पवित्र कुरअानको अर्थको अनुवाद - बंगाली अनुवाद : डा. अबु बकर मुहम्मद जकारिया ।

رقم الصفحة:close

external-link copy
79 : 10

وَقَالَ فِرۡعَوۡنُ ٱئۡتُونِي بِكُلِّ سَٰحِرٍ عَلِيمٖ

আর ফির’আউন বলল, ‘তোমরা আমার কাছে সমস্ত সুদক্ষ জাদুকরকে নিয়ে আস।‘ info
التفاسير:

external-link copy
80 : 10

فَلَمَّا جَآءَ ٱلسَّحَرَةُ قَالَ لَهُم مُّوسَىٰٓ أَلۡقُواْ مَآ أَنتُم مُّلۡقُونَ

অতঃপর যখন জাদুকরেরা আসল তখন তাদেরকে মূসা বললেন, ‘তোমাদের যা নিক্ষেপ করার, নিক্ষেপ কর।’ info
التفاسير:

external-link copy
81 : 10

فَلَمَّآ أَلۡقَوۡاْ قَالَ مُوسَىٰ مَا جِئۡتُم بِهِ ٱلسِّحۡرُۖ إِنَّ ٱللَّهَ سَيُبۡطِلُهُۥٓ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يُصۡلِحُ عَمَلَ ٱلۡمُفۡسِدِينَ

অতঃপর যখন তারা নিক্ষেপ করল, তখন মূসা বললেন, ‘তোমরা যা এনেছ তা জাদু, নিশ্চয় আল্লাহ্‌ সেগুলোকে অসার করে দেবেন। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ অশান্তি সৃষ্টিকারীদের কাজ সার্থক করেন না।’ info
التفاسير:

external-link copy
82 : 10

وَيُحِقُّ ٱللَّهُ ٱلۡحَقَّ بِكَلِمَٰتِهِۦ وَلَوۡ كَرِهَ ٱلۡمُجۡرِمُونَ

আর অপরাধীরা অপ্রীতিকর মনে করলেও আল্লাহ্‌ তাঁর বাণীর মাধ্যমে সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করবেন। info
التفاسير:

external-link copy
83 : 10

فَمَآ ءَامَنَ لِمُوسَىٰٓ إِلَّا ذُرِّيَّةٞ مِّن قَوۡمِهِۦ عَلَىٰ خَوۡفٖ مِّن فِرۡعَوۡنَ وَمَلَإِيْهِمۡ أَن يَفۡتِنَهُمۡۚ وَإِنَّ فِرۡعَوۡنَ لَعَالٖ فِي ٱلۡأَرۡضِ وَإِنَّهُۥ لَمِنَ ٱلۡمُسۡرِفِينَ

কিন্তু ফির’আউন এবং তার পরিষদবর্গ নির্যাতন করবে এ আশংকায় মূসার সম্প্রদায়ের এক ছোট্ট নওজোয়ান দল [১] ছাড়া আর কেউ তার প্রতি ঈমান আনেনি। আর নিশ্চয় ফির’আউন ছিল যমীনে পরাক্রমশীল এবং সে নিশ্চয় ছিল সীমালংঘনকারীদের অন্তর্ভুক্ত [২]। info

[১] কুরআনের মূল বাক্যে ذُرِّيَّةٌ শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। এর মানে সন্তান-সন্ততি। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এখানে যে মুষ্টিমেয় যুবকদেরকে ঈমান এনেছিল বলে জানানো হলো এরা কারা? তারা কি ফিরআউনের বংশের? নাকি মূসা আলাইহিসসালামের বংশের লোক? আল্লামা ইবন কাসীর রাহেমাহুল্লাহ প্রথম মতটিকে প্রাধান্য দিয়েছেন এবং এ মতের সমর্থনে বিভিন্ন প্রমাণাদি পেশ করেছেন। পক্ষান্তরে আল্লামা ইবন জরীর আত-তাবারী রাহেমাহুল্লাহ ও আব্দুর রহমান ইবন নাসের আস-সাদী দ্বিতীয় মতটিকে প্রাধান্য দিয়েছেন। দুটি মতের স্বপক্ষেই যুক্তি রয়েছে। তবে আয়াত থেকে একটি বিষয় বুঝা যাচ্ছে যে, যারাই তখন ঈমান এনেছিল তারা ছিল অল্প বয়স্ক যুবক। [ইবন কাসীর; সা’দী]

কুরআনের একথা বিশেষভাবে সুস্পষ্ট করে পেশ করার কারণ সম্ভবত এই যে, মক্কার জনবসতিতেও মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে সহযোগিতা করার জন্য যারা এগিয়ে এসেছিলেন তারাও জাতির বয়স্ক ও বয়োবৃদ্ধ লোক ছিলেন না বরং তাদের বেশিরভাগই ছিলেন বয়সে নবীন।

[২] আয়াতে مُسۡرِفِیۡنَ শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। এর মানে হচ্ছে, সীমা অতিক্রমকারী। সে সত্যিকার অর্থেই সীমা অতিক্রম করে গিয়েছিল। কারণ, সে কুফরির সীমা অতিক্রম করেছিল। সে ছিল দাস, অথচ দাবী করল প্রভুত্বের। [কুরতুবী]

التفاسير:

external-link copy
84 : 10

وَقَالَ مُوسَىٰ يَٰقَوۡمِ إِن كُنتُمۡ ءَامَنتُم بِٱللَّهِ فَعَلَيۡهِ تَوَكَّلُوٓاْ إِن كُنتُم مُّسۡلِمِينَ

আর মূসা বলেছিলেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! যদি তোমরা আল্লাহ্‌র উপর ঈমান এনে থাক, তবে তোমরা তাঁরই উপর নির্ভর কর, যদি তোমরা মুসলিম হয়ে থাক [১]। info

[১] মূসা আলাইহিস সালাম তার জাতিকে ঈমানের সাথে সাথে আল্লাহর উপর ভরসা করার আহবান জানান। কারণ, যারাই আল্লাহ্‌র উপর ভরসা করবে আল্লাহ্ তাদের জন্য যথেষ্ট হয়ে যান। [সূরা আয-যুমার ৩৬, সূরা আত-তালাক ৩] আল্লাহ্ তাআলা পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন স্থানে ঈমান ও ইবাদতের সাথে তাওয়াকুল তথা আল্লাহর উপর ভরসা করার জন্য জোর নির্দেশ দিয়েছেন। [যেমন, সূরা হুদ ১২৩, সূরা আল-মুলক ২৯, সূরা আল-মুয্যাম্মিল ৯]

التفاسير:

external-link copy
85 : 10

فَقَالُواْ عَلَى ٱللَّهِ تَوَكَّلۡنَا رَبَّنَا لَا تَجۡعَلۡنَا فِتۡنَةٗ لِّلۡقَوۡمِ ٱلظَّٰلِمِينَ

অতঃপর তারা বলল, ‘আমরা আল্লাহ্‌র উপর নির্ভর করলাম। হে আমাদের রব! আপনি আমাদেরকে যালিম সম্প্রদায়ের উৎপীড়নের পাত্র করবেন না [১]।’ info

[১] “আমাদেরকে জালেম লোকদের ফিতনার শিকারে পরিণত করবেন না"। অর্থাৎ তাদেরকে আমাদের উপর বিজয় দিবেন না। কারণ, এটা আমাদের দীন সম্পর্কে আমাদেরকে বিভ্রান্তিতে নিপতিত করবে। [কুরতুবী] অথবা তাদের হাতে আমাদের শাস্তি দিয়ে আমাদেরকে পরীক্ষায় ফেলবেন না। মুজাহিদ বলেন, এর অর্থ আমাদের শক্ৰদের হাতে আমাদেরকে ধবংস করবেন না। আর আমাদেরকে এমন কোনো শাস্তিও দিবেন না যা দেখে আমাদের শক্ররা বলে যে, যদি এরা সৎপন্থী হতো তবে আমরা তাদের উপর করায়ত্ব করতে পারতাম না। এতে তারাও বিভ্রান্ত হবে, আমরাও। আবু মিজলায বলেন, এর অর্থ, তাদেরকে আমাদের উপর বিজয় দিবেন না, ফলে তারা মনে করবে যে, তারা আমাদের চেয়ে উত্তম, তারপর তারা আমাদের উপর সীমালঙ্ঘনের মাত্রা বাড়িয়ে দেবে। [কুরতুবী; ইবন কাসীর]

التفاسير:

external-link copy
86 : 10

وَنَجِّنَا بِرَحۡمَتِكَ مِنَ ٱلۡقَوۡمِ ٱلۡكَٰفِرِينَ

‘আর আমাদেরকে আপনার অনুগ্রহে কাফির সম্প্রদায় থেকে রক্ষা করুন।’ info
التفاسير:

external-link copy
87 : 10

وَأَوۡحَيۡنَآ إِلَىٰ مُوسَىٰ وَأَخِيهِ أَن تَبَوَّءَا لِقَوۡمِكُمَا بِمِصۡرَ بُيُوتٗا وَٱجۡعَلُواْ بُيُوتَكُمۡ قِبۡلَةٗ وَأَقِيمُواْ ٱلصَّلَوٰةَۗ وَبَشِّرِ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ

আর আমরা মূসা ও তার ভাইকে ওহী পাঠালাম যে, ‘মিসরে আপনাদের সম্প্রদায়ের জন্য ঘর তৈরী করুন এবং তোমাদের ঘরগুলোকে ‘কিবলা [১] তথা ইবাদাতের ঘর বানান। আর সালাত কায়েম করুন এবং মুমিনদেরকে সুসংবাদ দিন [২]।’ info

[১] এখানে

(وَّ اجۡعَلُوۡا بُیُوۡتَکُمۡ قِبۡلَةً)

-এর দ্বারা কি উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে তা নির্ধারণে কয়েকটি মত রয়েছে-

(এক) কোনো কোনো মুফাসসিরের মতে এর অর্থ তোমরা তোমাদের ঘরগুলোকে কেবলামুখী করে তৈরী করে নাও। যাতে করে সেগুলোতে সালাত আদায় করলে ফিরআউনের লোকেরা বুঝতে না পারে। [ইবন কাসীর]

(দুই) কোনো কোনো মুফাস্‌সির-এর মতে এর অর্থ তোমরা তোমাদের ঘরগুলোকে মসজিদে রূপান্তরিত করে নাও। যাতে সেগুলোতে সালাত আদায় করার ব্যাপারে কোনো প্রতিবন্ধকতা না থাকে। কারণ, পূর্ববর্তী উম্মতদের উপর সালাত আদায় করার জন্য মসজিদ হওয়া শর্ত ছিল। যেখানে সেখানে সালাত আদায়ের অনুমতি ছিল না। [ইবন কাসীর]

(তিন) কাতাদাহ রাহিমাহুল্লাহ্‌ বলেন, এর অর্থ তোমরা তোমাদের ঘরের মধ্যে মসজিদ বানিয়ে নেবে যাতে তার দিক হয় কেবলার দিকে এবং সেদিকে ফিরে সালাত আদায় করবে। [কুরতুবী] এ আয়াত দ্বারা আরো প্রমাণিত হয় যে, সালাত আদায়ের জন্য কেবলামুখী হওয়ার শর্তটি পূর্ববতী নবীগণের সময়ও বিদ্যমান ছিল। [কুরতুবী]

[২] অর্থাৎ কোনো কোনো মুফাসসির বলেন, এখানে রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে। তখন অর্থ হবে, বর্তমানে ঈমানদারদের ওপর যে হতাশা, ভীতি-বিহবলতা ও নিস্তেজ-নিস্পৃহ ভাব ছেয়ে আছে তা দূর করে তাদেরকে আশান্বিত করুন। তাদেরকে উৎসাহিত ও উদ্যমশীল করুন। অপর মুফাসসিরগণের মতে এখানে মূসা আলাইহিস সালামকেই উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে। আর এটা বেশী সুস্পষ্ট। অর্থাৎ বনী ইসরাঈলকে সুসংবাদ দিন যে, নিশ্চয় আল্লাহ তাদেরকে তাদের শক্ৰদের উপর বিজয় দান করবেন। [কুরতুবী]

التفاسير:

external-link copy
88 : 10

وَقَالَ مُوسَىٰ رَبَّنَآ إِنَّكَ ءَاتَيۡتَ فِرۡعَوۡنَ وَمَلَأَهُۥ زِينَةٗ وَأَمۡوَٰلٗا فِي ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَا رَبَّنَا لِيُضِلُّواْ عَن سَبِيلِكَۖ رَبَّنَا ٱطۡمِسۡ عَلَىٰٓ أَمۡوَٰلِهِمۡ وَٱشۡدُدۡ عَلَىٰ قُلُوبِهِمۡ فَلَا يُؤۡمِنُواْ حَتَّىٰ يَرَوُاْ ٱلۡعَذَابَ ٱلۡأَلِيمَ

মূসা বললেন, ‘হে আমাদের রব! আপনি তো ফির’আউন ও তার পরিষদবর্গকে দুনিয়ার জীবনে শোভা ও সম্পদ [১] দান করেছেন, হে আমাদের রব! যা দ্বারা তারা মানুষকে আপনার পথ থেকে ভ্রষ্ট করে [২]। হে আমাদের রব! তাদের সম্পদ বিনষ্ট করুন, আর তাদের হৃদয় কঠিন করে দিন, ফলে তারা যন্ত্রনণাদায়ক শাস্তি প্রত্যক্ষ না করা পর্যন্ত ঈমান আনবে না [৩]।’ info

[১] অর্থাৎ আড়ম্বর, শান-শওকত ও সাংস্কৃতিক জীবনের এমন চিত্তাকর্ষক চাকচিক্য, যার কারণে দুনিয়ার মানুষ তাদের ও তাদের রীতি-নীতির মোহে মত্ত হয় এবং প্রত্যেক ব্যক্তি তাদের পর্যায়ে পৌছার আকাঙ্খা করতে থাকে।

[২] অর্থাৎ উপায়-উপকরণ, যেগুলোর প্রাচুর্যের কারণে নিজেদের কলা-কৌশলসমূহ কার্যকর করা তাদের জন্য সহজসাধ্য ছিল। হে আমাদের রব, আপনিই তাদেরকে এগুলো দিয়েছেন, অথচ আপনি জানতেন যে, আপনি যা নিয়ে তাদের কাছে আমাকে পাঠিয়েছেন তারা তার উপর ঈমান আনবে না। এটা তো আপনি করেছেন তাদেরকে পরীক্ষামূলক ছাড় দেয়ার জন্য। [ইবন কাসীর]

[৩] এ দো’আটি মূসা আলাইহিস সালাম এমন সময় করেছিলেন যখন একের পর এক সকল নিদর্শন দেখে নেবার এবং দীনের সাক্ষ্য প্রমাণ পূর্ণ হয়ে যাবার পরও ফিরআউন ও তার রাজসভাসদরা সত্যের বিরোধিতার চরম হঠকারিতার সাথে অবিচল ছিল। এহেন পরিস্থিতিতে পয়গম্বর যে বদ-দোয়া করেন তা কুফরীর ওপর অবিচল থাকার ব্যাপারে হককারিতার ভূমিকা অবলম্বনকারীদের সম্পর্কে আল্লাহ নিজের ফয়সালারই অনুরূপ হয়ে থাকে। অর্থাৎ তাদেরকে আর ঈমান আনার সুযোগ দেয়া হয় না। মূসা আলাইহিস সালামের এ দোআটি নূহ আলাইহিসসালামের দোআর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। যেখানে বলা হয়েছে: “হে আমার প্রভু! যমীনের বুকে কাফেরদের কোনো আস্তানা অবশিষ্ট রাখবেন না। কারণ, তাদেরকে যদি আপনি পাকড়াও না করে এমনি ছেড়ে দেন তবে তারা আপনার বান্দাদেরকে পথভ্রষ্ট করবে এবং প্রচণ্ড অপরাধী এবং অতিশয় কাফের ছাড়া আর কিছুর জন্মও তারা দেবে না।" [সূরা নূহ ২৭]।

التفاسير: