ශුද්ධවූ අල් කුර්ආන් අර්ථ කථනය - බන්ගාලියානු පරිවර්තනය - අබූ බක්ර් සකරිය්යා

පිටු අංක:close

external-link copy
82 : 11

فَلَمَّا جَآءَ أَمۡرُنَا جَعَلۡنَا عَٰلِيَهَا سَافِلَهَا وَأَمۡطَرۡنَا عَلَيۡهَا حِجَارَةٗ مِّن سِجِّيلٖ مَّنضُودٖ

অতঃপর যখন আমাদের আদেশ আসল তখন আমরা জনপদকে উল্টে দিলাম এবং তাদের উপর ক্রমাগত বর্ষণ করলাম পোড়ামাটির পাথর, info
التفاسير:

external-link copy
83 : 11

مُّسَوَّمَةً عِندَ رَبِّكَۖ وَمَا هِيَ مِنَ ٱلظَّٰلِمِينَ بِبَعِيدٖ

যা আপনার রবের কাছে চিহ্নিত ছিল [১]। আর এটা যালিমদের থেকে দূরে নয় [২]। info

[১] উক্ত আযাবের ধরন সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে- যখন আযাবের হুকুম কার্যকরী করার সময় হল, তখন আমি তাদের বসতির উপরিভাগকে নীচে করে দিলাম এবং তাদের উপর অবিশ্রান্তভাবে এমন পাথর বর্ষণ করালাম, যার প্রত্যেকটি পাথর চিহ্নিত ছিল। অর্থাৎ আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রত্যেকটি পাথরকে কী ধ্বংসাত্মক কাজ করতে হবে এবং কোন পাথরটি কোন অপরাধীর উপর পড়বে তা পূর্ব থেকেই নির্ধারিত করে দেয়া হয়েছিল। [তাবারী; বাগভী; কুরতুবী; ইবন কাসীর]

[২] অর্থাৎ লূত আলাইহিস সালামের নাফরমান জাতির পরিণতি বর্ণনা করার পর দুনিয়ার অপরাপর জাতিকে সতর্ক করার জন্য বলা হয়েছে, পাথর বর্ষণের আযাব বর্তমান কালের যালেমদের থেকেও দূরে নয়। বরং কুরাইশ কাফেরদের জন্য ঘটনাস্থল ও ঘটনাকাল খুবই কাছে এবং অন্যান্য পাপিষ্ঠরাও যেন নিজেদেরকে এহেন আযাব হতে দূরে মনে না করে। আজ যারা যুলুমের পথে চলছে তারাও যেন এ আযাবকে নিজেদের থেকে দূরে না মনে করে। [ইবন কাসীর] লুতের সম্পপ্রদায়ের উপর যদি আযাব এসে থাকে তাহলে তাদের উপরও আসতে পারে। লুতের সম্প্রদায় আল্লাহর আযাব ঠেকাতে পারেনি, এরাও পারবে না। তাছাড়া রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীসে এসেছে, ‘তোমাদের মধ্যে যাদেরকে তোমরা লুতের সম্পপ্রদায়ের মত কাজ করতে পাবে, তাদের মধ্যে যারা তা করবে এবং যাদের সাথে তা করা হবে তাদের উভয়কে হত্যা করবে।’ [আবু দাউদ ৪৪৬২]

التفاسير:

external-link copy
84 : 11

۞ وَإِلَىٰ مَدۡيَنَ أَخَاهُمۡ شُعَيۡبٗاۚ قَالَ يَٰقَوۡمِ ٱعۡبُدُواْ ٱللَّهَ مَا لَكُم مِّنۡ إِلَٰهٍ غَيۡرُهُۥۖ وَلَا تَنقُصُواْ ٱلۡمِكۡيَالَ وَٱلۡمِيزَانَۖ إِنِّيٓ أَرَىٰكُم بِخَيۡرٖ وَإِنِّيٓ أَخَافُ عَلَيۡكُمۡ عَذَابَ يَوۡمٖ مُّحِيطٖ

আর মাদ্ইয়ানবাসীদের [১] কাছে তাদের ভাই শু’আইবকে পাঠিয়েছিলাম [২]। তিনি বলেছিলেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর, তিনি ছাড়া তোমাদের অন্য কোনো সত্য ইলাহ্ নেই, আর মাপে ও ওজনে কম করো না; নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে কল্যাণের মধ্যে দেখছি [৩], কিন্তু আমি তোমাদের উপর আশংকা করছি এক সর্বগ্রাসী দিনের শাস্তি। info

[১] আলোচ্য আয়াতসমূহে শু'আইব আলাইহিস সালাম ও তার কাওমের ঘটনাবলী বর্ণিত হয়েছে। তারা কুফরী ও শেরেকী ছাড়া ওজনে-পরিমাপে লোকদের ঠকাতো। শু'আইব আলাইহিস সালাম তাদেরকে ঈমানের দাওয়াত দিলেন এবং ওজনে কম-বেশী করতে নিষেধ করলেন। আল্লাহর আযাবের ভয় দেখালেন।কিন্তু তারা অবাধ্যতা ও না-ফরমানীর উপর অটল রইল। ফলে এক কঠিন আযাবে সমগ্র জাতি ধ্বংস হয়ে গেল।

[২] মাদইয়ান আসলে একটি শহরের নাম। বলা হয়ে থাকে, মাদইয়ান ইবন ইবরাহীম তার পত্তন করেছিলেন। [দেখুন, কুরতুবী] উক্ত শহরের অধিবাসীগণকে মাদইয়ানবাসী বলার পরিবর্তে শুধু "মাদইয়ান” বলা হত। আল্লাহ তা'আলার বিশিষ্ট নবী শু'আইব আলাইহিসসালাম উক্ত মাদইয়ান কওমের সম্ভান্ত লোক ছিলেন তাই তাকে “তাদের ভাই” বলা হয়েছে। [ইবন কাসীর] এখানে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, আল্লাহ তা'আলা বিশেষ অনুগ্রহ করে তাদের স্বজাতির এক ব্যক্তিকে তাদের কাছে নবী হিসেবে প্রেরণ করলেন, যেন তার সাথে জানাশোনা থাকার কারণে সহজেই তার হেদায়াত গ্রহণ করে ধন্য হতে পারে।

[৩] তোমাদের মধ্যে জীবন-জীবিকা ও রিযকের প্রাচুর্যতা দেখতে পাচ্ছি। তাই আমি ভয় পাচ্ছি যে, তোমরা যদি আল্লাহর হারামকৃত জিনিসের সীমালঙ্ঘন কর তাহলে তোমাদের এ নে’আমত আর অবশিষ্ট থাকবে না। তোমাদের থেকে তা ছিনিয়ে নেয়া হবে। [ইবন কাসীর]

التفاسير:

external-link copy
85 : 11

وَيَٰقَوۡمِ أَوۡفُواْ ٱلۡمِكۡيَالَ وَٱلۡمِيزَانَ بِٱلۡقِسۡطِۖ وَلَا تَبۡخَسُواْ ٱلنَّاسَ أَشۡيَآءَهُمۡ وَلَا تَعۡثَوۡاْ فِي ٱلۡأَرۡضِ مُفۡسِدِينَ

‘হে আমার সম্প্রদায় ! তোমরা ন্যায়সঙ্গত ভাবে মাপো ও ওজন করো, লোকদেরকে তাদের প্রাপ্য বস্তু কম দিও না এবং যমীনে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়িও না [১]। info

[১] এখানে শু'আইব আলাইহিসসালাম নিজ জাতিকে প্রথমে একত্ববাদের প্রতি আহবান জানালেন। কেননা তারা মুশরিক ছিল। কোনো কোনো মুফাসসির বলেন, তারা গাছপালার পুজা করত। এজন্যই মাদইয়ানবাসীকে আসহাবুল-আইকা বা জঙ্গলওয়ালা উপাধি দয়ো হয়েছে। আর কোনো কোনো মুফাসসিরের মতে তাদের বাসস্থানে গাছপালার অবিচ্ছিন্ন ছায়া বিরাজ করছিল বলে তাদেরকে "আসহাবুল আইকাহ" বলা হয়েছে। এহেন কুফরী ও শেরেকীর সাথে সাথে আরেকটি মারাত্মক দোষ ও জঘন্য অপরাধ ছিল যে, আদান-প্রদান ও ক্রয়-বিক্রয় কালে ওজন-পরিমাপে হের-ফের করে লোকের হক আত্মসাৎ করত। শু'আইব আলাইহিস সালাম তাদেরকে এরূপ করতে নিষেধ করলেন। এখানে বিশেষ প্রণিধানযোগ্য যে, কুফরী ও শেরেকীই সকল পাপের মূল। যে জাতি তাতে লিপ্ত, তাদেরকে প্রথমেই তাওহীদের দাওয়াত দেয়া হয়। সাধারণতঃ ঈমান আনয়নের পূর্বে আমল ও কায়-কারবারের প্রতি দৃষ্টি দেয়া হয় না। কুরআনে বর্ণিত পূর্ববতী নবীগণ ও তাদের জাতিসমূহের ঘটনাবলী এর প্রমাণ। তবে শুধু দুটি জাতি এমন ছিল, যাদের উপর আযাব নাযিল হওয়ার ব্যাপারে কুফরীর সাথে সাথে তাদের বদ-আমলেরও দখল ছিল। প্রথম, লূত আলাইহিসসালাম এর জাতি যাদের কাহিনী ইতিপূর্বে বর্ণিত হয়েছে। দ্বিতীয়, শু'আইব আলাইহিসসালামের জাতি যাদের উপর আযাব নাযিল হওয়ার জন্য কুফরী ও মাপে কম দেয়াকে কারণ হিসাবে নির্দেশ করা হয়েছে। এতে করে বুঝা যায় যে, পুংমৈথুন ও মাপে কম দেয়া আল্লাহ তা'আলার কাছে সবচেয়ে জঘন্য ও মারাত্মক অপরাধ। কারণ, তা এমন দুটি কাজ যার ফলে সমগ্র মানব জাতির চরম সর্বনাশ সাধিত হয় এবং সারা পৃথিবীতে বিশৃংখলা বিপর্যয় সৃষ্টি হয়।

التفاسير:

external-link copy
86 : 11

بَقِيَّتُ ٱللَّهِ خَيۡرٞ لَّكُمۡ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِينَۚ وَمَآ أَنَا۠ عَلَيۡكُم بِحَفِيظٖ

‘যদি তোমরা মুমিন হও তবে আল্লাহ্‌ অনুমোদিত যা বাকী থাকবে তা তোমাদের জন্য উত্তম; আর আমি তোমাদের তত্ত্বাবধায়ক নই [১]।’ info

[১] অর্থাৎ ওজন-পরিমাপে হের-ফের করার হীন মানসিকতা দুর করার জন্য শু'আইব আলাইহিসসালাম প্রথমে তার জাতিকে নবীসুলভ স্নেহ ও দরদের সাথে বললেন, বর্তমানে আমি তোমাদের অবস্থা খুব ভাল ও স্বচ্ছল দেখছি। তোমাদের রিযক ও জীবন-জীবিকায় রয়েছে প্রাচুর্য। [ইবন কাসীর] হাসান বসরী বলেন, তাদের জিনিসপত্রের দাম ছিল খুব সস্তা। [কুরতুবী] সুতরাং প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করার মত কোনো কারণ দেখি না। তাই আল্লাহ তা'আলার এ অনুগ্রহে শোকর আদায় করার জন্য হলেও তোমাদের পক্ষে তার কোনো সৃষ্ট জীবকে ঠকানো উচিত নয়। তোমরা যদি আমার কথা না শোন, আমার নিষেধ অমান্য কর, তাহলে আমার ভয় হয় যে, আল্লাহর আযাব তোমাদেরকে ঘিরে ফেলবে। এখানে আখেরাতের আযাব বুঝানো হয়েছে, দুনিয়ার আযাবও হতে পারে, আবার দুনিয়ার আযাব বিভিন্ন প্রকারও হতে পারে। তন্মধ্যে এক আযাব হচ্ছে, তোমাদের স্বচ্ছলতা খতম হয়ে যাবে। [ইবন কাসীর] তোমরা অভাবগ্রস্ত ও দুর্ভিক্ষ কবলিত হবে। তোমাদের জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাবে। [কুরতুবী]

তিনি আরো বললেন, মানুষের পাওনা ঠিকমত ওজন করে পুরোপুরি দিয়ে দেয়ার পর যে লভ্যাংশ উদ্ধৃত্ত থাকে, তোমাদের জন্য তাই উত্তম। [তাবারী] পরিমাণে স্বল্প হলেও আল্লাহ তা'আলা তার মধ্যে বরকত দান করবেন, যদি তোমরা আমার কথা মান্য কর। আর যদি অমান্য কর, তবে মনে রেখ তোমাদের উপর কোনো আযাব অবতীর্ণ হলে তা থেকে তোমাদের রক্ষা করার দায়িত্ব আমার নয়। তোমাদের উপর আমার কোনো জোর নেই। আমি তো শুধু একজন কল্যাণকামী উপদেষ্টা মাত্র। বড় জোর আমি তোমাদের বুঝাতে পারি। তারপর তোমরা চাইলে মানতে পারো আবার নাও মানতে পারো। আমার কাছে জবাবদিহি করার ভয় করা বা না করার প্রশ্ন নয়। বরং আসল প্রশ্ন হচ্ছে আল্লাহর সামনে জবাবদিহি করা। [ইবন কাসীর] আল্লাহর কিছু ভয় যদি তোমাদের মনে থেকে থাকে তাহলে তোমরা যা কিছু করছে তা থেকে বিরত থাকো। এভাবে তিনি তার সুললিত বর্ণনা ও অপূর্ব বাগীতার মাধ্যমে নিজ জাতিকে বোঝানো এবং সৎপথে ফিরিয়ে আনার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছেন।

التفاسير:

external-link copy
87 : 11

قَالُواْ يَٰشُعَيۡبُ أَصَلَوٰتُكَ تَأۡمُرُكَ أَن نَّتۡرُكَ مَا يَعۡبُدُ ءَابَآؤُنَآ أَوۡ أَن نَّفۡعَلَ فِيٓ أَمۡوَٰلِنَا مَا نَشَٰٓؤُاْۖ إِنَّكَ لَأَنتَ ٱلۡحَلِيمُ ٱلرَّشِيدُ

তারা বলল, ‘হে শু’আইব ! তোমার সালাত কি তোমাকে নির্দেশ দেয় যে, আমাদের পিতৃ-পুরুষেরা যারা ‘ইবাদত করত আমাদেরকে তা বর্জন করতে হবে অথবা আমরা আমাদের ধন-সম্পদ সম্পর্কে যা করি তাও [১] ? তুমি তো বেশ সহিষ্ণু, সুবোধ !’ info

[১] এত কিছু শোনার পরেও তার কওমের লোকেরা পূর্ববতী বর্বর পাপিষ্ঠদের ন্যায় একই জবাব দিল। তারা নবীর আহবানকে প্রত্যাখ্যান করে আল্লাহর নবীকে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করে বলল: আপনার সালাত কি আপনাকে শিখায় যে, আমরা আমাদের ঐসব উপাস্যের পুজা ছেড়ে দেই, আমাদের পূর্বপুরুষেরা যার পুজা করে আসছে। আর আমাদের ধন-সম্পদকে নিজেদের ইচ্ছামত ব্যবহার করার অধিকারী না থাকি? কোনটা হালাল, কোনটা হারাম তা আপনার কাছে জিজ্ঞেস করে করে সব কাজ করতে হবে? শু'আইব আলাইহিস সালাম সম্পর্কে সারাদেশে প্রসিদ্ধ ছিল যে, তিনি অধিকাংশ সময় সালাত ও নফল এবাদতে মগ্ন থাকেন। [কুরতুবী] তাই তারা তার মূল্যবান নীতি বাক্যসমূহকে বিদ্রুপ করে বলতো- আপনার সালাত কি আপনাকে এসব কথাবার্তা শিক্ষা দিচ্ছে? হাসান বসরী বলেন, অবশ্যই তার সালাত তাকে আল্লাহ্‌ তা'আলা ব্যতীত অন্যের ইবাদত করতে নিষেধ করছে। [ইবন কাসীর] তাদের এসব মন্তব্য দ্বারা বুঝা যায় যে, এরা দীনকে শুধু কতিপয় আচার-আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ মনে করতো। ব্যবহারিক ক্ষেত্রে ধর্মকে কোনো দখল দিত না। তারা মনে করত, প্রত্যেকে নিজ নিজ ধন-সম্পদ যেমন খুশী তেমন ভোগ দখল করতে পারে, এ ক্ষেত্রে কোনো বিধি-নিষেধ আরোপ করা ধর্মের কাজ নয়। [মুহাম্মাদ আল-মাক্কী, আত- তাইসীর ফী আহাদীসিত তাফসীর ৩/১৩৯] সুফিয়ান আস-সাওরী বলেন, তারা এটা বলেছিল যাকাত দেয়া থেকে বিরত থাকতে। [ইবন কাসীর]

এ থেকে একথাও আন্দাজ করা যেতে পারে যে, জীবনকে ধর্মীয় ও পার্থিব এ দু’ভাগে ভাগ করার চিন্তা আজকের কোনো নতুন চিন্তা নয় বরং আজ থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর আগে শু'আইব আলাইহিস সালামের সম্প্রদায়ও এ বিভক্তির উপর ঠিক তেমনিই জোর দিয়েছিল যেমন আজকের যুগে পাশ্চাত্যবাসীরা এবং তাদের প্রাচ্যদেশীয় শিষ্যবৃন্দ জোর দিচ্ছেন।

التفاسير:

external-link copy
88 : 11

قَالَ يَٰقَوۡمِ أَرَءَيۡتُمۡ إِن كُنتُ عَلَىٰ بَيِّنَةٖ مِّن رَّبِّي وَرَزَقَنِي مِنۡهُ رِزۡقًا حَسَنٗاۚ وَمَآ أُرِيدُ أَنۡ أُخَالِفَكُمۡ إِلَىٰ مَآ أَنۡهَىٰكُمۡ عَنۡهُۚ إِنۡ أُرِيدُ إِلَّا ٱلۡإِصۡلَٰحَ مَا ٱسۡتَطَعۡتُۚ وَمَا تَوۡفِيقِيٓ إِلَّا بِٱللَّهِۚ عَلَيۡهِ تَوَكَّلۡتُ وَإِلَيۡهِ أُنِيبُ

তিনি বললেন, ‘হে আমার সম্প্রদায় ! তোমরা ভেবে দেখেছ কি, আমি যদি আমার রব প্রেরিত স্পষ্ট প্রমাণে প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকি এবং তিনি যদি তাঁর কাছ থেকে আমাকে উৎকৃষ্ট রিযক [১] দান করে থাকেন (তবে কি করে আমি আমার কর্তব্য হতে বিরত থাকব?) আর আমি তোমাদেরকে যা নিষেধ করি আমি নিজে তার বিপরীত করতে ইচ্ছে করি না [২]। আমি তো আমার সাধ্যমত সংস্কারই করতে চাই। আমার কার্যসাধন তো আল্লাহরই সাহায্যে; আমি তাঁরই উপর নির্ভর করি এবং তাঁরই অভিমুখী। info

[১] রিযক শব্দটি এখানে দ্বিবিধ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এর একটি অর্থ হচ্ছে সত্য-সঠিক জ্ঞান, যা আল্লাহর পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে, আর দ্বিতীয় অর্থ হচ্ছে এ শব্দটি থেকে সাধারণত যে অর্থ বুঝা যায় সেটি অর্থাৎ আল্লাহ তাঁর বান্দাদেরকে জীবন-যাপন করার জন্য যে জীবন সামগ্ৰী দান করে থাকেন। প্রথম অর্থটির প্রেক্ষিতে এর অর্থ হচ্ছে নবুওয়াত ও রিসালত। [ইবন কাসীর] আর দ্বিতীয় অর্থের প্রেক্ষিতে এর অর্থ হবে, হালাল রিযক। [ইবন কাসীর] অর্থাৎ শু'আইব আলাইহিস সালাম বলছেন যে, আমার আল্লাহ যদি আমাকে হালাল রিযিক দিয়ে থাকেন তাহলে তোমাদের নিন্দাবাদের কারণে এ অনুগ্রহ কি করে বিগ্রহে পরিণত হবে? আল্লাহ যখন আমার প্রতি মেহেরবানী করেছেন তখন তোমাদের ভ্রষ্টতা ও হারাম খাওয়াকে আমি সত্য ও হালাল গণ্য করে তাঁর প্রতি অকৃতজ্ঞ হই কেমন করে?

[২] অর্থাৎ একথা থেকেই তোমরা আমার সত্যতা আন্দাজ করে নিতে পারো যে, অন্যদের আমি যা কিছু বলি আমি নিজেও তা করি। এমন নয় যে, তোমাদেরকে যা থেকে নিষেধ করছি আমি নিজে তার বিরোধিতা করে তা গোপনে করে যাচ্ছি। [ইবন কাসীর] অর্থাৎ যদি আমি তোমাদের আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো ইলাহর পূজা বেদীতে যেতে নিষেধ করতাম এবং নিজে কোনো বেদীর সেবক হয়ে বসতাম, তাহলে নিঃসন্দেহে তোমরা আমার কথার বাইরে চলার মত দলীল-প্রমাণাদি পেয়ে যেতে। যদি আমি তোমাদের হারাম জিনিস খেতে নিষেধ করতাম এবং নিজের কারবারে বেঈমানী করতে থাকতাম তাহলে তোমরা অবশ্যি এ সন্দেহ পোষণ করতে পারতে যে, আমি নিজের সুনাম প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ঈমান্দারীর দাবী করছি। কিন্তু তোমরা দেখছো, যেসব অসৎকাজ থেকে আমি তোমাদের নিষেধ করছি। আমি নিজেও সেগুলো থেকে দূরে থাকছি। যেসব কলংক থেকে আমি তোমাদের মুক্ত দেখতে চাচ্ছি আমার নিজের জীবনও তা থেকে মুক্ত। তোমাদের আমি যে পথের দিকে আহবান জানাচ্ছি আমার নিজের জন্যও আমি সেই পথটিই পছন্দ করেছি। এসব জিনিস একথা প্রমাণ করে যে, আমি যে দাওয়াত দিয়ে যাচ্ছি সে ব্যাপারে আমি সত্যবাদী ও একনিষ্ঠ।

التفاسير: