২৪. আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে দুনিয়ার জীবনে পবিত্র কথামালার দিকে পথ দেখিয়েছেন। যেমন: এ কথার সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন মা’বূদ নেই এবং আল্লাহু মহান ও সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য ইত্যাদি বলা। উপরন্তু তিনি তাদেরকে ইসলামের প্রশংসিত পথও দেখিয়েছেন।
২৫. যারা আল্লাহর সাথে কুফরি করে এবং অন্যদেরকে ইসলামে প্রবেশ করা থেকে দূরে সরিয়ে দেয় উপরন্তু মানুষদেরকে মসজিদে হারামে আসতেও তারা বাধা দেয় -যেমনিভাবে মুশরিকরা হুদাইবিয়ার বছর তা করেছে- আমি অচিরেই তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি আস্বাদন করাবো। যে মসজিদকে আমি মানুষের জন্য সালাত আদায়ের কিবলা এবং হজ্জ ও উমরাহর বিধানাবলী বাস্তবায়নের জায়গা বানিয়েছি। যাতে মক্কার অধিবাসী এবং মক্কার অধিবাসী ছাড়াও অন্যান্য আগন্তুক সমান। যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে কোন গুনাহে লিপ্ত হয়ে সেখানে সত্যভ্রষ্ট হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে আমি তাকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি আস্বাদন করাবো।
২৬. হে রাসূল! আপনি স্মরণ করুন সে সময়ের কথা যখন আমি ইব্রাহীম (আলাইহিস-সালাম) কে কাবা ঘরের জায়গা ও তার সীমা-পরিসীমা সুস্পষ্টভাবে বাতলে দিয়েছি; অথচ তা ছিলো তাঁর নিকট অস্পষ্ট এবং আমি তাঁর নিকট এ মর্মে ওহীও পাঠিয়েছি যে, আপনি আমার ইবাদাতের সাথে কোন কিছুকে শরীক করবেন না। বরং আপনি আমার একক ইবাদাত করুন। উপরন্তু আপনি আমার ঘরকে তাওয়াফ ও সালাত আদায়কারীদের জন্য প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য নাপাক থেকে পবিত্র রাখুন।
২৭. আর আপনি মানুষকে এ ঘরের হজ্জের প্রতি আহŸান করুন যে ঘরকে নির্মাণ করতে আমি আপনাকে আদেশ করেছি। তারা আপনার ডাকে সাড়া দিয়ে পায়ে হেঁটে অথবা দীর্ঘ সফরের ক্লান্তিজনিত দুর্বল এমন প্রত্যেক উটের পিঠে চড়ে আসবে। প্রত্যেক দূরের পথ থেকে উট তাদেরকে বহন করে নিয়ে আসবে।
২৮. যাতে তারা এমন সব কাজে উপস্থিত হতে পারে যা তাদের জন্য প্রচুর ফায়েদা বয়ে আনবে। যেমন: গুনাহের ক্ষমা, সাওয়াব অর্জন ও ঐক্য সাধন ইত্যাদি এবং যাতে তারা নির্দিষ্ট দিনগুলো তথা জিলহজ্জের দশ তারিখ ও তার পরের তিন দিনে আল্লাহর দেয়া রিযিক তথা উট, গাভী ও ছাগলের উপর তাঁর কৃতজ্ঞতা আদায়ের জন্য হাদি বা কুরবানী হিসেবে জবেহ করার সময় আল্লাহর নাম স্মরণ করতে পারে। তোমরা এ হাদিগুলো থেকে খাও এবং তা থেকে অত্যন্ত গরিব লোকদেরকেও খাওয়াও।
২৯. অতঃপর তারা যেন নিজেদের উপর থাকা হজ্জের বাকি বিধানগুলো আদায় করে এবং নিজেদের মাথাগুলো মুÐন করে, নখ কেটে ও দীর্ঘ ইহরামের দরুন জমে থাকা ময়লাগুলো পরিষ্কার করে হালাল হয়ে যায়। আর যেন তারা নিজেদের উপর ওয়াজিব করা হজ্জ, উমরাহ অথবা হাদি তথা কুরবানীর মানতগুলো পূর্ণ করে। উপরন্তু তারা যেন সে ঘরের তাওয়াফে ইফাযাহ (আরাফাত থেকে ফিরে আসার পর যে তাওয়াফ করা হয়) করে যে ঘরকে আল্লাহ তা‘আলা জবরদখকারীদের কবল থেকে রক্ষা ও স্বাধীন করেছেন।
৩০. তোমাদেরকে যে কাজগুলো করার জন্য আদেশ করা হয়েছে যেমন: মাথা মুÐন, নখ কাটা, ময়লা দূর করা, মানত পূর্ণ করা ও বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করা সেগুলোকেই আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের উপর বাধ্যতামূলক করেছেন। অতএব, আল্লাহ তা‘আলা যে কাজগুলোকে তোমাদের উপর বাধ্যতামূলক করেছেন সেগুলোর প্রতি তোমরা সম্মান প্রদর্শন করো। যে ব্যক্তি আল্লাহর দÐবিধি সংক্রান্ত কাজগুলোতে লিপ্ত না হয়ে এবং তাঁর হারামকৃত বস্তুগুলোকে হালাল মনে না করে বরং সেগুলোর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে আল্লাহ ইহরাম অবস্থায় যে কাজগুলো থেকে দূরে থাকার আদেশ করেছেন সেগুলো থেকে দূরে থাকে সেটা হবে দুনিয়া ও আখিরাতে তার জন্য অনেক উত্তম। হে মানুষ! তোমাদের জন্য চতুষ্পদ জন্তু তথা উট, গাভী ও ছাগলকে হালাল করা হয়েছে। তিনি তোমাদের উপর হারাম করেননি হাম (যে উটকে দশবার বীজ দেয়ার দরুন দেবতার নামে ছেড়ে দেয়া হয়েছে), বাহীরাহ (যে উষ্ট্রীর পঞ্চম মাদি বাচ্চাকে কান কেটে মহিলাদের উপর হারাম করে দেয়া হয়েছে) ও ওয়াসীলাহ (যে ছাগলের সপ্তম বাচ্চাকে জবাই করা হয় না)। তিনি এগুলোর কোনটিকেই হারাম করেননি। তবে যা তোমরা হারাম বলে কুর‘আনে পাচ্ছো যেমন: মৃত পশু ও রক্ত ইত্যাদি। তোমরা মূর্তি নামক অপবিত্রতা থেকে দূরে থাকো এবং এমন সব বাতিল কথা থেকে যা আল্লাহ ও তাঁর কোন সৃষ্টির উপর মিথ্যাভাবে আরোপ করা হয়েছে।
التفاسير:
من فوائد الآيات في هذه الصفحة:
• حرمة البيت الحرام تقتضي الاحتياط من المعاصي فيه أكثر من غيره.
ক. আল্লাহর ঘর হারাম তথা মহাসম্মানিত স্থান অন্য জায়গার চেয়ে সেখানে পাপের ব্যাপারে বেশি সতর্ক থাকা উচিৎ।
• بيت الله الحرام مهوى أفئدة المؤمنين في كل زمان ومكان.
খ. আল্লাহর ঘর হারাম তথা মহাসম্মানিত বাইতুল্লাহ প্রত্যের যুগের ও জায়গার মু’মিনদের অন্তরের ঠিকানা।
• منافع الحج عائدة إلى الناس سواء الدنيوية أو الأخروية.
গ. হজ্জের ফায়েদাগুলো মানুষের উপরই বর্তায় চাই তা দুনিয়া সংক্রান্ত হোক অথবা আখিরাত সংক্রান্ত।
• شكر النعم يقتضي العطف على الضعفاء.
ঘ. নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা আদায়ের একটি দাবি হচ্ছে গরিবদের উপর দয়া করা।