবে কুফরী করল যে সে তা বুঝতেই পারছে না। আল্লাহ্ তা’আলার বাণী, “হে কিতাবীরা আমাদের রাসূল তোমাদের নিকট এসেছেন, তোমরা কিতাবের যা গোপন করতে তিনি সে সবের অনেক কিছু তোমাদের নিকট প্রকাশ করছেন।” তারা যে সমস্ত জিনিস গোপন করেছিল, রজমের বিধান ছিল তার একটি। [মুস্তাদরাকে হাকিম ৪/৩৫৯]

[২] এ আয়াতে উল্লিখিত ‘নুর’ সম্পর্কে আলেমদের বিভিন্ন মন্তব্য রয়েছে। যা মূলত পরস্পর সম্পূরক, বিপরীত নয়। কারও কারও মতে, এখানে ‘নূর’ দ্বারা উদ্দেশ্য, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম। কারও কারও মতে, কিতাব বা কুরআন। বস্তুত রাসূল ও কিতাব একটি অপরটির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই রাসূল ও কিতাব উভয় ক্ষেত্রেই ‘নুর’ বিশেষণ ব্যবহার হয়। এখানে নূর দ্বারা উদ্দেশ্য, ইসলামের দিকে আহবানকারী রাসূল, ইসলামের বিধানসম্বলিত কিতাব, অথবা রাসূল ও কিতাব উভয়ই । আল্লাহ্ তা'আলা কুরআনের বিভিন্ন জায়গায় রাসূল ও কিতাব উভয়কে নূর বিশেষণে বিশেষিত করেছেন। যেমন সূরা আহযাবের ৪৫-৪৬ নং আয়াতে ‘নূর’ ধাতু থেকে উদগত কর্তাবাচক বিশেষ্য ‘মুনীর’ শব্দ দ্বারা রাসূলকে বিশেষিত করা হয়েছে। আবার একাধিক জায়গায় আল্লাহ্ তা’আলা তাঁর কিতাব কুরআনকে ‘নূর’ দ্বারা বিশেষিত করেছেন। যেমন, সূরা আশ-শূরা ৫২; সূরা আল-আ’রাফ ১৫৭; সূরা আত-তাগাবুন ৮; সূরা আন-নিসা ১৭৪৷

এসব জায়গায় ‘নূর’ দ্বারা আল্লাহ তা’আলা তাঁর অহী তথা শুধু কুরআনুল কারীমকে বুঝিয়েছেন। অন্যত্র অনুরূপভাবে অন্যান্য নবীদের উপর নাযিলকৃত কিতাবকেও তিনি ‘নুর’ আখ্যা দিয়েছেন। যেমন, সূরা আল-আন’আম ৯১; সূরা আল-মায়িদাহ ৪৪, ৪৬।

কুরআনের এসব আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, আসমান থেকে নাযিলকৃত আল্লাহর সকল কিতাবই ‘নূর’। লক্ষণীয় যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য যেরূপ ‘নুর’ শব্দের কর্তাবাচক শব্দ ‘মুনীর’ বিশেষণ ব্যবহার করা হয়েছে, অনুরূপ বিশেষণ আল্লাহ্ তা'আলা কুরআনের জন্য ব্যবহার করেছেন। যেমন, সূরা আলে-ইমরান ১৮৫।
এ থেকে বুঝা যায় যে, রাসূল, নাযিলকৃত অহী এবং সকল আসমানী কিতাব ‘নূর’; যা বান্দাদের প্রতি তাদের রবের পক্ষ থেকে আগমন করেছে, এর মাধ্যমে আল্লাহ তাকেই হিদায়াত করেন, যে তার সন্তুষ্টির অনুসরণ করে, অর্থাৎ তার মনোনীত দীনের আলোকে চলে। কুরআনের অন্যত্র এ ঘোষণা এসেছে, যেমন সূরা আল-মায়িদাহ ৩; সূরা আয-যুমার ২২; সূরা আল-আনআম ১২২৷
অতএব এ ‘নূর’ হচ্ছে অহীর নূর। এর মাধ্যমে বান্দা তার রবের ইবাদাত সম্পর্কে দিকনির্দেশনা লাভ করে। মানুষের সাথে সম্পর্কের নীতিমালা অর্জন করে। এ নূরই তার সঙ্গীতে পরিণত হয় এবং পথহারা অবস্থায় এ নুর দ্বারাই সে পথের সঠিক দিশা লাভ করে। মোদ্দাকথা: নূর অর্থ অহী, এ অহী যেহেতু রাসূলের উপর নাযিল হয়েছে, তাই কখনো তাকে নূর হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়েছে, কখনো কুরআনকে, কখনো তাওরাত ও ইঞ্জিলকে। অতএব আয়াতের অর্থ হচ্ছে, তোমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে অহী সম্বলিত রাসূল ও স্পষ্ট কিতাব আগমন করেছে।

التفاسير:

external-link copy
16 : 5

يَهۡدِي بِهِ ٱللَّهُ مَنِ ٱتَّبَعَ رِضۡوَٰنَهُۥ سُبُلَ ٱلسَّلَٰمِ وَيُخۡرِجُهُم مِّنَ ٱلظُّلُمَٰتِ إِلَى ٱلنُّورِ بِإِذۡنِهِۦ وَيَهۡدِيهِمۡ إِلَىٰ صِرَٰطٖ مُّسۡتَقِيمٖ

যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির অনুসরণ করে, এ দ্বারা তিনি তাদেরকে শান্তির পথে পারিচালিত করেন [১] এবং তাদেরকে নিজ অনুমতিক্রমে অন্ধকার হতে বের করে আলোর দিকে নিয়ে যান। আর তাদেরকে সরল পথের দিশা দেন। info

[১] সুদ্দী বলেন, শান্তির পথ হচ্ছে, আল্লাহর পথ, যা তিনি তাঁর বান্দাদের জন্য প্রবর্তন করেছেন এবং সেদিকে আহবান করেছেন। আর যা নিয়ে তিনি তাঁর রাসূলদেরকে পাঠিয়েছেন। সেটিই হচ্ছে, ইসলাম। কোনো মানুষ থেকে তিনি এটা ব্যতীত আর কোনো আমল গ্রহণ করবেন না। ইয়াহুদীবাদও নয়, খ্রিষ্টবাদও নয়, মাজুসীবাদও নয়। [তাবারী]

التفاسير:

external-link copy
17 : 5

لَّقَدۡ كَفَرَ ٱلَّذِينَ قَالُوٓاْ إِنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلۡمَسِيحُ ٱبۡنُ مَرۡيَمَۚ قُلۡ فَمَن يَمۡلِكُ مِنَ ٱللَّهِ شَيۡـًٔا إِنۡ أَرَادَ أَن يُهۡلِكَ ٱلۡمَسِيحَ ٱبۡنَ مَرۡيَمَ وَأُمَّهُۥ وَمَن فِي ٱلۡأَرۡضِ جَمِيعٗاۗ وَلِلَّهِ مُلۡكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَمَا بَيۡنَهُمَاۚ يَخۡلُقُ مَا يَشَآءُۚ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيۡءٖ قَدِيرٞ

যারা বলে, ‘নিশ্চয় মারইয়াম-তনয় মসীহই আল্লাহ’, তারা অবশ্যই কুফরী করেছে [১]। বলুন, ‘আল্লাহ যদি মারইয়াম-তনয় মসীহ, তাঁর মাতা এবং দুনিয়ার সকলকে ধ্বংস করতে ইচ্ছে করেন তবে তাঁকে বাঁধা দেবার শক্তি কার আছে?’ আর আসমানসমূহ ও যমীন এবং এ দুয়ের মধ্যে যা কিছু আছে তার সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই। তিনি যা ইচ্ছে সৃষ্টি করেন [২] এবং আল্লাহ সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান। info

[১] আলোচ্য আয়াতে নাসারাদের একটি উক্তির খণ্ডন করা হয়েছে- যা তাদের একদলের বিশ্বাসও ছিল। অর্থাৎ তাদের একদলের বিশ্বাস ছিল যে, ঈসা মসীহ হুবহু আল্লাহ। কিন্তু আয়াতে যে যুক্তি দ্বারা বিষয়টির খণ্ডন করা হয়েছে, তাতে নাসারাদের সব দলের একত্ববাদ বিরোধী ভ্রান্ত বিশ্বাসেরই খণ্ডন হয়ে যায়, তা মসীহ ‘আলাইহিস সালামের আল্লাহর সন্তান হওয়া সংক্রান্ত বিশ্বাসই হোক অথবা তিন ইলাহর অন্যতম ইলাহ হওয়ার বিশ্বাসই হোক। আল্লাহ তা’আলা বলছেন যে, যদি তিনি ঈসা ও তার মা মারইয়ামকে মারতে ইচ্ছা করেন, তবে কি এমন কেউ আছে যে তাদেরকে মৃত্যু থেকে বাঁচাতে পারে? তারা নিজেরাও সেটা করতে সক্ষম নয়। সুতরাং তারা কিভাবে ইলাহ হতে পারে? আল্লাহ তা'আলার সামনে মসীহ ‘আলাইহিস সালাম এতই অক্ষম যে, তিনি নিজেকে রক্ষা করতে পারেন না এবং যে জননীর খেদমত ও হেফাযত তার কাছে প্রাণের চেয়েও প্রিয়, সে জননীকেও রক্ষা করতে পারেন না। সুতরাং তিনিই কীভাবে ইলাহ হতে পারেন। আর তার মা যেহেতু মারা গেছেন সেহেতু কীভাবেই বা তিনি তিন ইলাহর অন্যতম ইলাহ বলে বিবেচিত হবেন? [তাফসীর মুয়াস্সার ও সা’দী]

[২] ‘তিনি যা ইচ্ছে সৃষ্টি করেন’ এ বাক্যে নাসারাদের পূর্বোক্ত ভ্রান্ত বিশ্বাসের কারণকে খণ্ডন করা হয়েছে। কেননা, মসীহকে আল্লাহ মনে করার আসল কারণ তাদের মতে এই ছিল যে, তিনি জগতের সাধারণ নিয়মের বিপরীতে পিতা ছাড়া শুধুমাত্র মায়ের গর্ভ থেকে জন্মগ্রহণ করেছেন। তিনি মানুষ হলে নিয়মানুযায়ী পিতা-মাতা উভয়ের মাধ্যমে জন্মগ্রহণ করতেন। আলোচ্য বাক্যে এর উত্তর দেয়া হয়েছে যে, আল্লাহ তা'আলা যাকে ইচ্ছা, যেভাবে ইচ্ছা সৃষ্টি করার পূর্ণ ক্ষমতা রাখেন। যেমন অন্যত্র বলেছেন যে, “ঈসার উদাহরণ তো আদমের মত।” [সূরা আলে-ইমরান ৫৯] এ আয়াতেও উক্ত সন্দেহের নিরসন করা হয়েছে। অর্থাৎ আল্লাহর সাধারণ নিয়মের বাইরে মসীহ ‘আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করা তার ইলাহ হওয়ার প্রমাণ হতে পারে না। লক্ষণীয় যে, আদমকে আল্লাহ তা’আলা পিতা ও মাতা উভয়ের মাধ্যম ছাড়াই সৃষ্টি করেছিলেন। সুতরাং আল্লাহ সবকিছুই করতে পারেন। তিনিই স্রষ্টা, রব ও উপাসনার যোগ্য; অন্য কেউ তার অংশীদার নয়। [সা’দী; মুয়াস্সার; ইবন কাসীর]

التفاسير: