Terjemahan makna Alquran Alkarim - Terjemahan Berbahasa Bangladesh - Abu Bakar Zakaria

Nomor Halaman:close

external-link copy
87 : 17

إِلَّا رَحۡمَةٗ مِّن رَّبِّكَۚ إِنَّ فَضۡلَهُۥ كَانَ عَلَيۡكَ كَبِيرٗا

তবে এটা প্রত্যাহার না করা আপনার রবের দয়া; নিশ্চয় আপনার প্রতি আছে তাঁর মহাঅনুগ্রহ [১]। info

[১] এ কুরআনকে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর নাযিল করা, তাকে রাসূল হিসেবে প্রেরণ করা, তাকে আল্লাহর বন্ধু মনোনীত করা অবশ্যই আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ অনুগ্রহ। তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা অনুগ্রহ করেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সম্বোধন করে এ অনুগ্রহের কথা এ আয়াতে এবং কুরআনের অন্যত্রও এ অনুগ্রহকে স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে। [যেমন, সূরা আন-নিসা ১১৩, সূরা আল-ফাতহ ১-২, সূরা আশ-শারহ ১-৫]

التفاسير:

external-link copy
88 : 17

قُل لَّئِنِ ٱجۡتَمَعَتِ ٱلۡإِنسُ وَٱلۡجِنُّ عَلَىٰٓ أَن يَأۡتُواْ بِمِثۡلِ هَٰذَا ٱلۡقُرۡءَانِ لَا يَأۡتُونَ بِمِثۡلِهِۦ وَلَوۡ كَانَ بَعۡضُهُمۡ لِبَعۡضٖ ظَهِيرٗا

বলুন, ‘যদি কুরআনের অনুরুপ কুরআন আনার জন্য মানুষ ও জিন সমবেত হয় এবং যদিও তারা পরস্পরকে সাহায্য করে তবুও তারা এর অনুরুপ আনতে পারবে না। info
التفاسير:

external-link copy
89 : 17

وَلَقَدۡ صَرَّفۡنَا لِلنَّاسِ فِي هَٰذَا ٱلۡقُرۡءَانِ مِن كُلِّ مَثَلٖ فَأَبَىٰٓ أَكۡثَرُ ٱلنَّاسِ إِلَّا كُفُورٗا

‘আর অবশ্যই আমরা মানুষের জন্য এ কুরআনে বিভিন্ন উপমা বিশদভাবে বর্ণনা করেছি; কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ কুফরী করা ছাড়া ক্ষান্ত হয়নি।’ info
التفاسير:

external-link copy
90 : 17

وَقَالُواْ لَن نُّؤۡمِنَ لَكَ حَتَّىٰ تَفۡجُرَ لَنَا مِنَ ٱلۡأَرۡضِ يَنۢبُوعًا

আর তারা বলে, ‘আমরা কখনই তোমার উপর ঈমান আনব না, যতক্ষণ না তুমি আমাদের জন্য ভূমি হতে এক প্রস্রবণ উৎসারিত করবে, info
التفاسير:

external-link copy
91 : 17

أَوۡ تَكُونَ لَكَ جَنَّةٞ مِّن نَّخِيلٖ وَعِنَبٖ فَتُفَجِّرَ ٱلۡأَنۡهَٰرَ خِلَٰلَهَا تَفۡجِيرًا

‘অথবা তোমার খেজুরের ও আঙ্গুরের এক বাগান হবে যার ফাঁকে ফাঁকে তুমি অজস্র ধারায় প্রবাহিত করে দেবে নদী-নালা। info
التفاسير:

external-link copy
92 : 17

أَوۡ تُسۡقِطَ ٱلسَّمَآءَ كَمَا زَعَمۡتَ عَلَيۡنَا كِسَفًا أَوۡ تَأۡتِيَ بِٱللَّهِ وَٱلۡمَلَٰٓئِكَةِ قَبِيلًا

‘অথবা তুমি যখন বলে থাক, সে অনুযায়ী আকাশকে খণ্ড-বিখণ্ড করে আমাদের উপর ফেলবে অথবা আল্লাহ্ ও ফিরিশতাদেরকে আমাদের সামনে উপস্থিত করবে, info
التفاسير:

external-link copy
93 : 17

أَوۡ يَكُونَ لَكَ بَيۡتٞ مِّن زُخۡرُفٍ أَوۡ تَرۡقَىٰ فِي ٱلسَّمَآءِ وَلَن نُّؤۡمِنَ لِرُقِيِّكَ حَتَّىٰ تُنَزِّلَ عَلَيۡنَا كِتَٰبٗا نَّقۡرَؤُهُۥۗ قُلۡ سُبۡحَانَ رَبِّي هَلۡ كُنتُ إِلَّا بَشَرٗا رَّسُولٗا

‘অথবা তোমার একটি সোনার তৈরি ঘর হবে অথবা তুমি আকাশে আরোহণ করবে, কিন্তু তোমার আকাশ আরোহণে আমরা কখনো ঈমান আনবো না যতক্ষণ তুমি আমাদের প্রতি এক কিতাব নাযিল না করবে যা আমরা পাঠ করব [১]।’ বলুন, ‘পবিত্র মহান আমার রব! আমি তো হচ্ছি শুধু একজন মানুষের রাসুল [২]।’ info

[১] মুজাহিদ রাহেমাহুল্লাহ বলেন, তাদের কথার উদ্দেশ্য হলো, আমাদের প্রত্যেকের নামে চিঠি আসে না কেন, যাতে করে আমরা সে চিঠি সর্বদা বালিশের কাছে রেখে দিতে পারি? [ইবন কাসীর] কাফেরগণ যে এ ধরনের আলাদা আলাদা চিঠি দাবী করেছিল তার বর্ণনা অন্যান্য আয়াতেও এসেছে, বলা হয়েছে, “বস্তুত তাদের প্রত্যেকেই কামনা করে যে, তাকে একটি উন্মুক্ত গ্ৰন্থ দেয়া হোক।” [সূরা আল-মুদ্দাসসির ৫২]

[২] আল্লাহ তা'আলা এ আয়াতে যে কথাটি বুঝাতে চাচ্ছেন তা হলো, যদি তারা যা চায় তা দেয়াও হয় তারপরও তারা ঈমান আনবে না। কেননা যারা হতভাগা, যাদের ঈমান আনার ইচ্ছা নেই তারা এরপরও আরো অনেক কিছু খুঁজে বেড়াবে। কুরআনের বিভিন্ন স্থানে আল্লাহ্ তা'আলা এ সত্যটিকে সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলে ধরেছেন। যেমন অন্যত্র আল্লাহ বলেছেন, “আমি যদি আপনার প্রতি কাগজে লিখিত কিতাবও নাযিল করতাম আর তারা যদি সেটা হাত দিয়ে স্পর্শও করত তবুও কাফিররা বলত, “এটা স্পষ্ট জাদু ছাড়া আর কিছু নয়।” [সূরা আল-আনআম ৭]

অন্যত্র বলেছেন, “তারা আল্লাহর নামে কঠিন শপথ করে বলে, তাদের কাছে যদি কোনো নিদর্শন আসত তবে অবশ্যই তারা এতে ঈমান আনত। বলুন, “নিদর্শন তো আল্লাহর ইখতিয়ারভুক্ত। তাদের কাছে নিদর্শন আসলেও তারা যে ঈমান আনবে না এটা কিভাবে তোমাদেরকে বোঝান যাবে? [সূরা আল-আনআম ১০৯]

আরো বলেছেন, “আমি তাদের কাছে ফিরিশতা পাঠালেও, মৃতরা তাদের সাথে কথা বললেও এবং সকল বস্তুকে তাদের সামনে হাযির করলেও আল্লাহর ইচ্ছে না হলে তারা কখনো ঈমান আনবে না।” [সূরা আল-আনআম ১১১]

আবার অন্য জায়গায় বলেছেন, “যদি তাদের জন্য আকাশের দরজা খুলে দেই এবং তারা সারাদিন তাতে আরোহন করতে থাকে, তবুও তারা বলবে, “আমাদের দৃষ্টি সম্মোহিত করা হয়েছে; না, বরং আমরা এক জাদুগ্ৰস্ত সম্প্রদায়।" [সূরা আল-হিজর ১৪-১৫]

আরো বলেছেন, “নিশ্চয়ই যাদের বিরুদ্ধে আপনার রবের বাক্য সাব্যস্ত হয়ে গেছে তারা ঈমান আনবে না, যদিও তাদের কাছে সবগুলো নিদর্শন আসে, এমনকি তারা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দেখতে পাবে।” [সূরা ইউনুস ৯৬-৯৭]

التفاسير:

external-link copy
94 : 17

وَمَا مَنَعَ ٱلنَّاسَ أَن يُؤۡمِنُوٓاْ إِذۡ جَآءَهُمُ ٱلۡهُدَىٰٓ إِلَّآ أَن قَالُوٓاْ أَبَعَثَ ٱللَّهُ بَشَرٗا رَّسُولٗا

আর যখন মানুষের কাছে হিদায়াত আসে, তখন তাদেরকে ঈমান আনা থেকে বিরত রাখে কেবল তাদের এ কথা যে, ‘আল্লাহ্ কি মানুষকে রাসুল করে পাঠিয়েছেন [১]?’ info

এগারতম রুকু’

[১] অর্থাৎ প্রত্যেক যুগের অজ্ঞ ও মুর্থ লোকেরা এ ভুল ধারণায় নিমজ্জিত থাকে যে, মানুষ কখনো রাসূল হতে পারে না। তাই যখন কোনো রাসূল এসেছেন এবং তারা দেখেছে। তিনি পানাহার করছেন, তাঁর স্ত্রী-সন্তানাদি আছে, তিনি রক্ত-মাংসের মানুষ তখন তারা ফায়সালা দিয়ে বসেছে যে, এ ব্যক্তি রসূল নয়, কারণ এতো মানুষ। কুরআনের অন্যান্য বহু স্থানে আল্লাহ তা'আলা তাদের এ প্রবণতার কথা উল্লেখ করেছেন। [যেমন, সূরা ইউনুস ২, সূরা আত-তাগাবুন ৬, সূরা আলমুমিনুন ৪৭, সূরা ইবরাহীম ১০] এভাবে তার জীবদ্দশায় তারা তাকে রাসূল হিসেবে মানেনি আর তিনি চলে যাওয়ার দীর্ঘকাল পর তাঁর ভক্তদের মধ্যে এমনসব লোক জন্ম নিতে থাকে যারা বলতে থাকে, তিনি মানুষ ছিলেন না, কারণ তিনি ছিলেন রসূল। ফলে কেউ তাঁকে আল্লাহ বানিয়েছে, কেউ বানিয়েছে আল্লাহর পুত্র, আবার কেউ বলেছে আল্লাহ তাঁর মধ্যে অনুপ্রবিষ্ট হয়েছিলেন। মোটকথা মানবিক সত্তা ও নবুওয়াতী সত্তার একই সত্তার মধ্যে একত্র হওয়া হামেশা মূর্খদের কাছে একটি হেঁয়ালি হয়েই থেকেছে।

التفاسير:

external-link copy
95 : 17

قُل لَّوۡ كَانَ فِي ٱلۡأَرۡضِ مَلَٰٓئِكَةٞ يَمۡشُونَ مُطۡمَئِنِّينَ لَنَزَّلۡنَا عَلَيۡهِم مِّنَ ٱلسَّمَآءِ مَلَكٗا رَّسُولٗا

বলুন, ‘ফিরিশতাগণ যদি নিশ্চিত হয়ে যমীনে বিচরণ করত তবে আমরা আসমান থেকে তাদের কাছে অবশ্যই ফিরিশতা রাসুল করে পাঠাতাম।’ info
التفاسير:

external-link copy
96 : 17

قُلۡ كَفَىٰ بِٱللَّهِ شَهِيدَۢا بَيۡنِي وَبَيۡنَكُمۡۚ إِنَّهُۥ كَانَ بِعِبَادِهِۦ خَبِيرَۢا بَصِيرٗا

বলুন, ‘আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষি হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট [১]; নিশ্চয় তিনি তাঁর বান্দাদের সম্পর্কে পূর্ণ অবহিত, পূর্ণদ্রষ্টা।’ info

[১] আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “বনী ইসরাঈলের এক লোক বনী ইসরাঈলের অপর এক লোকের নিকট এক হাজার দীনার কার্জ চাইল। কর্জদাতা বলল: কয়েকজন সাক্ষী আনুন, আমি তাদেরকে সাক্ষী রাখব। কর্জগ্রহীতা বলল: সাক্ষীর জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। তখন কৰ্জদাতা বলল, তবে একজন যামিন উপস্থিত করুন। কর্জগ্রহীতা বলল: যামিন হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট। তখন কর্জদাতা বলল: আপনি ঠিকই বলেছেন। তারপর সে নির্ধারিত সময়ে পরিশোধের শর্তে তাকে এক হাজার দীনার কার্জ দিয়ে দিল। তারপর কর্জাগ্ৰহীতা সমূদ্র যাত্রা করল এবং তার ব্যবসায়িক প্রয়োজন সমাধা করল। তারপর সে বাহন খুঁজতে লাগল, যাতে নির্ধারিত সময়ে সে কর্জদাতার নিকট এসে পৌঁছতে পারে । কিন্তু কোনো রূপ বাহন সে পেল না। অগত্যা সে এক টুকরা কাঠ নিয়ে তা ছিদ্র করে কর্জদাতার নামে একখানা চিঠি ও এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা তার মধ্যে পুরে ছিদ্রটি বন্ধ করে দিল। তারপর ঐ কাঠখন্ডটা নিয়ে সমুদ্র তীরে গিয়ে বলল: হে আল্লাহ্! তুমি তো জান, আমি অমুকের কাছে এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা কৰ্জ চাইলে সে আমার কাছে যামিন চেয়েছিল। আমি বলেছিলাম, যামিন হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট, এতে সে রাষী হয়েছিল। সে আমার কাছে সাক্ষী চেয়েছিল। আমি বলেছিলাম, স্বাক্ষী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট। এতে সে রাযী হয়ে যায়। আমি তার প্রাপ্য তার কাছে পৌছে দেয়ার উদ্দেশ্যে বাহনের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করলাম। কিন্তু পেলাম না। আমি ঐ এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা আপনার নিকট আমানত রাখছি। এই বলে সে কাঠখন্ডটি সমুদ্রে নিক্ষেপ করল। তৎক্ষণাৎ তা সমুদ্রের মধ্যে নিমজ্জিত হয়ে গেল। তারপর লোকটি ফিরে গেল এবং নিজের শহরে যাওয়ার জন্য বাহন খুঁজতে লাগল। ওদিকে কৰ্জদাতা নির্ধারিত দিনে এ আশায় সমুদ্রতীরে গেল যে, হয়ত বা দেনাদার তার পাওনা নিয়ে এসে পড়েছে। ঘটনাক্রমে ঐ কাঠখন্ডটি তার নজরে পড়ল যার ভিতরে স্বর্ণমুদ্রা ছিল। সে তা পরিবারের জ্বালানির জন্য বাড়ি নিয়ে গেল। যখন কাঠের টুকরাটি চিরল তখন ঐ স্বর্ণমুদ্রা ও চিঠি সে পেয়ে গেল। কিছুকাল পর দেনাদার লোকটি এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা নিয়ে পাওনাদারের নিকট এসে হাজির হলো এবং বলল: আল্লাহর কসম! আমি আপনার মাল যথা সময়ে পৌছে দেয়ার উদ্দেশ্যে বাহনের খোজে সর্বদা চেষ্টিত ছিলাম। কিন্তু যে জাহাজটিতে করে আমি এখন এসেছি এটির আগে আর কোনো জাহাজই পেলাম না। কর্জদাতা বলল: আপনি কি আমার কাছে কিছু পাঠিয়েছিলেন? দেনাদার বলল: আমি তো আপনাকে বললামই যে, এর আগে আর কোনো জাহাজই আমি পাইনি। কর্জদাতা বলল: আপনি কাঠের টুকরোর ভিতরে করে যা পাঠিয়েছিলেন তা আল্লাহ আপনার হয়ে আমাকে আদায় করে দিয়েছেন। তখন সে এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা নিয়ে প্রশান্ত চিত্তে ফিরে চলে আসল। [বুখারী ২২৯১]

التفاسير: