৬৭ সূরা আল-মুলক
৩০ আয়াত, মক্কী
এই সূরাকে হাদীসে “মানীআ” বা প্রতিরোধকারী নামকরণ করা হয়েছে। [মুসতাদরাকে হাকিম ২/৪৯৮, আবুশ শায়খ, তাবাকুল ইস্ফানিয়্যীন ২৬৪] অন্য হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তাআলার কিতাবে একটি সূরা আছে, যার আয়াত তো মাত্র ত্রিশটি কিন্তু কিয়ামতের দিন এই সূরা একেক ব্যক্তির পক্ষে সুপরিশ করবে এবং তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে জান্নাতে দাখিল করবে; সেটা সূরা মুলক। [আদু দাউদ ১৪০০, তিরমিযী ২৮৯১, নাসাঈ, আল-কুবরা ৭১০, ইবন মাজাহ ৩৭৮৬, মুসনাদে আহমাদ ২/২৯৯, ৩২১] অন্য হাদসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আলিফ লাম তানজীল’ (সূরা আস-সাজদাহ) এবং ‘তাবারাকাল্লাজি বিয়াদিহিল মুলক’ (সূরা আল-মুলক) সূরাদ্বয় না পড়ে ঘুমাতেন না।” [তিরমিযি ২১৯৭, দারিমী ৩৪১১, মুসতাদরাকে হাকিম ২/৪৪৬ (৩৫৪৫)]
[১] এখানে রাজত্ব বলে আকাশ ও পৃথিবী এবং দুনিয়া ও আখেরাতের সার্বিক কর্তৃত্ব বোঝানো হয়েছে। [কুরতুবী]
[১] মূল ব্যবহৃত শব্দটি হলো فطور যার অর্থ ফাটল, ছিদ্র, ছেঁড়া, ভাঙা-চোরা। [কুরতুবী]
[১] مصابيح শব্দের অর্থ প্রদীপমালা। এখানে নক্ষত্ররাজি বোঝানো হয়েছে। [বাগভী; ফাতহুল কাদীর]
[১] মূল ইবারতে شهيق শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে, যা গাধার ডাকের মত আওয়াজ বুঝানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। এ বাক্যের অর্থ এও হতে পারে যে, এটা খোদ জাহান্নামের শব্দ। [ফাতহুল কাদীর, কুরতুবী] যেমন পবিত্র কুরআনের অন্যত্র বলা হয়েছে, "জাহান্নামের দিকে যাওয়ার পথে এসব লোক দূরে থেকেই তার ক্রোধ ও প্রচণ্ড উত্তেজনার শব্দ শুনতে পাবে।” [সূরা আল-ফুরকান ১২]
আবার এও হতে পারে যে, জাহান্নাম থেকে এ শব্দ আসতে থাকবে, ইতিমধ্যেই যেসব লোককে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয়েছে তারা জোরে জোরে চিৎকার করতে থাকবে। যেমন অন্যত্র বলা হয়েছে, “এ জাহান্নামীরা জাহান্নামের মধ্যে হাঁপাতে, গোঙ্গাতে এবং হাসফাস করতে থাকবে।” [সূরা হূদ ১০৬]
[১] অর্থাৎ আমরা যদি সত্যানুসন্ধিৎসু হয়ে নবীগণের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতাম অথবা নবীগণ আমাদের সামনে যা পেশ করেছেন তা আসলে কি বুদ্ধি-বিবেক খাটিয়ে তা বুঝার চেষ্টা করতাম। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষ তাদের অপরাধের ব্যাপারে নিজেদের উপর দোষ স্বীকার করবে ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের ব্যাপারে চুড়ান্ত ফয়সালা করা হবে না।” [আবু দাউদ ৪৩৪৭, মুসনাদে আহমাদ ৫/২৯৩]