Firo maanaaji al-quraan tedduɗo oo - Eggo maanaaji Kur'aana e haala Bengali - Abu Bakar Jakariya

Tonngoode hello ngoo: 18:2 close

external-link copy
120 : 2

وَلَن تَرۡضَىٰ عَنكَ ٱلۡيَهُودُ وَلَا ٱلنَّصَٰرَىٰ حَتَّىٰ تَتَّبِعَ مِلَّتَهُمۡۗ قُلۡ إِنَّ هُدَى ٱللَّهِ هُوَ ٱلۡهُدَىٰۗ وَلَئِنِ ٱتَّبَعۡتَ أَهۡوَآءَهُم بَعۡدَ ٱلَّذِي جَآءَكَ مِنَ ٱلۡعِلۡمِ مَا لَكَ مِنَ ٱللَّهِ مِن وَلِيّٖ وَلَا نَصِيرٍ

আর ইয়াহুদী ও নাসারারা আপনার প্রতি কখনো সন্তুষ্ট হবে না, যতক্ষণ না আপনি তাদের মিল্লাতের অনুসরণ করেন। বলুন নিশ্চয় আল্লাহ্‌র ‘হিদায়াত’ই প্রকৃত ‘হিদায়াত’। আর আপনার কাছে জ্ঞান আসার পরও যদি আপনি তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করেন, তবে আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে আপনার কোনো অভিভাবক থাকবে না এবং থাকবে না কোনো সাহায্যকারীও। info
التفاسير:

external-link copy
121 : 2

ٱلَّذِينَ ءَاتَيۡنَٰهُمُ ٱلۡكِتَٰبَ يَتۡلُونَهُۥ حَقَّ تِلَاوَتِهِۦٓ أُوْلَٰٓئِكَ يُؤۡمِنُونَ بِهِۦۗ وَمَن يَكۡفُرۡ بِهِۦ فَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡخَٰسِرُونَ

যাদেরকে আমরা কিতাব দিয়েছি [১], তাদের মধ্যে যারা যথাযথভাবে তা তিলাওয়াত করে [২], তারা তাতে ঈমান আনে। আর যারা তার সাথে কুফরী করে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত। info

[১] কাতাদাহ বলেন, এখানে ইয়াহুদী ও নাসারাদের বুঝানো হয়েছে। পক্ষান্তরে অন্য বর্ণনায় এসেছে যে, এর দ্বারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীদের বুঝানো হয়েছে। [ইবন কাসীর]

[২] যথাযথভাবে তিলাওয়াতের অর্থ, তিলাওয়াতের হক আদায় করা। উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, এর অর্থ যখন জান্নাতের বর্ণনা আসবে তখন আল্লাহ্‌ তা'আলার কাছে জান্নাত চাওয়া। আর জাহান্নামের বর্ণনা আসলে জাহান্নাম থেকে নিস্কৃতি চাওয়া। ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, এর অর্থ, এগুলোর হালালকে হালাল হিসেবে নেয়া। আর হারামকে হারাম হিসেবে গ্রহণ করা। যেভাবে নাযিল হয়েছে সেভাবে পড়া। সেগুলোর কোনো অংশকে বিকৃত না করা এবং সঠিক ব্যাখ্যার বিপরীতে কোনো বাজে ব্যাখ্যা উপস্থাপন না করা। মোটকথা, আল্লাহ্‌র আয়াতকে পরিপূর্ণভাবে অনুসরণ করাই এর যথাযথ তেলাওয়াত বলে বিবেচিত হবে। [ইবন কাসীর]

যথাযথ তেলাওয়াতের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর ঈমান আনা এবং তার যাবতীয় আদেশ নিষেধ বিনা বাক্যব্যয়ে মেনে নেয়া। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যার হাতে আমার প্রাণ, তার শপথ করে বলছি, ইয়াহুদী ও নাসারাদের যে কেউ আমার কথা শোনার পর আমার উপর ঈমান আনবে না, সে অবশ্যই জাহান্নামে যাবে।” [মুসলিম ১১৫৩]

التفاسير:

external-link copy
122 : 2

يَٰبَنِيٓ إِسۡرَٰٓءِيلَ ٱذۡكُرُواْ نِعۡمَتِيَ ٱلَّتِيٓ أَنۡعَمۡتُ عَلَيۡكُمۡ وَأَنِّي فَضَّلۡتُكُمۡ عَلَى ٱلۡعَٰلَمِينَ

হে ইসরাঈল-বংশধররা ! আমার সে নিয়ামতের কথা স্মরণ কর, যা আমি তোমাদেরকে দিয়েছি। আর নিশ্চয় আমি তোমাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি (তৎকালীন) সৃষ্টিকুলের সবার উপর। info
التفاسير:

external-link copy
123 : 2

وَٱتَّقُواْ يَوۡمٗا لَّا تَجۡزِي نَفۡسٌ عَن نَّفۡسٖ شَيۡـٔٗا وَلَا يُقۡبَلُ مِنۡهَا عَدۡلٞ وَلَا تَنفَعُهَا شَفَٰعَةٞ وَلَا هُمۡ يُنصَرُونَ

আর তোমরা সেদিনের তাকওয়া অবলম্বন কর যেদিন কোনো সত্তা অপর কোনো সত্তার কোনো কাজে আসবে না। কারো কাছ থেকে কোনো বিনিময় গ্রহণ করা হবে না এবং কোনো সুপারিশ কারো পক্ষে লাভজনক হবে না। আর তারা সাহায্যপ্রাপ্তও হবে না। info
التفاسير:

external-link copy
124 : 2

۞ وَإِذِ ٱبۡتَلَىٰٓ إِبۡرَٰهِـۧمَ رَبُّهُۥ بِكَلِمَٰتٖ فَأَتَمَّهُنَّۖ قَالَ إِنِّي جَاعِلُكَ لِلنَّاسِ إِمَامٗاۖ قَالَ وَمِن ذُرِّيَّتِيۖ قَالَ لَا يَنَالُ عَهۡدِي ٱلظَّٰلِمِينَ

আর স্মরণ করুন, যখন ইবরাহীমকে তাঁর রব কয়েকটি কথা দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন [১], অতঃপর তিনি সেগুলো পূর্ণ করেছিলেন। আল্লাহ্‌ বললেন, ‘নিশ্চয় আমি আপনাকে মানুষের ইমাম বানাবো’ [২]। তিনি বললেন, ‘আমার বংশধরদের মধ্য থেকেও?’ (আল্লাহ্‌) বললেন, আমার প্রতিশ্রুতি যালিমদেরকে পাবে না [৩]। info

[১] যে যে বিষয়ে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে সে সম্পর্কে কুরআনে শুধু (كَلِمَات) (বাক্যসমূহ) শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। এর ব্যাখ্যা প্রসংগে সাহাবী ও তাবেয়ীদের বিভিন্ন উক্তি বর্ণিত আছে। কেউ আল্লাহ্‌র বিধানসমূহের মধ্য থেকে দশটি, কেউ ত্রিশটি এবং কেউ কম-বেশী অন্য বিষয় উল্লেখ করেছেন। বাস্তব ক্ষেত্রে এতে কোনো বিরোধ নেই, বরং সবগুলোই ছিল ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালামের পরীক্ষার বিষয়বস্তু। প্রখ্যাত তাফসীরকারক ইবন-জরীর ও ইবন কাসীরের অভিমত তাই। এ ধরনের পরীক্ষার বিষয়বস্তুর মধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই, আল্লাহ্‌ তা'আলার ইচ্ছা ছিল ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালামকে স্বীয় বন্ধুত্বের বিশেষ মুল্যবান পোষাক উপহার দেয়া। তাই তাকে বিভিন্ন রকমের কঠোর পরীক্ষার সম্মুখীন করা হয়। সমগ্র জাতি, এমনকি তার আপন পরিবারের সবাই মূর্তি পূজায় লিপ্ত ছিল। সবার বিশ্বাস ও রীতি-নীতির বিপরীত একটি সনাতন দীন তাকে দেয়া হয়। জাতিকে এ দীনের দিকে আহবান জানানোর গুরুদায়িত্ব তার কাধে অর্পণ করা হয়। তিনি নবীসুলভ দৃঢ়তা ও সাহসিকতার মাধ্যমে নিৰ্ভয়ে জাতিকে এক আল্লাহ্‌র দিকে আহবান জানান। বিভিন্ন পন্থায় তিনি মূর্তিপূজার নিন্দা ও কুৎসা প্রচার করেন। প্রকৃতপক্ষে কার্যক্ষেত্রে তিনি মূর্তিসমূহের বিরুদ্ধে জিহাদ করেন। ফলে সমগ্র জাতি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে উদ্যত হয়। বাদশাহ নমরূদ ও তার পরিবারবর্গ তাকে অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার সিদ্ধান্ত নেয়। আল্লাহ্‌র খলীল প্রভুর সন্তুষ্টির জন্য এসব বিপদাপদ সত্ত্বেও হাসিমুখে নিজেকে আগুনে নিক্ষেপের জন্য পেশ করেন। অতঃপর আল্লাহ্‌ তা'আলা স্বীয় বন্ধুকে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে দেখে আগুনকে নির্দেশ প্রদান করলেন, ‘হে আগুন! ইবরাহীমের উপর সুশীতল ও নিরাপত্তার কারণ হয়ে যাও।” [সূরা আল-আম্বিয়া: ৬৯]

এ পরীক্ষা শেষ হলে জন্মভূমি ত্যাগ করে সিরিয়ায় হিজরত করার পর দ্বিতীয় পরীক্ষা নেয়া হয়। ইবরাহীম ‘আলাইহিস্‌ সালাম আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি লাভের আশায় স্বগোত্র জন্মভূমিকেও হাসিমুখে ত্যাগ করে পরিবার-পরিজনসহ সিরিয়ায় হিজরত করলেন। সিরিয়ায় অবস্থান শুরু করতেই নির্দেশ আসল, স্ত্রী হাজেরা ও তার দুগ্ধপোষ্য শিশু ইসমাঈল ‘আলাইহিস সালামকে সংগে নিয়ে এখান থেকেও স্থানান্তরে গমন করুন। [ইবন কাসীর] জিবরীল ‘আলাইহিস সালাম আসলেন এবং তাদের সাথে নিয়ে রওয়ানা হলেন। চলতে চলতে যখন শুস্ক পাহাড় ও উত্তপ্ত বালুকাময় প্রান্তর এসে গেল (যেখানে ভবিষ্যতে বায়তুল্লাহ নিৰ্মাণ ও মক্কা নগরী আবাদ করা লক্ষ্য ছিল), তখন সেখানেই তাদেরকে থামিয়ে দেয়া হল। আল্লাহ্‌র বন্ধু তার রবের ভালবাসায় এ জনশূন্য তৃণলতাহীন প্রান্তরেই তাদের থাকতে বললেন। কিন্তু পরীক্ষার এখানেই শেষ হলো না। অতঃপর ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম নির্দেশ পেলেন যে, স্ত্রী হাজেরা ও শিশুকে এখানে রেখে নিজে সিরিয়ায় ফিরে যান। আল্লাহ্‌র বন্ধু নির্দেশ পাওয়া মাত্রই তা পালন করতে তৎপর হলেন এবং সিরিয়ার দিকে রওয়ানা হয়ে গেলেন। আল্লাহ্‌র নির্দেশ মোতাবেক আমি চলে যাচ্ছি - স্ত্রীকে একটুকু কথা বলে যাওয়ার দেরীও তিনি সহ্য করতে পারলেন না। হাজেরা তাকে চলে যেতে দেখে বললেন, ‘আপনি কি আল্লাহ্‌র কোনো নির্দেশ পেয়েছেন?’ ইবারাহীম ‘আলাইহিস সালাম বললেন, ‘হ্যা’। আল্লাহ্‌র নির্দেশের কথা জানতে পেরে হাজেরা বললেন, ‘যান, যে প্রভূ আপনাকে চলে যেতে বলেছেন, তিনি আমাদের ধ্বংস হতে দেবেন না।’ [বুখারী ৩৩৬৪]

অতঃপর হাজেরা দুগ্ধপোষ্য শিশুকে নিয়ে জন-মানবহীন প্রান্তরে কালাতিপাত করতে থাকেন। সাথের সংরক্ষিত পানি ফুরিয়ে যাওয়ায় এক সময় দারুন পিপাসা তাকে পানির খোঁজে বের হতে বাধ্য করল। তিনি শিশুকে উন্মুক্ত প্রান্তরে রেখে সাফা’ ও ‘মারওয়া’ পাহাড়ে বার বার উঠা-নামা করতে লাগলেন। কিন্তু কোথাও পানির চিহ্নমাত্র দেখলেন না এবং এমন কোনো মানুষও দৃষ্টিগোচর হলো না, যার কাছ থেকে কিছু তথ্য জানতে পারেন। সাতবার ছুটোছুটি করে তিনি নিরাশ হয়ে শিশুর কাছে ফিরে এলেন। এ ঘটনাকে স্মরণীয় করার উদ্দেশ্যেই সাফা ও মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের মাঝখানে সাতবার দৌড়ানো কেয়ামত পর্যন্ত ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য হজের বিধি-বিধানে অত্যাবশ্যকীয় করা হয়েছে। হাজেরা যখন নিরাশ হয়ে শিশুর কাছে ফিরে এলেন, তখন আল্লাহ্‌র রহমত নাযিল হল। জিবরাঈল ‘আলাইহিস সালাম আগমন করলেন এবং শুস্ক মরুভূমিতে পানির একটি ঝর্ণাধারা বইয়ে দিলেন। [বুখারী ৩৩৬৫]

বর্তমানে এ ধারার নামই যমযম। পানির সন্ধান পেয়ে প্রথমে জীব-জন্তু আগমন করল। জীব-জন্তু দেখে মানুষ এসে সেখানে আস্তানা গাড়ল। এভাবে মক্কায় জনপদের ভিত্তি রচিত হয়ে গেল। জীবন ধারণের প্রয়োজনীয় কিছু আসবাব পত্ৰও সংগৃহীত হল।

ইসমাঈল ‘আলাইহিস সালাম নামে খ্যাত এই সদ্যজাত শিশু লালিত-পালিত হয়ে কাজ-কর্মের উপযুক্ত হয়ে গেল। ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম আল্লাহ্‌র ইংগিতে মাঝে মাঝে এসে স্ত্রী হাজেরা ও শিশুকে দেখে যেতেন। এ সময় আল্লাহ্‌ তা'আলা স্বীয় বন্ধুর তৃতীয় পরীক্ষা নিতে চাইলেন। বালক ইসমাঈল অসহায় ও দীন-হীন অবস্থায় বড় হয়েছিলেন এবং পিতার স্নেহ-বাৎসল্য থেকেও বঞ্চিত ছিলেন। কুরআনে বলা হয়েছে: “বালক যখন পিতার কাজে কিছু সাহায্য করার যোগ্য হয়ে উঠল, তখন ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম তাকে বললেন, হে বৎস! আমি স্বপ্নে তোমাকে জবাই করতে দেখেছি। এখন বল, তোমার কি অভিপ্রায়? পিতৃভক্ত বালক বলল, পিতা! আপনি যে আদেশ পেয়েছেন, তা পালন করুন। আপনি আমাকেও ইনশাআল্লাহ্‌ এ ব্যাপারে ধৈর্যশীল পাবেন।” [সূরা আস-সাফফাত: ১০২]

এর পরবর্তী ঘটনা সবার জানা আছে যে, ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম পুত্রকে জবাই করার উদ্দেশ্যে মিনা প্রান্তরে নিয়ে গেলেন। অতঃপর আল্লাহ্‌র আদেশ পালনে নিজের পক্ষ থেকে যা করণীয় ছিল, তা পুরোপুরিই সম্পন্ন করলেন। ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম যখন এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন, তখন আল্লাহ্‌ তা'আলা জান্নাত থেকে এর পরিপূরক নাযিল করে তা কুরবানী করার আদেশ দিলেন। এই রীতিটিই পরে ভবিষ্যতের জন্য একটি চিরন্তন রীতিতে পরিণতি লাভ করে। [তাফসীরে ইবন কাসীর]

এগুলো ছিল বড়ই কঠিন পরীক্ষা, যার সম্মুখীন খলীলুল্লাহ ‘আলাইহিস সালামকে করা হয়। এর সাথে সাথেই আরও অনেকগুলো কাজ এবং বিধিবিধানের বাধ্যবাধকতাও তার উপর আরোপ করা হল। তন্মধ্যে দশটি কাজ 'খাসায়েলে ফিতরাত’ বা প্রকৃতিসুলভ অনুষ্ঠান নামে অভিহিত। এগুলো হলো শারীরিক পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কিত, ভবিষ্যত উম্মতের জন্যও এগুলো স্থায়ী বিধি-বিধানে পরিণত হয়েছে। সর্বশেষ নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামও তার উম্মতকে এসব বিধি-বিধান পালনের জোর তাকিদ দিয়েছেন। আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, সমস্ত ইসলাম ত্রিশটি অংশে সীমাবদ্ধ। তন্মধ্যে দশটি সূরা আল-বারাআতে, দশটি সূরা আল-মুমিনুনে এবং দশটি সূরা আল-আহ্‌যাবে বর্ণিত হয়েছে। [ইবন কাসীর] ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম এগুলো পূর্ণরূপে পালন করেছেন এবং সব পরীক্ষায়ই উত্তীর্ণ হয়েছেন। আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমার উপরোদ্ধৃত উক্তির দ্বারা বুঝা গেল যে, মুসলিমদের জন্য যেসব জ্ঞান এবং কর্মগত ও নৈতিক গুণ অর্জন করা দরকার, তার সবই এ তিনটি সূরার কয়েকটি আয়াতে সন্নিবেশিত হয়েছে। এগুলোই কুরআনে উল্লেখিত (كَلِمَات) যেসব বিষয়ে খলীলুল্লাহ্ ‘আলাইহিস সালামের পরীক্ষা নেয়া হয়েছে বলে বিভিন্ন বর্ণনায় এসেছে।

[২] এ আয়াত দ্বারা একদিকে বুঝা গেল যে, ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালামকে সাফল্যের প্রতিদানে মাবনসমাজের নেতৃত্ব দেয়া হয়েছে, অপরদিকে মানব সমাজের নেতা হওয়ার জন্য যে পরীক্ষা দরকার, তা পার্থিব পাঠশালা বা বিদ্যালয়ের পরীক্ষার অনুরূপ নয়। পার্থিব পাঠশালাসমূহের পরীক্ষায় কতিপয় বিষয়ে তথ্যানুসন্ধান ও চুলচেরা বিশ্লেষণকেই সাফল্যের মাপকাঠি বিবেচনা করা হয়। কিন্তু নেতৃত্ব লাভের পরীক্ষায় সূরা আল-বারাআত বা আত-তাওবার ১১২ নং আয়াত, সূরা আল-মুমিনূন এর ১-১১ এবং সূরা আল-আহযাবের ৩৫ নং আয়াতে বর্ণিত ত্রিশটি নৈতিক ও কর্মগত গুণে পুরোপুরি গুনাম্বিত হওয়া শর্ত। কুরআনের অন্য এক জায়গায় এ বিষয়টি এভাবে বর্ণিত হয়েছে, “যখন তারা সবর করলো এবং আমার নিদর্শনাবলীতে নিশ্চিত বিশ্বাসী হল, তখন আমরা তাদেরকে নেতা করে দিলাম, যাতে আমার নির্দেশ অনুযায়ী মানুষকে পথ প্রদর্শন করে।” [সূরা আস-সাজদাহ: ২৪] এই আয়াতে বর্ণিত (صَبر) হলো শিক্ষাগত ও বিশ্বাসগত পূর্ণতা। আর (يَقِيْن) হলো কর্মগত ও নৈতিক পূর্ণতা। কারও মধ্যে এগুলোর পূর্ণতার ভিত্তিতেই নেতৃত্বের জন্য আল্লাহ্‌র কাছে গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হন।

[৩] আল্লাহ্ তা'আলা কর্তৃক নবী ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালামের বিভিন্ন পরীক্ষা, তাতে তার সাফল্য এবং পুরস্কার ও প্রতিদানের বিষয় বর্ণিত হয়েছে। ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম যখন স্নেহ পরবশ হয়ে স্বীয় সন্তান-সন্ততির জন্যেও এ পুরস্কারের প্রার্থনা জানালেন, তখন পুরস্কার লাভের জন্য একটি নিয়ম-নীতিও বলে দেয়া হল। এতে খলীলুল্লাহর প্রার্থনাকে শর্তসাপেক্ষে মঞ্জুর করে বলা হয়েছে যে, আপনার বংশধরগণও এই পুরস্কার পাবে, তবে তাদের মধ্যে যারা অবাধ্য ও যালিম হবে, তারা এ পুরস্কার পাবে না। ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালামের এই পরীক্ষার উদ্দেশ্য ছিল পরীক্ষার মাধ্যমে স্বীয় বন্ধুর লালন করে তাকে পূর্ণত্বের স্তর পর্যন্ত পৌছানো সন্তানদের জন্য এ দো’আর মধ্যে আরও একটি তাৎপর্য নিহিত রয়েছে। অভিজ্ঞতা সাক্ষ্য দেয় যে, সমাজে যারা গণ্য-মান্য, তাদের সন্তানরা পিতার পথ অনুসরণ করলে সমাজে তাদের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। খলীলুল্লাহ ‘আলাইহিস সালামের এ দোআটিও কবুল হয়েছে। তার বংশধরদের মধ্যে কখনো সত্যদ্বীনের অনুসারী ও আল্লাহ্‌র আজ্ঞাবহ আদর্শ পুরুষের অভাব হয়নি। জাহেলিয়াত আমলে আরবে যখন সর্বত্র মূর্তিপূজার জয়-জয়কার, তখনো ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালামের বংশধরের মধ্যে কিছু লোক একত্ববাদ ও আখেরাতে বিশ্বাসী এবং আল্লাহ্‌র আনুগত্যশীল ছিলেন। যেমন, যায়েদ ইবন আমর, ওরাকা ইবন নওফাল এবং কেস ইবন সায়েদা প্রমূখ।

التفاسير:

external-link copy
125 : 2

وَإِذۡ جَعَلۡنَا ٱلۡبَيۡتَ مَثَابَةٗ لِّلنَّاسِ وَأَمۡنٗا وَٱتَّخِذُواْ مِن مَّقَامِ إِبۡرَٰهِـۧمَ مُصَلّٗىۖ وَعَهِدۡنَآ إِلَىٰٓ إِبۡرَٰهِـۧمَ وَإِسۡمَٰعِيلَ أَن طَهِّرَا بَيۡتِيَ لِلطَّآئِفِينَ وَٱلۡعَٰكِفِينَ وَٱلرُّكَّعِ ٱلسُّجُودِ

আর স্মরণ করুন [১], যখন আমরা কা’বা ঘরকে মানবজাতির মিলনকেন্দ্র [২] ও নিরাপত্তাস্থল [৩] করেছিলাম এবং বলেছিলাম, তোমরা মাকামে ইবরাহীমকে সালাতের স্থান রূপে গ্রহণ করো [৪]। আর ইবরাহীম ও ইসমা’ঈলকে আদেশ দিয়েছিলাম তাওয়াফকারী, ই’তিকাফকারী, রুকূ’ ও সিজদাকারীদের জন্য [৫] আমার ঘরকে পবিত্র রাখতে [৬]। info

[১] এই আয়াতে কা'বা গৃহের ইতিহাস, ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম ও ইসমাঈল ‘আলাইহিস সালাম কর্তৃক কা'বা গৃহের নির্মাণ, কাবা ও মক্কার কতিপয় বৈশিষ্ট্য এবং কা'বা গৃহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন সম্পর্কিত বিধি-বিধান উল্লেখিত হয়েছে। এ বিষয়টি কুরআনের অনেক সূরায় ছড়িয়ে রয়েছে। পরবর্তী আয়াতসমূহে এর কিছু বর্ণনা আসছে।

[২] (مثابةً) শব্দের অর্থ প্রত্যাবর্তনস্থল। এ শব্দ থেকে বুঝা যায় যে, আল্লাহ্‌ তা'আলা কাবা গৃহকে বিশেষ মর্যাদা দান করেছেন। ফলে তা সর্বদাই মানবজাতির প্রত্যাবর্তনস্থল হয়ে থাকবে এবং মানুষ বার বার তার দিকে ফিরে যেতে আকাংখী হবে। মুফাসসির মুজাহিদ বলেন, ‘কোনো মানুষ কা'বা গৃহের যিয়ারত করে তৃপ্ত হয় না, বরং প্রতিবারই যিয়ারতের অধিক বাসনা নিয়ে ফিরে আসে।' [আত-তাফসীরুস সহীহ] কোনো কোনো আলেমের মতে, কা'বা গৃহ থেকে ফিরে আসার পর আবার সেখানে যাওয়ার আগ্রহ হজ কবুল হওয়ার অন্যতম লক্ষণ। সাধারণভাবে দেখা যায়, প্রথমবার কা'বাগৃহ যিয়ারত করার যতটুকু আগ্রহ থাকে, দ্বিতীয়বার তা আরও বৃদ্ধি পায় এবং যতবারই যিয়ারত করতে থাকে, এ আগ্রহ উত্তরোত্তর ততই বৃদ্ধি পেতে থাকে। এ বিস্ময়কর ব্যাপারটি একমাত্র কা'বারই বৈশিষ্ট্য। নতুন জগতের শ্রেষ্ঠতম মনোরম দৃশ্যও এক-দু’বার দেখেই মানুষ পরিতৃপ্ত হয়ে যায়। পাঁচ-সাতবার দেখলে আর দেখার ইচ্ছাই থাকে না। অথচ এখানে না আছে কোনো মনোমুগ্ধকর দৃশ্যপট, না এখানে পৌছা সহজ এবং না আছে ব্যবসায়িক সুবিধা, তা সত্ত্বেও এখানে পৌছার আকুল আগ্রহ মানুষের মনে অবিরাম ঢেউ খেলতে থাকে। হাজার হাজার টাকা ব্যয় করে অপরিসীম দুঃখ-কষ্ট সহ্য করে এখানে পৌছার জন্য মানুষ ব্যাকুল আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে। [ তাফসীরে মা'আরিফুল কুরআন ]

[৩] (امنا) শব্দের অর্থ (مأمن) অর্থাৎ শান্তির আবাসস্থল। আর (بيت) শব্দের অর্থ ঘর। তবে এখানে শুধু কাবাগৃহ উদ্দেশ্য নয়, বরং সম্পূর্ণ মসজিদুল হারাম। কুরআনে (بيت اللّٰه) ও (كعبة) বলে সমগ্র হারাম শরীফকে বুঝানো হয়েছে। যেমন বলা হয়েছে,

(ثُمَّ مَحِلُّهَآ اِلَى الْبَيْتِ الْعَتِيْقِ)

“তারপর তাদের যবাইয়ের স্থান হচ্ছে প্রাচীন ঘরটির কাছে।" [সূরা আল-হাজ:৩৩]
কারণ, এতে কুরবানী যবাই করার কথা আছে। কুরবানী কাবা গৃহের অভ্যন্তরে হয় না। কাজেই আয়াতের অর্থ হবে যে, ‘আমরা কাবার হারাম শরীফকে শান্তির আলোয় করেছি’। শান্তির আলয় করার অর্থ মানুষকে নির্দেশ দেয়া যে, এ স্থানকে সাধারণ হত্যা ও যুদ্ধ-বিগ্রহ ইত্যাদি অশান্তি জনিত কার্যকলাপ থেকে মুক্ত রাখতে হবে।

[৪] এখানে মাকামে ইবরাহীমের অর্থ ঐ পাথর, যাতে মু'জিযা হিসেবে ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালামের পদচিহ্ন অংকিত হয়ে গিয়েছিল। কা'বা নির্মাণের সময় এ পাথরটি তিনি ব্যবহার করেছিলেন। [সহীহ আল-বুখারী] আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি এই পাথরে ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালামের পদচিহ্ন দেখেছি। যিয়ারত কারীদের উপর্যুপরি স্পর্শের দরুন চিহ্নটি এখন অস্পষ্ট হয়ে পড়েছে। আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে মাকামে ইবরাহীমের ব্যাখ্যা প্রসংগে বর্ণিত রয়েছে যে, সমগ্র হারাম শরীফই মাকামে ইবরাহীম। এর অর্থ বোধ হয় এই যে, তাওয়াফের পর যে দু রাকাআত সালাত মাকামে ইবরাহীমে আদায় করার নির্দেশ আলোচ্য আয়াতে রয়েছে, তা হারাম শরীফের যে কোনো অংশে পড়লেই চলে। অধিকাংশ আলেম এ ব্যাপারে একমত।

আয়াতে মাকামে ইবরাহীমকে সালাতের জায়গা করে নিতে বলা হয়েছে। স্বয়ং রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হজের সময় কথা ও কর্মের মাধ্যমে এর ব্যাখ্যা করে দিয়েছেন। তিনি তাওয়াফের পর কা'বা গৃহের সম্মুখে অনতিদূরে রক্ষিত মাকামে ইবরাহীমের কাছে আগমন করলেন এবং এ আয়াতটি পাঠ করলেন, অতঃপর মাকামে ইবরাহীমের পিছনে এমনভাবে দাড়িয়ে দুরাকাআত সালাত আদায় করলেন যে, কা'বা ছিল তার সম্মুখে এবং কাবা ও তার মাঝখানে ছিল মাকামে ইবরাহীম। [দেখুন, সহীহ মুসলিম ১২১৮] আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, তাওয়াফ পরবতী দুই রাকাআত সালাত ওয়াজিব।

[৫] শব্দগুলো থেকে কতিপয় বিধি-বিধান প্রমাণিত হয়। প্রথমতঃ কা'বা গৃহ নির্মাণের উদ্দেশ্য তাওয়াফ, ইতেকাফ ও সালাত। দ্বিতীয়তঃ তাওয়াফ আগে আর সালাত পরে। তৃতীয়তঃ ফরয হোক কিংবা নফল কা'বা গৃহের অভ্যন্তরে যে কোনো সালাত আদায় করা বৈধ ৷

[৬] এখানে কা'বাগৃহকে পাক-সাফ করার নির্দেশ বর্ণিত হয়েছে। বাহ্যিক অপবিত্রতা ও আবর্জনা এবং আত্মিক অপবিত্রতা উভয়টিই এর অন্তর্ভুক্ত। যেমন কুফর, শির্ক, দুশ্চরিত্রতা, হিংসা, লালসা, কুপ্রবৃত্তি, অহংকার, রিয়া, নাম-যশ ইত্যাদির কলুষ থেকেও কা'বা গৃহকে পবিত্র রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সুতরাং আল্লাহ্‌র ঘরের আসল পবিত্রতা হচ্ছে এই যে, সেখানে আল্লাহ্‌ ছাড়া আর কারো নাম উচ্চারিত হবে না। যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র ঘরে বসে আল্লাহ্‌ ছাড়া আর কাউকে মালিক, প্রভূ, মা’বুদ, অভাব পূরণকারী ও ফরিয়াদ শ্রবণকারী হিসেবে ডাকে, সে আসলে তাকে নাপাক ও অপবিত্র করে দিয়েছে। এ নির্দেশে (بيتى) শব্দ দ্বারা ইংগিত করা হয়েছে যে, এ আদেশ যে কোনো মসজিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কারণ, সব মসজিদই আল্লাহ্‌র ঘর। কুরআনে বলা হয়েছে, (فِيْ بُيُوْتٍ اَذِنَ اللّٰهُ اَنْ تُرْفَعَ) উমর ফারুক রাদিয়াল্লাহু আনহু মসজিদে এক ব্যক্তিকে উচ্চঃস্বরে কথা বলতে শুনে বললেন - তুমি কোথায় দাড়িয়ে আছ, জান না? অর্থাৎ মসজিদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা উচিত, এতে উচ্চঃস্বরে কথা বলা উচিত নয়। মোটকথা, আলোচ্য আয়াতে কা'বা গৃহকে যেমন যাবতীয় বাহ্যিক ও আত্মিক অপবিত্রতা থেকে মুক্ত রাখতে বলা হয়েছে, তেমনি অন্যান্য মসজিদকেও পাক-পবিত্র রাখতে হবে। দেহ ও পোষাক-পরিচ্ছদকে যাবতীয় অপবিত্রতা ও দুর্গন্ধযুক্ত বস্তু থেকে পাক-সাফ করে এবং অন্তরকে কুফর, শির্ক, দুশ্চরিত্রতা, অহংকার, হিংসা, লোভ-লালসা ইত্যাদি থেকে পবিত্র করে মসজিদে প্রবেশ করা কর্তব্য। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম পেঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি দুৰ্গন্ধযুক্ত বস্তু খেয়ে মসজিদে প্রবেশ করতে বারণ করেছেন। [ মা'আরিফুল কুরআন ]।

التفاسير:

external-link copy
126 : 2

وَإِذۡ قَالَ إِبۡرَٰهِـۧمُ رَبِّ ٱجۡعَلۡ هَٰذَا بَلَدًا ءَامِنٗا وَٱرۡزُقۡ أَهۡلَهُۥ مِنَ ٱلثَّمَرَٰتِ مَنۡ ءَامَنَ مِنۡهُم بِٱللَّهِ وَٱلۡيَوۡمِ ٱلۡأٓخِرِۚ قَالَ وَمَن كَفَرَ فَأُمَتِّعُهُۥ قَلِيلٗا ثُمَّ أَضۡطَرُّهُۥٓ إِلَىٰ عَذَابِ ٱلنَّارِۖ وَبِئۡسَ ٱلۡمَصِيرُ

আর স্মরণ করুন, যখন ইবরাহীম বলেছিলেন, 'হে আমার রব ! এটাকে নিরাপদ শহর করুন এবং এর অধিবাসীদের মধ্যে যারা আল্লাহ্‌ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান আনে [১] তাদেরকে ফলমূল হতে জীবিকা প্রদান করুন’। তিনি (আল্লাহ্‌) বললেন, যে কুফরী করবে তাকেও কিছু কালের জন্য জীবনোপভোগ করতে দিব, তারপর তাকে আগুনের শাস্তি ভোগ করতে বাধ্য করব। আর তা কত নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল ! info

[১] আলোচ্য আয়াতে মুমিন ও কাফির নির্বিশেষে সমগ্র মক্কাবাসীর জন্য শান্তি ও সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের দোআ করা হয়েছে। ইতঃপূর্বে এক দোআয় যখন ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম স্বীয় বংশধরের মুমিন ও কাফির নির্বিশেষে সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন, তখন আল্লাহ্ তা'আলার পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে, মুমিনদের পক্ষে এ দোআ কবুল হল, যালিম ও মুশরিকদের জন্য নয়। সে দোআটি ছিল নেতৃত্ব লাভের দোআ খলীল ‘আলাইহিস সালাম ছিলেন আল্লাহ্‌র বন্ধুত্বের মহান মর্যাদায় উন্নীত ও আল্লাহ্‌ভীতির প্রতীক। তাই এ ক্ষেত্রে সে কথাটি মনে পড়ে গেল এবং তিনি দোআর শর্ত যোগ করলেন যে, আর্থিক সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ও শান্তির এ দোআ শুধু মুমিনদের জন্য করেছি। আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে এ ভয় ও সাবধানতার মূল্য দিয়ে বলা হয়েছে (وَمَنْ كَفَرَ) অর্থাৎ পার্থিব সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য আমি সমস্ত মক্কাবাসীকেই দান করব, যদিও তারা কাফির মুশরিক হয়। তবে মুমিনদেরকে দুনিয়া ও আখেরাত সর্বত্রই তা দান করব, কিন্তু কাফেররা আখেরাতে শাস্তি ছাড়া আর কিছুই পাবে না। [ মাআরিফুল কুরআন ]

التفاسير: