د قرآن کریم د معناګانو ژباړه - بنګالۍ ژباړه - ابوبکر زکریا

د مخ نمبر:close

external-link copy
67 : 17

وَإِذَا مَسَّكُمُ ٱلضُّرُّ فِي ٱلۡبَحۡرِ ضَلَّ مَن تَدۡعُونَ إِلَّآ إِيَّاهُۖ فَلَمَّا نَجَّىٰكُمۡ إِلَى ٱلۡبَرِّ أَعۡرَضۡتُمۡۚ وَكَانَ ٱلۡإِنسَٰنُ كَفُورًا

আর সাগরে যখন তোমাদেরকে বিপদ স্পর্শ করে তখন শুধু তিনি ছাড়া অন্য যাদেরকে তোমরা ডেকে থাক তারা হারিয়ে যায় [১]; অতঃপর তিনি যখন তোমাদেরকে উদ্ধার করে স্থলে আনেন তখন তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও। আর মানুষ খুবই অকৃতজ্ঞ। info

[১] অর্থাৎ যখন বিপদাপদ দেখা দেয়। তখন তারা আল্লাহ ছাড়া অন্য যাদের ইবাদত করে তাদেরকে ভুলে যায়। তারা তখন তাদের মন থেকে হারিয়ে যায়। একমাত্র আল্লাহকেই তারা ডাকতে থাকে। মক্কা বিজয়ের পর ইকরিমা ইবন আবি জাহল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে পালিয়ে হাবশা চলে যাচ্ছিল। সাগরের মাঝে তার নৌকা প্ৰচণ্ড ঝড়ের কবলে পড়ে যায়। তখন নৌকার সবাই একমাত্র আল্লাহকে ডাকার জন্য একে অপরকে পরামর্শ দিতে থাকে। আর ঠিক তখনি ইকরিম নিজ মনে বলছিল যে, যদি সাগর বক্ষে আল্লাহ ব্যতিত আর কেউ রক্ষা করার না থাকে তা হলে ডাঙ্গাতেও তিনিই একমাত্র রক্ষক। হে আল্লাহ! আমি অঙ্গীকার করছি যে, যদি এ বিপদ থেকে বেঁচে যাই। তবে অবশ্য ফিরে গিয়ে মুহাম্মাদের হাতে হাত রেখে ঈমান আনব। তাকে আমি অবশ্যই রহমদিল পাব। তারপর তারা যখন সমুদ্র বক্ষ থেকে বের হলো তখন তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে ফিরে আসলেন এবং ঈমান আনলেন। আর তার ইসলাম ছিল অত্যন্ত সুন্দর। [মুস্তাদরাকে হাকেম ৩/২৪১-২৪২]

التفاسير:

external-link copy
68 : 17

أَفَأَمِنتُمۡ أَن يَخۡسِفَ بِكُمۡ جَانِبَ ٱلۡبَرِّ أَوۡ يُرۡسِلَ عَلَيۡكُمۡ حَاصِبٗا ثُمَّ لَا تَجِدُواْ لَكُمۡ وَكِيلًا

তোমরা কি নির্ভয় হয়েছ যে, তিনি তোমাদেরকে সহ কোনো অঞ্চল ধসিয়ে দেবে না অথবা তোমাদের উপর শিলা বর্ষণকারী ঝঞ্চা পাঠাবেন না? তারপর তোমরা তোমাদের জন্য কোনো কর্মবিধায়ক পাবে না। info
التفاسير:

external-link copy
69 : 17

أَمۡ أَمِنتُمۡ أَن يُعِيدَكُمۡ فِيهِ تَارَةً أُخۡرَىٰ فَيُرۡسِلَ عَلَيۡكُمۡ قَاصِفٗا مِّنَ ٱلرِّيحِ فَيُغۡرِقَكُم بِمَا كَفَرۡتُمۡ ثُمَّ لَا تَجِدُواْ لَكُمۡ عَلَيۡنَا بِهِۦ تَبِيعٗا

নাকি তোমরা নির্ভয় হয়েছ যে, তিনি তোমাদের আরেকবার সাগরে নিয়ে যাবেন না এবং তোমাদের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড ঝটিকা পাঠাবেন না এবং তোমাদের কুফরি করার জন্য তোমাদেরকে নিমজ্জিত করবেন না? তারপর তোমরা এ ব্যাপারে আমাদের বিরুদ্ধে কোনো সাহায্যকারী পাবে না। info
التفاسير:

external-link copy
70 : 17

۞ وَلَقَدۡ كَرَّمۡنَا بَنِيٓ ءَادَمَ وَحَمَلۡنَٰهُمۡ فِي ٱلۡبَرِّ وَٱلۡبَحۡرِ وَرَزَقۡنَٰهُم مِّنَ ٱلطَّيِّبَٰتِ وَفَضَّلۡنَٰهُمۡ عَلَىٰ كَثِيرٖ مِّمَّنۡ خَلَقۡنَا تَفۡضِيلٗا

আর অবশ্যই আমরা আদম-সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি [১]; স্থলে ও সাগরে তাদের চলাচলের বাহন দিয়েছি এবং তাদেরকে উত্তম রিযক দান করেছি আর আমরা যাদেরকে সৃষ্টি করেছি তাদের অনেকের উপর তাদের শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি। info

[১] আল্লাহ তা'আলা আদম-সন্তানকে বিভিন্ন দিক দিয়ে এমন সব বৈশিষ্ট্য দান করেছেন, যেগুলো অন্যান্য সৃষ্টজীবের মধ্যে নেই। উদাহরণতঃ সুশ্ৰী চেহারা, সুষম দেহ, সুষম প্রকৃতি এবং অঙ্গসৌষ্ঠব। [ইবন কাসীর] যেমন অন্য আয়াতে বলেছেন, “অবশ্যই আমরা সৃষ্টি করেছি মানুষকে সুন্দরতম গঠনে।” [সূরা আত-তীন ৪]

তাকে দু' পায়ে সম্পূর্ণ সোজা হয়ে দাঁড়ানোর ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। তাকে হাতে খাওয়ার শক্তি দেয়া হয়েছে। অন্যান্য প্রাণী চারপায়ে এবং মুখ দিয়ে খায়। মানুষের মধ্যে যে চোখ, কান ও অন্তর দেয়া হয়েছে সে এসবকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারে। দীনী ও দুনিয়াবী বিষয়ে সে এগুলো দ্বারা ভাল-মন্দ বিচার করতে পারে। [ইবন কাসীর] বস্তুত এ বুদ্ধি ও চেতনায় মানুষকে বিশেষ স্বাতন্ত্র্য দান করা হয়েছে। এর সাহায্যে সে সমগ্র উর্ধ্ব-জগত ও অধঃজগতকে নিজের কাজে নিয়োজিত করতে পারে। আল্লাহ তা'আলা তাকে বিভিন্ন সৃষ্টবস্তুর সংমিশ্রণে বিভিন্ন শিল্পদ্রব্য প্রস্তুত করার শক্তি দিয়েছেন, সেগুলো তার বসবাস, চলাফেরা, আহার্য ও পোশাক-পরিচ্ছদে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাকশক্তি ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার যে নৈপুণ্য মানুষ লাভ করেছে, তা অন্য কোনো প্রাণীর মধ্যে নেই। বিবেক-বুদ্ধি ও চেতনা মানুষের সর্বপ্রধান শ্রেষ্ঠত্ব। এর মাধ্যমে সে স্বীয় সৃষ্টিকর্তা ও প্রভুর পরিচয় এবং তার পছন্দ ও অপছন্দ জেনে পছন্দের অনুগমন করে এবং অপছন্দ থেকে বিরত থাক। [দেখুন, ফাতহুল কাদীর]

التفاسير:

external-link copy
71 : 17

يَوۡمَ نَدۡعُواْ كُلَّ أُنَاسِۭ بِإِمَٰمِهِمۡۖ فَمَنۡ أُوتِيَ كِتَٰبَهُۥ بِيَمِينِهِۦ فَأُوْلَٰٓئِكَ يَقۡرَءُونَ كِتَٰبَهُمۡ وَلَا يُظۡلَمُونَ فَتِيلٗا

স্মরণ করুন সে দিনকে, যখন আমরা প্রত্যেক সম্প্রদায়কে তাদের ‘ইমাম’সহ [১] ডাকব। অতঃপর যাদের ডান হাতে তাদের ‘আমলনামা দেয়া হবে, তারা তাদের ‘আমলনামা পড়বে এবং তাদের উপর সামান্ন পরিমাণও যুলুম করা হবে না। info

অষ্টম রুকূ’

[১] إمام শব্দের বিভিন্ন অর্থ করা হয়ে থাকে। কেউ কেউ এখানে إمام দ্বারা গ্ৰন্থ উদ্দেশ্য নিয়েছেন। সে হিসেবে গ্ৰন্থকে ইমাম বলার কারণ এই যে, ভুলভ্রান্তি ও দ্বিমত দেখা দিলে গ্রন্থের আশ্রয় নেয়া হয়। যেমন, কোনো অনুসৃত ইমামের আশ্রয় নেয়া হয়। যেমন অন্য আয়াতে বলা হয়েছে,

وَكُلَّ شَيْءٍ أَحْصَيْنَاهُ فِي إِمَامٍ مُّبِينٍ

“আর যাবতীয় বস্তুই আমি সুস্পষ্ট গ্রন্থে গুনে রেখেছি।" [সূরা ইয়াসীন ১২] এখানেও إِمَامٍ مُّبِينٍ বলে সুস্পষ্ট গ্রন্থ বুঝানো হয়েছে। তাই এ আয়াতেও তাদের বিচারের জন্য তাদের আমলনামার গ্রন্থ হাযির করার কথা বলাই উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে। [ইবন কাসীর] এ অর্থের সমর্থনে কুরআনের আরো কিছু আয়াত প্রমাণ বহন করছে। যেমন, [সূরা কাহাফ ৪৯, আল-জাসিয়া ২৮, ২৯, আয-যুমার ৬৯. আন-নিসা ৪১]

আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু ও মুজাহিদ থেকে এখানে ইমাম শব্দের অর্থ নেতাও বর্ণিত রয়েছে। অর্থাৎ প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার নেতার নাম দ্বারা ডাকা হবে এবং সবাইকে এক জায়গায় জমায়েত করা হবে। উদাহরণতঃ ইবরাহীম আলাইহিস সালামের অনুসারী দল, মূরা আলাইহিস সালামের অনুসারী দল, ঈসা আলাইহিস সালামের অনুসারী দল এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসারী দল। এ প্রসঙ্গে এসব অনুসারীর প্রত্যেক নেতাদের নাম নেয়াও সম্ভবপর। [ফাতহুল কাদীর] এ অর্থের সপক্ষে আরো প্রমাণ হলো, আল্লাহর বাণী: “প্রত্যেক জাতির জন্য আছে একজন রাসূল এবং যখন তাদের রাসূল আসবে তখন ন্যায়বিচারের সাথে তাদের মীমাংসা করে দেয়া হবে এবং তাদের প্রতি যুলুম করা হবে না।” [সূরা ইউনুস ৪৭] তাছাড়া একই অর্থে কুরআনের বিভিন্ন স্থানে আরো আয়াত এসেছে। [যেমন সূরা আন-নিসা ৪১, আন-নাহল ৮৪, ৮৯, আল-হাজ্ব ৭৮, আল-কাসাসা ৭৫, আয-যুমার ৬৯] কোনো কোনো সালফে সালেহীন বলেন, এ আয়াত দ্বারা হাদীসের প্রকৃত অনুসারীদের সর্বোচ্চ মর্যাদা প্রমাণিত হয়। কারণ, তাদের নেতা হলেন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

তবে আয়াতের পরবর্তী অংশের অর্থ থেকে বুঝা যায় যে, এখানে إمام বলতে গ্ৰন্থই বুঝানো হয়েছে। ইবন কাসীর এ মতটিকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। কারণ, পরবর্তী অংশে বলা হয়েছে, “যাদের ডান হাতে তাদের ‘আমলনামা দেয়া হবে, তারা তাদের ‘আমলনামা পড়বে এবং তাদের উপর সামান্য পরিমাণও যুলুম করা হবে না।” অনুরূপভাবে অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, “তখন যাকে তার "আমলনামা তার ডান হাতে দেয়া হবে, সে বলবে, ‘লও, আমার আমলনামা পড়ে দেখ; আমি জানতাম যে, আমাকে আমার হিসেবের সম্মুখীন হতে হবে।' [সূরা আল-হাক্কাহ ১৯-২০] আর কাফেরদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, “কিন্তু যার আমলনামা তার বাম হাতে দেয়া হবে, সে বলবে, “হায়! আমাকে যদি দেয়াই না হত আমার ‘আমলনামা এবং আমি যদি না জানতাম আমার হিসেব!” [সূরা আল-হাক্কাহ ২৫-২৬] যদিও মূলতঃ উভয় তাফসীরের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। কারণ, তাদের আমলনামার উপর সাক্ষীস্বরূপ প্রত্যেক উম্মতের নবীদেরকে হাজির করা হবে। তারা সেগুলোর সত্যায়ন করবে। [ইবন কাসীর]

التفاسير:

external-link copy
72 : 17

وَمَن كَانَ فِي هَٰذِهِۦٓ أَعۡمَىٰ فَهُوَ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ أَعۡمَىٰ وَأَضَلُّ سَبِيلٗا

আর যে ব্যক্তি এখন অন্ধ [১] সে আখিরাতেও অন্ধ [২] এবং সবচেয়ে বেশি পথভ্রষ্ট। info

[১] এখানে অন্ধ বলে বাহ্যিক অন্ধদের বুঝানো হয়নি। বরং যাদের মন হক্ক বুঝার ক্ষেত্রে, আল্লাহর নিদর্শনাবলী দেখার ক্ষেত্রে অন্ধত্ব গ্রহণ করেছে। হক্ক মানতে চায়না এবং নিদর্শনাবলী দেখতে চায়না এমন প্রকৃত অন্ধদেরকে উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে। অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, “তারা কি দেশ ভ্ৰমণ করেনি? তাহলে তারা জ্ঞানবুদ্ধিসম্পন্ন হৃদয় ও শ্রুতিশক্তিসম্পন্ন শ্রবণের অধিকারী হতে পারত। বস্তুত চোখ তো অন্ধ নয়, বরং অন্ধ হচ্ছে বুকের মধ্যে অবস্থিত হৃদয়।” [সূরা আল-হাজ্ব ৪৬]

পক্ষান্তরে দুনিয়ার জীবনে যারা অন্ধ তারা যদি ঈমানদার হয় এবং সৎকাজ করে ও ধৈর্যধারণ করে তবে তাদের ব্যাপারে কুরআন ও হাদীসে প্রশংসা বাণী এসেছে। কুরআনে বলা হয়েছে, “তিনি ভ্ৰূকুঞ্চিত করলেন এবং মুখ ফিরিয়ে নিলেন। কারণ তার কাছে অন্ধ লোকটি আসল। আপনি কেমন করে জানবেন---সে হয়ত পরিশুদ্ধ হত অথবা উপদেশ গ্ৰহণ করত, ফলে উপদেশ তার উপকারে আসত।” [সূরা আবাসা ১-৩]

অনুরূপভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীসেও ঐ সমস্ত লোকদের ব্যাপারে জান্নাতের সুসংবাদ জানানো হয়েছে যারা অন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ধৈর্যধারণ করেছে।

[২] এখানে বলা হয়েছে যে, তারা আখেরাতে অন্ধ হবে। আখেরাতে তাদের অন্ধত্বের ধরণ সম্পর্কে দু'টি মত রয়েছে।

এক. তারা বাস্তবিকই শারীরিকভাবে অন্ধ হিসেবে হাশরের মাঠে উঠবে। এ অর্থের সমর্থনে কুরআনের অন্যত্র এসেছে, “যে আমার স্মরণে বিমুখ থাকবে, অবশ্যই তার জীবন-যাপন হবে সংকুচিত এবং আমি তাকে কিয়ামতের দিন উত্থিত করব অন্ধ অবস্থায়।” [ত্বাহা-হা ১২৪] আরো এসেছে, “কিয়ামতের দিন আমি তাদেরকে সমবেত করব তাদের মুখে ভর দিয়ে চলা অবস্থায় অন্ধ, মূক ও বধির করে।” [সূরা আল-ইসরা ৯৭]

দুই. এ ছাড়া আয়াতের আরেক অর্থ করা হয়ে থাকে যে, তারা কিয়ামতের দিন তাদের দুনিয়ার জীবনে যে সমস্ত দলীল-প্রমাণাদি ব্যবহার করে হক্ক পথ থেকে দূরে থাকে, সে সব থেকে তাদেরকে অন্ধ করে উঠানো হবে। মুজাহিদ রাহে মাহুল্লাহ এ অর্থ গ্রহণ করেছেন। [ইবন কাসীর]

التفاسير:

external-link copy
73 : 17

وَإِن كَادُواْ لَيَفۡتِنُونَكَ عَنِ ٱلَّذِيٓ أَوۡحَيۡنَآ إِلَيۡكَ لِتَفۡتَرِيَ عَلَيۡنَا غَيۡرَهُۥۖ وَإِذٗا لَّٱتَّخَذُوكَ خَلِيلٗا

আর আমরা আপনার প্রতি যা ওহী করেছি তা থেকে ওরা আপনাকে পদস্খলন ঘটানোর চেষ্টা প্রায় চূড়ান্ত করেছিল, যাতে আপনি আমাদের উপর সেটার বিপরীত মিথ্যা রটাতে পারেন [১]; আর নিঃসন্দেহে তখন তারা আপনাকে বন্ধুরুপে গ্রহণ করত। info

[১] কাফেররা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যে সমস্ত প্রস্তাব দিত। তন্মধ্যে এক বিশেষ প্রস্তাব ছিল যে, আপনি এ কুরআন বাদ দিয়ে ভিন্নধর্মী কিছু নিয়ে আসুন যা আমাদের মনঃপুত হবে। কিন্তু একজন নবীর পক্ষে কিভাবে ওহী ব্যতিত অন্য কিছু আনা সম্ভব হতে পারে? তিনি যদি তা করেন তবে হয়ত তারা তাকে বন্ধু বানাবে, কিন্তু আল্লাহ কি তাকে এভাবেই ছেড়ে দিবেন? অবশ্যই না। আল্লাহ অন্যত্র বলেছেন, “তিনি যদি আমার নামে কোনো কথা রচনা করে চালাতে চেষ্টা করতেন, আমি অবশ্যই ডান হাতে ধরে ফেলতাম এবং কেটে দিতাম তার জীবন-ধমনী।" [সূরা আল-হাক্কাহ ৪৪-৪৬]

সুতরাং নবীর পক্ষে ওহী ব্যতীত কিছু বলা সম্ভব নয়। আল্লাহ তা'আলা অন্যত্র বলেন, “যখন আমার আয়াত, যা সুস্পষ্ট, তাদের কাছে পাঠ করা হয় তখন যারা আমার সাক্ষাতের আশা পোষণ করে না তারা বলে, “অন্য এক কুরআন আন এটা ছাড়া, বা এটাকে বদলাও ৷” বলুন, “নিজ থেকে এটা বদলান আমার কাজ নয়। আমার প্রতি যা ওহী হয়, আমি শুধু তারই অনুসরণ করি। আমি আমার রবের অবাধ্যতা করলে অবশ্যই মহাদিনের শাস্তির আশংকা করি।” [সূরা ইউনুস ১৫] তাই একজন সত্য নবীর পক্ষে কক্ষনো নিজ থেকে বানিয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়।

التفاسير:

external-link copy
74 : 17

وَلَوۡلَآ أَن ثَبَّتۡنَٰكَ لَقَدۡ كِدتَّ تَرۡكَنُ إِلَيۡهِمۡ شَيۡـٔٗا قَلِيلًا

আর আমরা অবিচলিত না রাখলে আপনি অবশ্যই তাদের দিকে প্রায় কিছুটা ঝুঁকে পড়তেন [১]; info

[১] অর্থাৎ যদি অসম্ভবকে ধরে নেয়ার পর্যায়ে আপনি তাদের ভ্রান্ত কার্যক্রমের দিকে ঝুঁকে পড়ার কাছাকাছি হয়ে যেতেন, তবে আপনার শাস্তি দুনিয়াতেও দ্বিগুণ হত এবং মৃত্যুর পর কবর অথবা আখেরাতেও দ্বিগুণ হত। কেননা নৈকট্যশীলদের মামুলী ভ্ৰান্তিকেও বিরাট মনে করা হয়। এ বিষয়বস্তুর প্রায় অনুরূপ, যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের পত্নীদের সম্পর্কে কুরআনে বর্ণিত হয়েছে “হে নবী পত্নীরা, যদি তোমাদের মধ্যে কেউ প্রকাশ্যে নির্লজ্জ কাজ করে, তবে তাকে দ্বিগুণ শাস্তি দেয়া হবে।” [সূরা আল-আহযাব ৩০]

التفاسير:

external-link copy
75 : 17

إِذٗا لَّأَذَقۡنَٰكَ ضِعۡفَ ٱلۡحَيَوٰةِ وَضِعۡفَ ٱلۡمَمَاتِ ثُمَّ لَا تَجِدُ لَكَ عَلَيۡنَا نَصِيرٗا

তাহলে অবশ্যই আমরা আপনাকে ইহজীবনে দিগুন ও পরজীবনে দিগুণ শাস্তি আস্বাদন করাতাম; তখন আমাদের বিরুদ্ধে আপনার জন্য কোনো সাহায্যকারী পেতেন না [১]। info

[১] এ সমগ্ৰ কাৰ্যবিবরণীর উপর মন্তব্য প্রসংগে আল্লাহ দু'টি কথা বলেছেন। এক. যদি আপনি সত্যকে জানার পর মিথ্যার সাথে কোনো আপোস করে নিতেন তাহলে বিক্ষুব্ধ জাতি আপনার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যেতো ঠিকই কিন্তু আল্লাহর গযব আপনার উপর নেমে পড়ত এবং আপনাকে দুনিয়া ও আখেরাত উভয় স্থানেই দ্বিগুণ সাজা দেয়া হতো। দুই. মানুষ নবী হলেও আল্লাহর সাহায্য ও সুযোগ-সুবিধা তার সহযোগী না হলে শুধুমাত্র নিজের শক্তির উপর নির্ভর করে সে মিথ্যার তুফানের মোকাবিলা করতে পারে না। শুধুমাত্র আল্লাহ প্রদত্ত ধৈর্য ও অবিচলতার সাহায্যেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সত্য ও ন্যায়ের উপর পাহাড়ের মতো অটল থাকেন এবং বিপদের সয়লাব স্রোত তাকে একচুলও স্থানচ্যুত করতে পারেনি। তিনিই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন, দৃঢ়পদ রেখেছেন, হেফাযত করেছেন, অপরাধী ও দুষ্ট লোকদের ক্ষতি থেকে নিরাপদ করেছেন। আর তিনিই তার যাবতীয় কাজের দায়িত্ব নিচ্ছেন। তিনিই তাকে জয়ী করবেন। তিনি তাকে তাঁর কোনো বান্দার কাছে সোপর্দ করবেন না। তার দীনকে তিনি তার বিরোধী প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য শক্তিকে পরাজিত করার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করবেন। [ইবন কাসীর]

التفاسير: