[১] এ থেকে কোনো কোনো আলেম মাসআলা চয়ন করেছেন যে, পিতা পুত্রের উপার্জন ভোগ করতে পারে, এটা জায়েয। কেননা মহানবী রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমাদের সন্তান-সন্ততি তোমাদের উপার্জনের একটি অংশ। অতএব, তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে সন্তান-সন্ততির উপার্জন ভক্ষণ কর’। [আবু দাউদ ৩৫২৮, ৩৫২৯, ইবন মাজাহ ২১৩৮]
[২] (أخْرَجْنَا) শব্দ দ্বারা ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, উশরী জমিতে (যে জমিনের উৎপন্ন শষ্যের এক-দশমাংশ ইসলামী বিধান অনুযায়ী সরকারী তহবিলে জমা দিতে হয়) যে ফসল উৎপন্ন হয়, তার এক-দশমাংশ দান করা ওয়াজিব। ‘ওশর’ ও ‘খারাজ’ ইসলামী শরীআতের দুটি পারিভাষিক শব্দ। এ দু’য়ের মধ্যে একটি বিষয় অভিন্ন। উভয়টিই ইসলামী রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ভূমির উপর আরোপিত কর। পার্থক্য এই যে, ‘উশর’ শুধু কর নয়, এতে আর্থিক ‘ইবাদাতের দিকটিই সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ; যেমন - যাকাত। এ কারণেই উশরকে 'যাকাতুল’-‘আরদ’ বা ‘ভূমির যাকাত'ও বলা হয়। পক্ষান্তরে ‘খারাজ’ শুধু করকে বোঝায়। এতে ‘ইবাদাতের কোনো দিক নেই। মুসলিমরা ‘ইবাদাতের যোগ্য ও অনুসারী। তাই তাদের কাছ থেকে ভূমির উৎপন্ন ফসলের যে অংশ নেয়া হয়,তাকে ‘উশর’ বলা হয়। অমুসলিমরা ‘ইবাদাতের যোগ্য নয়। তাই তাদের ভূমির উপর যে কর ধাৰ্য্য করা হয়, তাকে খারাজ বলা হয়। যাকাত ও উশরের মধ্যে আরও পার্থক্য এই যে, স্বর্ণ, রৌপ্য ও পণ্য সামগ্রীর উপর বছরান্তে যাকাত ওয়াজিব হয়, কিন্তু উশর জমিতে উৎপাদনের সাথে সাথেই উশর ওয়াজিব হয়ে যায়। দ্বিতীয় পার্থক্য এই যে, জমিনে ফসল উৎপন্ন না হলে উশর দিতে হয় না। কিন্তু পণ্য দ্রব্য ও স্বর্ণ-রৌপ্যে মুনাফা না হলেও বছরান্তে যাকাত ফরয হবে।