৯১. সত্যিকারার্থে মুশরিকরা আল্লাহর যথাযথ মর্যাদা রক্ষা করতে পারে নি যখন তারা তাঁর নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে বললো: বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা মানুষের উপর কোন ওহী নাযিল করেন নি। হে রাসূল! আপনি তাদেরকে বলে দিন: তাহলে মূসা (আলাইহিস-সালাম) এর উপর তাঁর সম্প্রদায়ের জন্য আলো, হিদায়েত ও পথপ্রদর্শনস্বরূপ কে তাওরাত নাযিল করেছেন? যা ইহুদিরা খাতাপত্রে লিখে রাখে। এর মধ্যে প্রবৃত্তি মাফিকগুলো তারা প্রকাশ করে আর প্রবৃত্তি বিরোধীগুলো তারা লুকিয়ে রাখে। যেমন: মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর বৈশিষ্ট্যের বর্ণনা। হে আরবরা! তোমাদের পূর্বপুরুষরা জানতো না কুর‘আনের এমন কিছু তোমাদেরকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। হে রাসূল! আপনি তাদেরকে বলে দিন: মূলতঃ এটিকে আল্লাহ তা‘আলাই নাযিল করেছেন। অতঃপর আপনি তাদেরকে মৃত্যু পর্যন্ত মূর্খতা ও ভ্রষ্টতার মাঝে ছেড়ে দিন।
৯২. হে নবী! এ কুর‘আনটি হলো এমন এক কিতাব যা আমি আপনার উপর নাযিল করেছি। এটি একটি বরকতময় কিতাব। যা পূর্বেকার সকল আসমানী কিতাবের সত্যায়নকারী। যাতে আমি এর মাধ্যমে মক্কাবাসী ও দুনিয়ার পূর্ব-পশ্চিমের সকল মানুষকে ভীতি প্রদর্শন করতে পারি। যেন তারা হিদায়েত পেয়ে যায়। মূলতঃ পরকালে বিশ্বাসীরাই এ কুর‘আনের উপর ঈমান আনবে এবং এর বিধি-বিধানের উপর আমল করবে। উপরন্তু তারা রুকন, ফরয ও মুস্তাহাবসমূহ প্রতিষ্ঠাপূর্বক শরীয়ত নির্ধারিত সময়ে সালাত আদায়ের প্রতি যতœশীল হবে।
৯৩. সে ব্যক্তির চেয়ে বড় যালিম আর কে হতে পারে যে আল্লাহর উপর মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বলে: আল্লাহ তা‘আলা মানুষের উপর কোন কিছু নাযিল করেন নি কিংবা মিথ্যার স্বরে বলে: নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তার নিকট ওহী পাঠিয়েছেন; অথচ আল্লাহ তা‘আলা তার নিকট কোন কিছুই পাঠান নি অথবা বলে: আমি অচিরেই আল্লাহর নাযিলকৃত কুর‘আনের ন্যায় আরেকটি কুর‘আন নাযিল করবো। হে রাসূল! আপনি যদি দেখতেন যখন এ যালিমদেরকে মৃত্যুর যন্ত্রণা পেয়ে বসবে আর ফিরিশতারা তাদের হাতগুলো সম্প্রসারিত করে তাদেরকে শাস্তি দিবে ও প্রহার করবে। উপরন্তু ধমকের সুরে তাদেরকে বলবে: তোমরা নিজেদের জীবনগুলো বের করে দাও আমরা তা কবয করবো। এ দিন তোমাদেরকে লাঞ্ছনাকর শাস্তিই দেয়া হবে। কারণ, তোমরা নবুওয়াত, ওহী এবং আল্লাহর নাযিলকৃত কিতাবের ন্যায় কিতাব নাযিল করার অহেতুক দাবি করে তাঁর উপর মিথ্যা বলেছিলে এবং অহঙ্কারবশত তাঁর আয়াতসমূহের উপর ঈমান আনো নি। আপনি তা দেখলে ভয়ানক ব্যাপারই দেখতে পেতেন।
৯৪. আর পুনরুত্থানের দিন তাদেরকে বলা হবে, এদিন তোমরা আমার নিকট একাকী এসেছো; না তোমাদের সাথে কোন সম্পদ আছে না কোন নেতৃত্ব যেভাবে আমি তোমাকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছি খালি পা, উলঙ্গ ও খতনাছাড়া। আর তোমাদেরকে দেয়া আমার সব অনিচ্ছাসত্তে¡ দুনিয়ায় ছেড়ে এসেছো। আজ আমি তোমাদের সাথে সে মূর্তিগুলোকেও দেখতে পাচ্ছি না যাদেরকে তোমরা নিজেদের জন্য মধ্যস্থতাকারী ও ইবাদত পাওয়ার উপযুক্ততায় আল্লাহর শরীক ভাবতে। নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যের সম্পর্কটুকু আজ নিশ্চিত ছিন্ন হয়ে গেছে এবং তোমরা যে তাদের সুপারিশের আশা করতে এবং তাদেরকে আল্লাহর শরীক ভাবতে তাও আজ শেষ হয়ে গেছে।
التفاسير:
من فوائد الآيات في هذه الصفحة:
• إنزال الكتب على الأنبياء هو سُنَّة الله في المرسلين، والنبي عليه الصلاة والسلام واحد منهم.
ক. নবীদের উপর কিতাব নাযিল করা মূলতঃ আল্লাহর একটি নিয়ম। আর আমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁদেরই একজন।
• أعظم الناس كذبًا وفرية هو الذي يكذب على الله تعالى، فينسب أو ينفي ويثبت في حق الله تعالى أمرًا ليس عليه دليل صحيح.
খ. মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বড় মিথ্যুক ও অপবাদ দানকারী সে ব্যক্তি যে আল্লাহর ব্যাপারে মিথ্যা বলে। সে আল্লাহর ব্যাপারে এমন বিষয় সাব্যস্ত ও সম্পৃক্ত কিংবা অসম্পৃক্ত করে যার ব্যাপারে কোন বিশুদ্ধ দলীল নেই।
• كل أحد يبعث يوم القيامة فردًا متجردًا عن المناصب والألقاب، فقيرًا، ويحاسب وحده.
গ. প্রত্যেককে কিয়ামতের দিবসে কোন উপাধি ও পদ ছাড়া একা ও ফকির করে পুনরুত্থান করা ও হিসাব নেয়া হবে।